মিয়ানমারের দক্ষিণে ব্যাপক সংঘর্ষ সরকারি কর্মীদের সরাচ্ছে জান্তা
মহাকাশ প্রযুক্তিশিল্প গড়তে রাশিয়ার দ্বারস্থ মিয়ানমার- নয়া দিগন্ত ডেস্ক
- ২২ মে ২০২৪, ০০:০৫
মিয়ানমারে আরাকান আর্মি ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘাত তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে দক্ষিণাঞ্চলের শহরগুলো থেকে সরকারি কর্মীদের সরিয়ে নিচ্ছে জান্তা সরকার। কাচিন রাজ্যে জান্তা সেনাদের ঘাঁটি টার্গেট করে হামলা চালাচ্ছে কাচিন ইনডিপেনডেন্স আর্মি। ব্যাপক সহিংসতার কারণে গত সপ্তাহ ধরে থান্ডওয়ে থেকে সরকারি কর্মকর্তা- কর্মচারীদের সরিয়ে নিচ্ছে মিয়ানমার জান্তা সরকার। ইরাবতী।
বাসিন্দারা জানান, বড় বড় ট্রাকে করে সরকারি সব অফিস থেকে আসাবপত্র সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। থান্ডওয়ের একজন বাসিন্দা বলেছেন, ‘জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের যন্ত্রপাতি এবং সরকারি কর্মীদের ওই এলাকার একটি ধর্মীয় হলে রাখা হয়েছিল। তাদের সরানো হচ্ছে। আমি তাদের ইয়াঙ্গুনে গাড়ি চালাতে দেখেছি। আমি এখন পর্যন্ত ৪৮টি ভারী যন্ত্রপাতির ইউনিট এখানে এসেছে।’ এর আগে গত ১৩ এপ্রিল টাউনশিপে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে থান্ডওয়েতে সরকার এবং আরাকান আর্মির মধ্যে কমপক্ষে ১০ বার সংঘর্ষ হয়েছে।
গত বছরের নভেম্বরে রাখাইন রাজ্যে শুরু হওয়া সংঘর্ষে দেশটিতে বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। বিদ্রোহীদের হামলার মুখে একের পর এক ঘাঁটি হাতছাড়া হচ্ছে সেনাদের। রাখাইন, কাচিন রাজ্য, বাগো অঞ্চলে বিদ্রোহীদের সাথে জান্তা বাহিনীর ব্যাপক সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়াও, ভারত সীমান্তবর্তী আরো দুটি শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বিদ্রোহীরা। সোমবার ইরাবতি জানায়, চীন রাজ্যের উত্তরাঞ্চলের সিখা ও টনজ্যং শহরের নিয়ন্ত্রণ নেয় বিদ্রোহী গোষ্ঠী চীন ন্যাশনাল আর্মি। অঞ্চলটিতে গেল কয়েক দিন ধরে জান্তা সেনাদের সাথে বিদ্রোহীদের ব্যাপক সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে।
মহাকাশ প্রযুক্তিশিল্প গড়তে রাশিয়ার দ্বারস্থ মিয়ানমার
মিয়ানমারে মহাকাশ প্রযুক্তিশিল্প গড়ে তুলতে চান দেশটির জান্তা সরকারের প্রধান মিন অং হ্লাইং। আর তা বাস্তবায়ন করতে দ্বারস্থ হয়েছেন রাশিয়ার। গত রোববার মিন অং হ্লাইং রাশিয়ার মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান রসকসমসের উপ-মহাপরিচালক সের্গেই ভ্যালেন্তিনোভিচের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। এ সময় তারা রাশিয়া ও মিয়ানমারের মধ্যে মহাকাশ প্রযুক্তি খাতে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে কথা বলেন।
মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে মিন অং হ্লাইং ও সের্গেই ভ্যালেন্তিনোভিচ ছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন মিয়ানমারের স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিলের যুগ্ম-সচিব ইয়ে উইন ও এবং মন্ত্রী নৌবাহিনীর প্রধান মো: অং। সামরিক সহযোগিতা জোরদারে অবদান রাখায় এই দুইজন চলতি বছরের মার্চে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পদক লাভ করেন। জান্তা নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, উভয় পক্ষ মহাকাশ প্রযুক্তিতে সহযোগিতা বৃদ্ধি, মহাকাশ প্রযুক্তি বিষয়ে উচ্চতর শিক্ষার জন্য মিয়ানমারের শিক্ষার্থীদের রাশিয়ায় পাঠানো এবং মানবসম্পদ উন্নয়নে রাশিয়ার সহায়তা নিয়ে আলোচনা করেছে।
উল্লেখ্য, রাশিয়া ২০২১ সালে মিয়ানমারে অভ্যুত্থানের অনেক আগে থেকেই দেশটির সামরিক কর্মকর্তাদের উন্নত প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে। অভ্যুত্থানের পর থেকে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক দ্রুত অস্ত্রবাণিজ্যের বাইরেও বহুমাত্রিক অংশীদারত্বের দিকে প্রসারিত হয়। এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বরে রাশিয়ার সঙ্গে আরো একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে বাংলাদেশের নিকট প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার। দেশটির বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে রাশিয়ার সহায়তায় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করতে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা