গাজীপুরে কিশোরী শ্রমিককে গণধর্ষণ : ম্যানেজারের হাতে অন্ত:সত্ত্বা আরেক কিশোরী
- গাজীপুর মহানগর প্রতিনিধি
- ০৪ মে ২০২৪, ০২:০৭
গাজীপুরে একটি কারখানার নারীশ্রমিক গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এর আগে একই কারখানার অপর এক নারীশ্রমিক কারখানাটির ম্যানেজার কর্তৃক ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে এ দু’টি ঘটনায় থানায় পৃথক দু’টি মামলা হয়েছে।
নগরীর ২২ নম্বর ওয়ার্ডের বাহাদুরপুরে রানী ফুড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ম্যানেজার কর্তৃক কারখানাটির এক কিশোরী শ্রমিককে (১৬) ধর্ষণের ঘটনায় গত ২৪ এপ্রিল ও একই কারখানার অপর কিশোরী শ্রমিককে (১৬) গণধর্ষণের ঘটনায় গত ১ মে গাজীপুর মহানগর সদর থানায় মামলা হয়। প্রথম ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত কারখানাটির ম্যানেজার মাহমুদুল হাসান ও দ্বিতীয় গণধর্ষণে জড়িত এলাকার বখাটে শাকিল আহমেদ (২৪) ও মিজানকে (৩২) বুধবার গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি কারখানা ছুটির পর ম্যানেজার মাহমুদুল হাসান তার অধীনস্থ এক সুন্দরী কিশোরী শ্রমিককে ফুসলিয়ে ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানের ৩ নম্বর গেট-সংলগ্ন হ্যাপী ডে-ইন রিসোর্টের একটি কক্ষে নিয়ে ধর্ষণ করেন। এরপর বিভিন্ন সময় তিনি ভাড়াবাসাসহ আরো কয়েকস্থানে নিয়ে ধর্ষণ কবলে ওই কিশোরী শ্রমিক অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। কিন্তু ম্যানেজারের হুমকিতে ভয়ে সে ঘটনাটি এতদিন কাউকে জানাননি। অবশেষে তার অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার বিয়টি প্রকাশ পেলে ঘটনাটি জানাজানি হয়। এ ঘটনার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জিএমপি সদর থানার এসআই রাশেদুল হাসান বলেন, একমাত্র আসামি রানী ফুড ইন্ডাস্ট্রিজের ম্যানেজার মাহমুদুল হাসানকে গত ২৪ এপ্রিল গ্রেফতার করা হয়েছে। মেয়েটি পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বলে মৌখিকভাবে জানিয়েছে। পরীক্ষার রিপোর্ট আসার পর বলা যাবে আসলে সে কয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
অপর দিকে ওই প্রতিষ্ঠানের পেছনে বাহাদুরপুর ভীমবাজারে আবদুল আলীর বাড়িতে ভাড়া থাকত কারখানাটির আরেক কিশোরী শ্রমিক। বাড়িওয়ালার ছেলে শাকিল আহম্মেদ মেয়েটিকে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করত এবং কুপ্রস্তাব দিত। এতে সম্ভ্রম রক্ষায় মেয়েটি প্রায় চার মাস আগে চাকরি ছেড়ে গ্রামের বাড়ি চলে যেতে বাধ্য হয়। কিন্তু দরিদ্র মা-বাবার সংসারে অভাব অনটনের কারণে গত ২৫ এপ্রিল সে রানী ফুড ইন্ডাস্ট্রিজে এসে ফের চাকরিতে যোগ দেয় এবং ফুফাতো বোনের সাথে ফ্যাক্টরির পাশে শফিকুলের বাড়িতে বাসা ভাড়া নেয়। গত ৩০ এপ্রিল রাত ৯টায় মেয়েটি বাসার পাশের দোকানে কেনাকাটা করতে যায়। এ সময় সেখানে থাকা তার আগের বাসার মালিকের ছেলে বখাটে শাকিল মেয়েটিকে মিথ্যা কথা বলে পাশেই তার (শাকিলের) ফুফুর বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে একটি কক্ষে আটকে তাকে ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে রাত সোয়া ১টায় মেয়েটি কৌশলে সেখান থেকে পালিয়ে আসে। এ সময় পথে শাকিলের সহযোগী বাবুল ও মিজান মেয়েটিকে পাশের একটি জঙ্গলে নিয়ে রাতভর পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এরপর ঘটনাটি কাউকে জানালে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে রাত ৪টার দিকে মেয়েটিকে জঙ্গলে ফেলে রেখে চলে যায়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জিএমপি সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) নন্দ লাল বলেন, ভিকটিম কিশোরীর মা বাদি হয়ে তিন ধর্ষকের নামে থানায় মামলা করেছেন। মামলার ১ ও ৩ নম্বর আসামি শাকিল ও মিজানকে বুধবার গ্রেফতার করা হয়েছে। অপর আসামি বাবুলকেও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। গ্রেফতার শাকিল ও মিজান ধর্ষণে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে বৃহস্পতিবার আদালতে জবানবন্দী দিয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা