১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

রাজনৈতিক দলগুলো কথা না বললে গণতন্ত্র পিছিয়ে পড়বে : এলজিইডি মন্ত্রী

-

রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কথা বলা বন্ধ থাকলে গণতন্ত্র পিছিয়ে পড়বে মন্তব্য করে এলজিইডি মন্ত্রী মো: তাজুল ইসলাম এমপি বলেছেন, রাতারাতি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে শতভাগ সুসংহত করা সম্ভব নয়। নির্বাচন নিয়ে আমেরিকা, কানাডা, ভারতসহ অনেক দেশে বিতর্ক রয়েছে। নেদারল্যান্ডে ভোট কম পড়ায় আবার নির্বাচন করতে হয়েছে। যারা নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের কথা বলে তারা যদি নির্বাচনে না আসে তাহলে কিভাবে তা বাস্তবায়ন হবে।
গতকাল এফডিসিতে স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রতিযোগিতার আয়োজক সংগঠন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
মৃত ব্যক্তি বা শিশুদের ভোট দেয়ার বিষয়টি বিচ্ছিন্ন ঘটনা, এটা কাম্য নয় উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন বা নির্দলীয় প্রার্থিতা উভয় ক্ষেত্রেই ভালো মন্দ আছে। এ নির্বাচন দলীয় প্রতীকে হওয়া বা না হওয়া কোনোটাই আইনের সাথে সাংঘর্ষিক নয়। সময়ের প্রেক্ষাপটে অনেক কিছুই পরিবর্তিত হয়। নির্বাচন ব্যবস্থাও পরিবর্তিত হতে পারে। বাংলাদেশ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ গণতান্ত্রিক দেশ হয়েছে এটা মনে করি না। তবে গণতন্ত্র চর্চার পথে আছে। অন্য দলের মাঝে যদি ভালো কিছু থাকে তা গ্রহণ করার মানসিকতাই গণতন্ত্র চর্চা। সব দলের মধ্যে কথা বলা ও ডিবেট করার মাধ্যমেই গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারো বিএনপি ও তার শরিকরা উপজেলা নির্বাচন বর্জন করেছে। বিএনপি নির্বাচনে আসলে এ নির্বাচন আরো বেশি অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য হতো। আওয়ামী লীগের কেন্দ্র থেকে মন্ত্রী এমপিদের আত্মীয়স্বজন উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার হুঁশিয়ারি দিলেও তা অনেক জায়গায় মানা হচ্ছে না। বেশ কয়েক জায়গায় মন্ত্রী এমপিদের ছেলে, ভাই, ভাগ্নেরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। দলীয় প্রতীকে নির্বাচন বলি আর স্বতন্ত্র প্রতীকে নির্বাচন বলি সব ক্ষেত্রেই মানি, মাসেল, পাওয়ার নির্বাচনের প্রধান অনুষঙ্গ হিসেবে কাজ করে। এবারের উপজেলা নির্বাচনে লড়াইটা হবে আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগ। এ লড়াইয়ে আওয়ামী লীগের যে নেতার ক্ষমতা, অর্থবিত্ত বেশি তিনিই জয়ের মালা পরবেন বলে মনে করাহয়।
কিরণ আরো বলেন, এখন বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই প্রচুর অর্থ ব্যয় করে নির্বাচিত হতে হয় । ফলে নির্বাচনে ব্যয় করা অর্থ উঠানোর জন্য কেউ কেউ অসৎ উপায় অবলম্বন করে থাকে। এতে সাধারণ মানুষকে সেবা পেতে অর্থ ব্যয়সহ নানা রকম দেন দরবার করতে হয়, যা মোটেই কাম্য নয়। এবারের নির্বাচনে প্রার্থীদের জামানত ১০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ১ লাখ টাকা নির্ধারণ করায় অনেক ছোট ছোট দলের প্রার্থীরা মনোক্ষুণœ হয়েছে। নির্বাচন কমিশন জামানত বাড়ানোর বিষয়টি স্টেক হোল্ডারদের সাথে আলোচনা করে নিলে এ ধরনের প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হতো না। সুশাসন নিশ্চিত করতে স্থানীয় সরকারকে শুধু শক্তিশালী করলেই হবে না। স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও দুর্নীতিমুক্ত করা ছাড়া স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় সুশাসন নিশ্চিত করা সম্ভব হবে না।
‘ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র আয়োজনে ‘নির্দলীয় স্থানীয় সরকার নির্বাচন তৃণমূল পর্যায়ে গণতন্ত্রকে সুসংহত করবে’ শীর্ষক ছায়া সংসদে মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকদের পরাজিত করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, সাংবাদিক মাঈনুল আলম, সাংবাদিক মশিউর রহমান খান, সাংবাদিক মো: হুমায়ুন কবীর ও সাংবাদিক সাদিয়া আফরোজ। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।


আরো সংবাদ



premium cement