১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

মেননকে চিকিৎসার জন্য বিদেশ পাঠিয়েছিলেন খালেদা জিয়া : মির্জা আব্বাস

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখছেন মির্জা আব্বাস : নয়া দিগন্ত -

বন্দী অবস্থায় রাশেদ খান মেনন ও আ স ম আবদুুর রবের চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার কথা তুলে ধরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান আ স ম আবদুর রবকে বন্দী অবস্থায় বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠিয়েছিলেন। আর আজকের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া রাশেদ খান মেননকে চিকিৎসার জন্য পাঠিয়েছিলেন।
এ সময় তিনি আরো বলেন, আমরা কতবার বলেছি- দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে অথবা চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে পাঠান। ওনার অবস্থা বেশি ভালো না। সরকার বলছে, আইন নেই। আইন থাকবে না কেন, আইন কি মানুষের জন্য, না আইনের জন্য মানুষ? গতকাল (শনিবার) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশিদ হাবিব মুক্তি পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাবিবুর রশিদ হাবিবের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
সাবেক গভর্নর ফরাসউদ্দিন আহমেদের বক্তব্য তুল ধরে মির্জা আব্বাস বলেন, কী বিচিত্র বাংলাদেশ। ‘এক শ’ টাকার জন্য চোরের হাত বেঁধে রাখেন, এক হাজার কোটি টাকা যারা চুরি করেন, তাদেরকে স্যালুট দেন’। এই তো বাংলাদেশ।
প্রতিদিন ৫০ থেকে ১০০ জন অভিভাবক, স্ত্রী-সন্তান আমার কাছে আসে এমনটা জানিয়ে মির্জা আব্বাস বলেন, কেউ বলে আমার বাবা জেলে, কেউ বলে আমার স্বামী জেলে, কেউ বলে আমার ছেলে জেলে, কেউ বলে আমার ভাই জেলে। কতজনের জন্য কথা বলব, আর কতজনকে সান্ত¡না দেবো।
বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, আপনাদের (সরকার) মনে থাকে না। একটা মামলা দেবেন, জেলে পাঠাবেন। আর বলবেন, রাজনৈতিক মামলায় কেউ জেলে নেই। এরা হলো মামলার আসামি। আরে কোন মালমার আসামি? রাজনৈতিক মামলার আসামি। যারা আপনাদের বিরুদ্ধে কথা বলে।
নির্বাচনের কথা সরকারের মুখে মানায় না মন্তব্য করে তিনি বলেন, যে নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারবে না সে নির্বাচন বাংলাদেশের প্রয়োজন নেই। এখন একটি কাজ করতে পারেন রাজতন্ত্র কায়েম করতে পারেন।
আব্বাস বলেন, গ্রেফতার করে পৃথিবীর কোনো আন্দোলন কোনো স্বৈরশাসক থামাতে পেরেছে বলে আমার জানা নেই। একদিন না একদিন এই স্বৈরশাসকের পতন ঘটবেই জনরোষের মুখে। এটাকে কেউ ঠেকাতে পারবে না।
মানববন্ধনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী দুই দিন ধরেই বলছেন তাকে নাকি কিছু রাজনৈতিক দল উৎখাতের চেষ্টা করছে। আমার কথা হচ্ছে রাজনৈতিক দল উৎখাতের চেষ্টা করবে কেন? আপনার সরকার উৎখাত হোক, এটা তো জনগণ চাচ্ছে। আর ক্ষমতায় আসা, না আসা এটা কোনো রাজনৈতিক দলের ওপর নির্ভর করে না। এটা নির্ভর করে জনগণের ওপর। আপনি জনগণের মালিকানা কেড়ে নিয়েছেন, ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছেন, বাকস্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছেন। আপনার ক্ষমতা চলে যাক, এটা কিন্তু জনগণ চায়।’
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘কক্সবাজারের কুখ্যাত বদি প্রকাশ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান নুর আলমকে পিস্তল দেখিয়েছে, সে আবার উপজেলা নির্বাচন করবে। সরিষাবাড়ীতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বলেছেন তার বিরুদ্ধে কেউ দাঁড়াতে পারবে না। বরিশালের হাসনাত আব্দুল্লাহ হুমকি দিয়েছেন তার মনোনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে যে থাকবে তার নাকি হাত-পা ভেঙে দেয়া হবে। এই হচ্ছে শেখ হাসিনার গণতন্ত্রের নমুনা! এই গণতন্ত্র তিনি চালু করেছেন যখনই ক্ষমতা এসেছেন। এই গণতন্ত্র তিনি চালু করেছেন ৫ জানুয়ারি ২০১৪, ২০১৮ এবং ৭ জানুয়ারি ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, সবাইকে আহ্বান করছি, আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করব। কিন্তু আমাদের গায়ে যদি লাঠির আঘাত পড়তে থাকে, তাহলে কতদিন শান্তিপূর্ণ থাকব? প্রতিবাদ এবং প্রতিরোধ একসাথে চালাতে হবে। না হলে আরো অনেক হাবিবুর রশিদ হাবিবদের কারাগার যেতে হবে, প্রতিকার পাওয়া যাবে না।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্যসচিব রফিকুল আলম মজনু, যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, বিএনপি নেতা অধ্যাপক ওয়াহিদ বিন ইমতিয়াজ বকুল, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি ডা: জাহিদুল কবির, স্বেচ্ছাসেবক দল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি জহির উদ্দিন তুহিন, যুবদলের সাবেক সহসভাপতি শহীদ তালুকদার, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সোহেল রানা, যুবদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক মেহবুব মাসুম সান্ত, ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি এজমল হোসেন পাইলট, তারেক উজ জামান তারেক, জয়দেব জয়, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুর রহমান আউয়াল, জাকির হোসেন, মো: ইব্রাহীম, ঢাবি ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদুর রহমান মাসুদ, যুগ্ম সম্পাদক রাজু আহমেদ, তিতুমীর কলেজ ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন, ঢাকা উত্তর জেলা ছাত্রদলের সাবেক সদস্যসচিব সজীব রায়হান, ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক শাহ পরান, ছাত্রদল নেতা নুরুল ইসলাম মিশু, আতিকসহ নেতৃবৃন্দ।


আরো সংবাদ



premium cement