প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায়ও নিয়ন্ত্রণে আসছে না নিত্যপণ্যের দাম
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ২১ মে ২০২৪, ০১:০০
বাজারে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের কোনো উদ্যোগই কাজে আসছে না। বাণিজ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীও বারবার কঠোর হুঁশিয়ারি দিলেও বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়ে উঠছে না। প্রতিদিনই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে ক্ষোভ বাড়ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।
ভোক্তাদের স্বস্তি দিতে গত ১৫ মার্চ ‘কৃষি বিপণন আইন ২০১৮’-এর ৪(ঝ) ধারার ক্ষমতাবলে ২৯টি দেশী কৃষিপণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে দেয় কৃষি বিপণন অধিদফতর। এক বিজ্ঞপ্তিতে পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত নির্ধারিত দামে এসব কৃষিপণ্য কেনাবেচার অনুরোধ জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে কৃষি বিপণন অধিদফতর খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি মুগডালের দর বেঁধে দেয় ১৬৫.৪১ টাকা, অথচ বাজারে মুগডাল বিক্রি হচ্ছে ১৮৫ টাকা। মাষকলাইয়ের দর বেঁধে দিয়েছে ১৬৬.৫০ টাকা, বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২১০ টাকা। ছোলার বেঁধে দেয়া দর ৯৮.৩০ টাকা; বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১০৫ টাকা, ভালোমানের মসুরডালের বেঁধে দেয়া দর ১৩০.৫০ টাকা; বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা, মোটা মসুর ডালের বেঁধে দেয়া দর ১০৫.৫০ টাকা; বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা। খেসারিডালের বেঁধে দেয়া দর ৯২.৬১ টাকা; বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা। মাছ- গোশতের মধ্যে পাঙ্গাশ মাছের বেঁধে দেয়া দর ১৮০.৮৭ টাকা; বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা। কাতল মাছের বেঁধে দেয়া দর ৩৫৩.৫৯ টাকা; বাজারে আকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, গরুর গোশতের বেঁধে দেয়া দর ৬৬৪.৩৯ টাকা; বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা। ছাগলের গোশতের বেঁধে দেয়া দর ১০০৩.৫৬ টাকা; বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১০৫০ থেকে ১১০০ টাকা, ব্রয়লার মুরগির বেঁধে দেয়া দর ১৭৫.৩০ টাকা; বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২১০ টাকা, সোনালি মুরগির বেঁধে দেয়া দর ২৬২ টাকা; বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩১০ টাকা এবং ডিমের (প্রতি পিস) বেঁধে দেয়া দর ১০.৪৯ টাকা, বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১৪ টাকায়।
এ ছাড়া মসলা, সবজি ও অন্যান্য কৃষিপণ্যের মধ্যে প্রতি কেজি দেশী পেঁয়াজের বেঁধে দেয়া দর ৬৫.৪০ টাকা; বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা, দেশী রসুনের বেঁধে দেয়া দর ১২০.৮১ টাকা; বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকা। আমদানীকৃত আদার বেঁধে দেয়া দর ১৮০.২০ টাকা; বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ টাকা, শুকনো মরিচের বেঁধে দেয়া দর ৩২৭.৩৪ টাকা; বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, কাঁচামরিচের বেঁধে দেয়া দর ৬০.২০ টাকা; বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা। কৃষি বিপণন অধিদফতরের বেঁধে দেয়া দরে বাঁধাকপি, ফুলকপি ও মিষ্টিকুমড়া কেজি দরে যথাক্রমে ২৮.৩০ টাকা, ২৯.৬০ টাকা ও ২৩.৩৮ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও বাজারে কেজি দরে এসব বিক্রি করতে দেখা যায়নি। পিস হিসেবে বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, ফুলকপি ৫০ থেকে ৬০ টাকা ও মিষ্টিকুমড়া কেটে ছোট ছোট পিস হিসেবে বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা। আর বেগুন প্রতি কেজি বেঁধে দেয়া দর ৪৯.৭৫ টাকা; বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা। শিমের বেঁধে দেয়া দর ৪৮ টাকা; বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা। আলুর বেঁধে দেয়া দর ২৮.৫৫ টাকা; বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা, টমেটোর বেঁধে দেয়া দর ৪০.২০ টাকা; বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা।
বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই সরকার সব ধরনের নিত্যপণ্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনতে চেষ্টা করে যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সরকার কঠিন হতেও দ্বিধা করবে না এমন হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন। তবে তার এই হুঁশিয়ারি বাজারে কোনো প্রভাব ফেলছে না।
সঙ্কট না থাকা সত্ত্বেও বাজারে কৃত্রিম মূল্যবৃদ্ধির প্রবণতা দেখে কঠোরভাবে বাজার মনিটরিংয়ের জন্য সুনির্দিষ্টভাবে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীকে আবারো নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভায় এ নির্দেশনা দেয়া হয়। সভা শেষে বিকেলে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো: মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, আজকে নির্ধারিত ইস্যুর বাইরে দু’টি বিষয় ছিল। তার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী আজকে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীকে কঠোরভাবে বলেছেন, বাজার মনিটরিং যেন জোরালোভাবে হয় এবং ভালোভাবে নজর দিতে বলেছেন। বাজারে পণ্যের সরবরাহ যেন ঠিক থাকে। কিছু কিছু পণ্যে সরবরাহ ঠিক আছে, ক্রাইসিস না থাকার পরও বাজারে কৃত্রিম মূল্যবৃদ্ধির প্রবণতা দেখেছেন। কঠোরভাবে বাজার মনিটরিং শুরু করা হয়। সেজন্য প্রধানমন্ত্রী সুনির্দিষ্টভাবে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীকে নির্দেশনা দিয়েছেন।
ডলারের দাম সাত টাকা বাড়ানোর প্রভাব বাজারে এরই মধ্যে পড়েছে। সেক্ষেত্রে ডলারের দাম বাড়িয়ে বাজার মনিটরিং জোরদার করার বিষয়টি কতটা যুক্তিসঙ্গত এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই প্রশ্নটা বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীকে করুন। আমি আপনাদের কমিউনিকেট করছি প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশটা। প্রধানমন্ত্রী যে নির্দেশ দিয়েছেন সে বিষয়ে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীকে একটু কাজ করতে দেন। তারপর ওনাকে এই প্রশ্নটা জিজ্ঞেস করেন। তাহলে হয়তো কিছু জানতে পারবেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা