এ জে মোহাম্মদ আলীর সম্মানে বন্ধ ছিল সুপ্রিম কোর্টের বিচারকার্যক্রম
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০৬ মে ২০২৪, ০০:০৫
সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি সিনিয়র আইনজীবী মরহুম এ জে মোহাম্মদ আলীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারকার্যক্রম গতকাল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। গতকাল সকালে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন চার বিচারপতির আপিল বিভাগে এ জে মোহাম্মদ আলীর মৃত্যুর বিষয়টি উত্থাপন করে আদালত বন্ধ রাখার রীতির বিষয়টি তুলে ধরেন।
এরপর আদালতের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর প্রধান বিচারপতি গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার পর আপিল বিভাগ এবং বেলা ১১টার পর হাইকোর্ট বসবে না বলে সিদ্ধান্ত দেন।
গত শনিবার বাদ আসর সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে মরহুমের জানাজায় অংশ নেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। জানাজা শেষে গতকাল রোববারের আদালতের কার্যক্রম বন্ধ রাখতে প্রধান বিচারপতির কাছে সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি অনুরোধ জানালে প্রধান বিচারপতি বলেছিলেন, রোববার কোর্ট বসে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
জানাজায় অংশ নিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, এ জে মোহাম্মদ আলী এমনই এক পরিবারের সন্তান, যার বাবা বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন এবং সুপ্রিম কোর্ট বারের প্রেসিডেন্টও ছিলেন এবং তিনিও অ্যাটর্নি জেনারেল ছিলেন, সুপ্রিম কোর্ট বারের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। এইটা আর পাবেন কিনা বলা মুশকিল।
এর আগে গত ২৮ এপ্রিল সকালে চিকিৎসার জন্য বাংলাদেশ ছাড়েন এ জে মোহাম্মদ আলী। গত ২ এপ্রিল বাংলাদেশ সময় বেলা ২টা ২০ মিনিটে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন এ জে মোহাম্মদ আলী।
প্রথম নামাজে জানাজা রাজধানীর ধানমন্ডির তাকওয়া মসজিদে গত শনিবার বাদ জোহর অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় জানাজা সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে বাদ আসর সম্পন্ন হওয়ার পরে সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে তাকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়।
শনিবার বাদ আসর সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে সিনিয়র আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলীর দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় অংশ নেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, জাতীয় সংসদের সাবেক স্পিকার ব্যারিস্টার জমিরউদ্দীন সরকার, সাবেক প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের সাবেক ও বর্তমান বিচারপতিবৃন্দ, অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, প্রবীণ আইনজীবী আবদুর রেজাক খান, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি জয়নুল আবেদীন, বিএনপির ভাইচ চেয়ারম্যান ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সহ-সভাপতি মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, সাবেক রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, সাবেক মৎস্য ও পশুসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, সম্পাদক শাহ মনজুরুল হক, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামালসহ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ব্যক্তিত্ব এবং মরহুমের আত্মীয় স্বজন জানাজায় অংশ নেন।
সিনিয়র অ্যাডভোকেট আবদুল জামিল মোহাম্মদ আলী (এ জে মোহাম্মদ আলী) ১৯৫১ সালের ১৫ ডিসেম্বর নওগাঁ জেলায় মাতুলালয়ে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্য গ্রহণ করেন। তার পিতার বাড়ি বগুড়া জেলায়। সিনিয়র অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী তিনি ১৯৭৮ সালে ঢাকা জেলা জজ আদালতে আইন পেশা শুরু করেন। তিনি ২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮০ তারিখে হাইকোর্টের সনদ লাভ করেন। তিনি ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, আপিল বিভাগে তালিকাভুক্ত হন ও ১২ ডিসেম্বর ১৯৯৯ তারিখে সিনিয়র অ্যাডভোকেট হিসেবে তালিকাভুক্ত হন এবং অত্যন্ত দক্ষতা ও সুনামের সাথে নিয়মিত আইন পেশা পরিচালনা করেছেন।
তিনি ২০০১ সালের ২৩ অক্টোবর বাংলাদেশের অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেলের দায়িত্ব পালন করেন এবং ২০০৫ সালের ৩০ এপ্রিল থেকে ২০০৭ সালের ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেলের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ছিলেন বাংলাদেশর ১২তম অ্যাটর্নি জেনারেল। তিনি ২০১৩-২০১৪ সালে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির বিজ্ঞ সদস্যদের জন্য তিনি সভাপতি থাকাকালীন তার বাবা মরহুম এম এইচ খন্দকার নামে ২৫ লাখ টাকার একটি ট্রাস্ট করে গিয়েছেন। তিনি স্ত্রী এক ছেলে, এক মেয়ে ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা