বিমানের টিকিট মিলছে না ঢাকা-কানাডা ফ্লাইটের
- মনির হোসেন
- ১৯ মে ২০২৪, ০০:০০
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বাণিজ্যিক ফ্লাইটগুলোর মধ্য ঢাকা-কানাডা রুটের প্রতিটি ফ্লাইট পূর্ণ করে গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা হচ্ছে। যদিও ফ্লাইট চলাচল শুরুর সময় এই রুটে লোকসান হওয়ার সংশয়ের কথা সংশ্লিষ্টদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল। এখন পরিস্থিতি এমন হয়েছে, ঢাকা থেকে কানাডা এবং কানাডা থেকে ঢাকাগামী ফ্লাইটের যাত্রীদের আগামী তিন মাসের মধ্যে কোনো টিকিট মিলছে না।
কানাডায় অবস্থানরত বাংলাদেশী ও ফ্লাইট-সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, ভিজিট ও স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য ভিসা নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ ও স্টুডেন্ট ছাড়াও বৈধ ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে দেশটিতে পাড়ি জমানোর কারণে ঢাকা-কানাডা রুটে চাপ তৈরি হয়েছে। তবে এই রুট পরিচালনায় যে পরিমাণ টাকা এখন খরচ হচ্ছে তাতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের লাভ বা লোকসান কোনোটিই হচ্ছে না বলে এভিয়েশন-সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন।
গত বৃস্পতিবার দুপুরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মতিঝিলের বলাকা ভবনে খোঁজ নিতে গেলে দেখা যায়, একজন কানাডাগামী টিকেট-প্রত্যাশী কাউন্টারে থাকা বিমানকর্মীর কাছে টরন্টো রুটের বিভিন্ন তারিখ উল্লেখ করে টিকিটের মূল্য দেখার অনুরোধ জানান। ওই নারীকর্মী তার কম্পিউটার দেখে তারিখ ও সময় উল্লেখ করে টিকিটের মূল্য তাকে জানান। কিন্তু টিকেট-প্রত্যাশী যে সময় উল্লেখ করছেন, ওই সময়ে যাওয়ার টিকিট নেই বলে কাউন্টার থেকে জানানো হয়। তবে চলতি বছর জুলাইয়ে যাওয়া এবং আগামী বছরের একই সময়ে ফেরার তথ্য দিয়ে টিকিট দেখার অনুরোধ জানালে তখন ওই নারী কর্মী জানান, এই সময়ে টিকিট আছে, তবে দাম পড়বে আড়াই লাখ টাকার উপরে। এরপর বয়োবৃদ্ধ ওই টিকিট-প্রত্যাশীকে বিমানের একটি ব্রোসিয়ার দিয়ে নারী কর্মী জানান, এখানে তাদের ওয়েব সাইটের এই রুটের সবকিছু দেয়া আছে। ট্র্যাভেল করার সময় তারিখ উল্লেখ করে সার্চ দিলেই সাথে সাথে টিকিট আছে কি না এবং দাম কত পড়বে সেটি জানা যাবে। এ সময় পাশের কাউন্টারে থাকা অপর এক কর্মীর কাছে টিকিট-প্রত্যাশী একজন কানাডার টিকিটের দাম জানতে গেলে তাকে জানানো হয়, আগামী তিন-চার মাসের আগে কোনো টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না।
এরপরও ফাঁকে ফাঁকে টিকিট পাওয়া গেলেও সেই টিকিটের দাম অনেক বেশি হবে।। মে, জুন ও জুলাই মাসের কোনো টিকিট নেই জানিয়ে বিমানকর্মী আগত ব্যক্তিকে জানান, ৬ আগস্ট যাওয়া ও ১৭ আগস্ট কানাডা থেকে ঢাকায় সরাসরি ফেরার (ইকোনমি) টিকিটের দাম হবে এক লাখ ৭০ হাজার টাকা। আর চলতি বছর জুলাইয়ের পর গেলে ওই টিকিটের মূল্য হবে দুই লাখ ৮২ হাজার ৯০০ টাকা। এটাই ফাইনাল প্রাইজ নয়। প্রতি ঘণ্টায় আবার এই টিকিটের মূল্য বাড়তে থাকবে বলেও কাউন্টার থেকে জানানো হয়। মোট কথা এই রুটে অতিরিক্ত চাহিদার কারণে টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না বলে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কাউন্টার থেকে জানানো হয়।
গতকাল শনিবার সন্ধ্যার পর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জেনারেল ম্যানেজারের (জনসংযোগ) সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি পরে যোগাযোগ করার অনুরোধ জানান।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বলাকা ভবন সংশ্লিষ্টদের সাথে গতকাল যোগাযোগ করা হলে তারা নয়া দিগন্তকে নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, সম্ভবত ২০২২ সালের ২৬ মার্চ ঢাকা-কানাডা রুটে প্রথম বাণিজ্যিকভাবে ফ্লাইট চলাচল শুরু হয়েছিল। এরপর থেকেই এই রুটে (ঢাকা থেকে) প্রতিটি ফ্লাইটই সিট ফুল করে চলাচল করছে। প্রতি সপ্তাহে দুটি করে ফ্লাইট পরিচালিত হচ্ছে জানিয়ে তারা বলেন, ঢাকা কানাডা রুট এখন ‘কাপল অব মান্থ’ হয়ে গেছে। মানে আগামী কয়েক মাসেও এই রুটের কোনো সিট ফাঁকা নেই। তারা বলছেন, ঢাকা-কানাডা রুটে ফ্লাইট চলাচল যখন শুরু হয়েছিল তখন অনেকেই সংশয় প্রকাশ করেছিলেন, এটা লোকসানী রুট হবে। এখন সেটির অবসান হয়ে পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে, বিমানের সিটই পাওয়া যায় না। ২৯৮ আসনের (বোয়িং-৭৮৭ ড্রীমলাইনার) উড়োজাহাজ দিয়ে সরাসরি ফ্লাইটের প্রতিটি আসন পরিপূর্ণ করে গন্তব্যর উদ্দেশ্য রওয়ানা হচ্ছে। তাহলে বিমান কী এই রুটে এখন লাভ করছে এমন প্রশ্নে তারা বলছেন, লাভ করা এতো সহজ নয়। আমাদের এভিয়েশনের ভাষায় একটা প্রবাদ আছে, ‘আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে কেউ কখনো লাভ করতে পারে না’। এরআগে আমাদের বিমানের নিউইয়র্ক ফ্লাইট চলাচল বন্ধ হয়েছিলো শুধুমাত্র লোকসানের কারণে। তখন একটি ফ্লাইট চালালে ৩৫-৩৭ লাখ টাকা লোকসান দিতে হতো। তবে ঢাকা-কানাডা রুটের প্রতি ফ্লাইটে যে টাকা খরচ হচ্ছে সেই পরিমান টাকা যাত্রী ও কার্গো থেকে পাওয়া যাচ্ছে। লাভ লোকসান বরাবর থাকে বলে তারা মনে করছেন। যদিও লাভ লোকসানের বিষয়ে বিমান ম্যানেজমেন্ট ভালো বলতে পারবে।
অপর এক প্রশ্নে তারা বলেন, কানাডা ফ্লাইট পরিচালনায় প্রতি ঘন্টায় বিমান কর্তৃপক্ষের ১৩ হাজার ডলার খরচ হয়। আসা যাওয়া মিলিয়ে ৩৪-৩৫ ঘন্টা উড়ছে। প্রতি ফ্লাইটে ৮-১০ টন কার্গোও থাকে জানিয়ে তারা বলেন, ওই হিসাবে যাত্রী ফুল হলেও লাভ-লোকসান সমান থাকে। এরমধ্যে ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় লাভ তেমন হয় না।
ফ্লাইটের সিট আগামী ৩ মাসেও খাল নেই কেন- এমন প্রশ্নে বিমানবন্দর সংশ্লিষ্টরা বলেন, এই রুটে শুধু স্টুডেন্টরাই যাচ্ছে তা কিন্তু নয়। রাজনীতিবিদ ছাড়াও বিভিন্ন পেশার যাত্রী ট্রাভেল করছেন। অনেকে আবার বৈধভাবে জনশক্তি কর্মসংস্থাণ ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো থেকে ছাড়পত্র নিয়েও যাচ্ছেন। আবার অনেকে ভিজিট ভিসায় পাড়ি জমাচ্ছেন।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বলাকা ভবন সংশ্লিষ্টদের সাথে গতকাল যোগাযোগ করা হলে তারা নয়া দিগন্তকে নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, সম্ভবত ২০২২ সালের ২৬ মার্চ ঢাকা-কানাডা রুটে প্রথম বাণিজ্যিকভাবে ফ্লাইট চলাচল শুরু হয়েছিল। এরপর থেকেই এই রুটে (ঢাকা থেকে) প্রতিটি ফ্লাইটই সিট ফুল করে চলাচল করছে। প্রতি সপ্তাহে দু’টি করে ফ্লাইট পরিচালিত হচ্ছে জানিয়ে তারা বলেন, ঢাকা কানাডা রুট এখন ‘কাপল অব মান্থ’ হয়ে গেছে। মানে আগামী কয়েক মাসেও এই রুটের কোনো সিট ফাঁকা নেই। তারা বলছেন, ঢাকা-কানাডা রুটে ফ্লাইট চলাচল যখন শুরু হয়েছিল তখন অনেকেই সংশয় প্রকাশ করেছিলেন, এটা লোকসানি রুট হবে। এখন সেটির অবসান হয়ে পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে, বিমানের সিটই পাওয়া যায় না। ২৯৮ আসনের (বোয়িং-৭৮৭ ড্রীমলাইনার) উড়োজাহাজ দিয়ে সরাসরি ফ্লাইটের প্রতিটি আসন পরিপূর্ণ করে গন্তব্যর উদ্দেশ্য রওনা হচ্ছে। তাহলে বিমান কী এই রুটে এখন লাভ করছে এমন প্রশ্নে তারা বলছেন, লাভ করা এত সহজ নয়। আমাদের এভিয়েশনের ভাষায় একটা প্রবাদ আছে, ‘আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে কেউ কখনো লাভ করতে পারে না’। এর আগে আমাদের বিমানের নিউ ইয়র্ক ফ্লাইট চলাচল বন্ধ হয়েছিলো শুধু লোকসানের কারণে। তখন একটি ফ্লাইট চালালে ৩৫-৩৭ লাখ টাকা লোকসান দিতে হতো। তবে ঢাকা-কানাডা রুটের প্রতি ফ্লাইটে যে টাকা খরচ হচ্ছে সেই পরিমাণ টাকা যাত্রী ও কার্গো থেকে পাওয়া যাচ্ছে। লাভ-লোকসান বরাবর থাকে বলে তারা মনে করছেন। যদিও লাভ লোকসানের বিষয়ে বিমান ম্যানেজমেন্ট ভালো বলতে পারবে।
অপর এক প্রশ্নে তারা বলেন, কানাডা ফ্লাইট পরিচালনায় প্রতি ঘণ্টায় বিমান কর্তৃপক্ষের ১৩ হাজার ডলার খরচ হয়। আসা যাওয়া মিলিয়ে ৩৪-৩৫ ঘণ্টা উড়ছে। প্রতি ফ্লাইটে ৮-১০ টন কার্গোও থাকে জানিয়ে তারা বলেন, ওই হিসাবে যাত্রী ফুল হলেও লাভ-লোকসান সমান থাকে। এর মধ্যে ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় লাভ তেমন হয় না।
ফ্লাইটের সিট আগামী তিন মাসেও খাল নেই কেন- এমন প্রশ্নে বিমানবন্দর সংশ্লিষ্টরা বলেন, এই রুটে শুধু স্টুডেন্টরাই যাচ্ছে তা কিন্তু নয়। রাজনীতিবিদ ছাড়াও বিভিন্ন পেশার যাত্রী ট্রাভেল করছেন। অনেকে আবার বৈধভাবে জনশক্তি কর্মসংস্থাণ ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো থেকে ছাড়পত্র নিয়েও যাচ্ছেন। আবার অনেকে ভিজিট ভিসায় পাড়ি জমাচ্ছেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা