এবার কোরবানির জন্য এক কোটি ২৯ লাখ পশু প্রস্তুত
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রীর তথ্য- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ১৭ মে ২০২৪, ০০:০০
আগামী কোরবানির ঈদে জবাইয়ের জন্য এক কোটি ২৯ লাখ ৮০ হাজার ৩৬৭টি পশু প্রস্তুত আছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মো: আব্দুর রহমান। তিনি জানান, কোরবানির জন্য ৫৩ লাখ ৬০ হাজার ৭১৬টি গরু ও মহিষ, ৭৬ লাখ ১৭ হাজার ৮০১টি ছাগল-ভেড়া, এক হাজার ৮৫০টি অন্যান্য প্রজাতির প্রাণী প্রস্তুত আছে। কোরবানির বাজারকে সন্তেুাষজনক পর্যায়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে বলে প্রত্যাশা করেন মন্ত্রী। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর ফার্মগেটে প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের সম্মেলন কক্ষে ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর চাহিদা নিরূপণ, সরবরাহ এবং কোরবানি পশুর পরিবহন নিশ্চিতকল্পে আন্তঃমন্ত্রণালয়ে সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, বাজারের নিরাপত্তা নিশ্চিতে নির্ভেজাল ও নিষ্কন্টকভাবে কাজ করা হবে। কোরবানির পশু নিয়ে আমরা যে প্রাকসভা করেছি তা সফল হয়েছে। কোরবানির দিনটি শেষ না হওয়া পর্যন্ত সব পর্যায়ে নিবিড় পর্যবেক্ষণ থাকবে। কোরবানি সুষ্ঠু ও সুন্দর হোক এ প্রত্যাশা সবার পূরণ করতে হবে। পশুর সংখ্যা কিভাবে নিরুপণ করা হয়েছে এ সম্পর্কে তিনি বলেন, আমাদের অধিদফতরের লোকজন ঘরে ঘরে গিয়ে জরিপ ও তথ্য সংগ্রহ করেছে। সে আলোকেই আমরা এ সংখ্যা নির্ধারণ করেছি।
পশুর দাম নির্ধারণে কী ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে-এমন প্রশ্নের জবাবে আব্দুর রহমান বলেন, চাহিদা ও সরবরাহে পার্থক্য থাকলে দামটা সামনে আসে। এবার যেহেতু যাচাই-বাছাই করে সংগ্রহের যে পরিসংখ্যান তৈরি করা হয়েছে তাতে চাহিদা ও জোগানে পার্থক্য বেশি থাকবে না। সেজন্য মনে হয় দাম ঠিকই থাকবে।
তিনি বলেন, বিগত বছরের ধারাবাহিকতায় এবারো কোনো খামারি নিজ বাড়ি থেকে পশু বিক্রি করলে তাকে হাসিল দিতে হবে না। কোনো খামারি তার পশু দূরবর্তী হাটে নিতে চাইলে, রাস্তাঘাটে জোর করে নামাতে বাধ্য করা যাবে না। এ ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, স্থানীয় সরকারের ইউনিট তথা পৌরসভা, উপজেলা বা ইউনিয়ন পরিষদ, সিটি কর্পোরেশন এ বিষয়টি নিশ্চিত করবে। হাটে আনার পথে কেউ প্রাণী বিক্রি করলে তার কাছ থেকে ইজারা গ্রাহক জোর করে চাঁদা বা হাসিল গ্রহণ করতে পারবে না। এটি আমরা নিশ্চিত করতে চাই। নগদ টাকা বহন না করে যথাসম্ভব বিকল্প উপায়ে স্মার্ট পদ্ধতিতে আর্থিক লেনদেন করার জন্য তিনি খামারিদের পরামর্শ প্রদান করেন।
মন্ত্রী বলেন, গত বছরের মতো এ বছরও অনলাইন প্লাটফর্মে সারা দেশে কোরবানির পশু বিক্রয়ের ব্যবস্থা চালু থাকবে। যা ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের জন্য সুখকর অবস্থা তৈরি করবে। তিনি আরো বলেন, লাভের আশায় কোরবানির অনুপযুক্ত পশু বা রোগাক্রান্ত পশু যাতে কেউ বিক্রির চেষ্টা না করে। প্রতিটি নির্ধারিত কোরবানির পশুর হাটে ভেটেরিনারি মেডিক্যাল টিম থাকবে। কোরবানির পশু নিরাপদ ও কোরবানি উপযোগী কিনা বা তাদের শরীরে দূষিত পদার্থ প্রবেশ করানো হয়েছে কিনা তারা সে বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে বলে মন্ত্রী এ সময় জানান।
তিনি আরো বলেন, মহাসড়কে বা যেখানে হাট বসালে যান চলাচল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এমন কিছু যাতে না হয়-এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানানো হবে। সড়কে বা সেতুতে কোরবানির পশুবাহী গাড়িকে প্রাধান্য দেয়া হবে, যাতে রাস্তায় পশু আটকে কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি না হয়। এ ক্ষেত্রে প্রাণিসম্পদ অধিদফতরে একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ (হট লাইন-১৬৩৫৮) চালু থাকবে। পশুর হাটে কোনো রকম সমস্য হলে হট নম্বরে কল করলে প্রতিকারের ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে মন্ত্রী জানান।
সভা শেষে বাংলাদেশ ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ ইমরান হোসেন বলেন, প্রতি ঈদে দেশের বাইরে থেকে অবৈধ পথে গরু আসে। এবারো মিয়ানমার এবং ভারত থেকে অবৈধভাবে সীমান্ত দিয়ে গরু আসছে বলে বিভিন্ন জায়গা থেকে খবর আসছে। অবৈধ পথে গরু আসা বন্ধ করতে হবে। হাত বদলের সাথে সাথে প্রতিটি হাটে খাজনা দিতে হয়। যে কোনো একটি হাটে খাজনা দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। পথে পথে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে। হাটে পশুর চিকিৎসা ব্যবস্থা আরো উন্নত করতে হবে।
সভায় মন্ত্রণালয়টির সচিব মোহাং সেলিম উদ্দিন, অতিরিক্ত সচিব এ টি এম মোস্তফা কামাল এবং প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা: মোহাম্মদ রেয়াজুল হক ছাড়াও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, রেলপথ ও নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা