২২ মে ২০২৪, ০৮ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৩ জিলকদ ১৪৪৫
`


ব্যারিস্টার খোকনকে আইনজীবী ফোরাম থেকে অব্যাহতির আদেশ প্রত্যাহার

-


দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকনকে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম, কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহসভাপতির পদ থেকে অব্যাহতির আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামালের কাছে ক্ষমা চেয়ে দুঃখ প্রকাশ করায় তাকে অব্যাহতি প্রদান করে দেয়া চিঠি প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে ফোরামের নেতারা জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে সভাপতি ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, আমি রিঅ্যাক্ট করেছি। যেটা আমার পর্যায়ের একজন সিনিয়র আইনজীবীর উচিত হয়নি। এ জন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করছি। তিনি বলেন, আমি যে পর্যায়ে, আমার পর্যায় থেকে আমি ওভার রিঅ্যাক্ট করেছি। যেটা আমার পর্যায় থেকে বলা ঠিক হয়নি।

২৯ এপ্রিল জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের পক্ষ থেকে ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকনের অব্যাহতির আদেশ প্রত্যাহার করে চিঠি দেয়া হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, আপনাকে সদয় অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, গত ২৫ এপ্রিল বিএনপির মহাসচিব এবং জাতীয় স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর উপস্থিতিতে সিনিয়র আইনজীবীদের সাথে আলোচনার ভিত্তিতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমানের সম্মতিতে আপনার অব্যাহতিপত্র প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। অত্র পত্রের মাধ্যমে নির্দেশক্রমে আপনাকে বিষয়টি অবহিত করা হলো। অন্য দিকে গত ২৯ এপ্রিল ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামালের কাছে দুঃখ প্রকাশ করে চিঠি দেন।
ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, গত ২২ এপ্রিল তারিখে সংবাদ সম্মেলনে আপনার বিরুদ্ধে কিছু অনাকাক্সিক্ষত বক্তব্য প্রদান করেছি, যা আপনার অনুভূতিতে আঘাত লেগেছে বলে আমি উপলব্ধি করেছি এবং সে কারণে আমি গভীরভাবে অনুতপ্ত। এজন্য আপনার একজন সিনিয়র সহকর্মী হিসেবে ব্যক্তিগতভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। আশা করি আপনি এই বিষয়টি নিয়ে আমার প্রতি আর কোনো বিরূপ ধারণা পোষণ করে থাকবেন না। এর আগে গত ২০ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকনকে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র সহসভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়।

এ বিষয়ে ফোরামের দফতর সম্পাদক মো: জিয়াউর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম বিগত ৬ ও ৭ মার্চ অনুষ্ঠিত সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচনে ‘সভাপতি’ পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য আপনাকে মনোনীত করে। বিগত দুই বছরের মতো এবারের নির্বাচনেও ক্ষমতাসীনরা নজিরবিহীনভাবে ভোট জালিয়াতি, কারচুপি ও মনগড়া ফলাফল ঘোষণা করে। এমনকি সম্পাদক পদে আওয়ামী লীগ দলীয় দু’জন প্রার্থী, প্রথমে নাহিদ সুলতানা মুখী ও পরে শাহ মঞ্জুরুল হককে তথাকথিত বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। ক্ষমতাসীন দলের বহিরাগত সন্ত্রাসীরা নির্বাচনের অব্যবহিত পরে ৮ মার্চ সমিতির অডিটোরিয়ামে হামলা চালিয়ে আইনজীবীদের মারধর ও ব্যালট বাক্স ছিনতাই করে নিয়ে যায়।
উক্ত ঘটনা আওয়ামী লীগের দু’জন সম্পাদক পদপ্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘটিত হলেও সরকারের একজন বেতনভুক্ত আইন কর্মকর্তা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেলের সম্পাদক প্রার্থী ও আরো তিনজন আইনজীবী ফোরাম নেতাকে আসামি করে গত ৯ মার্চ শাহবাগ থানায় একটি মিথ্যা ও হয়রানিমূলক ফৌজদারি মামলা দায়ের করে।

নির্বাচন কমিশনে দায়িত্ব পালনকারী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার ওসমান চৌধুরীও উক্ত নির্বাচনে সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী সংগঠনের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মো: রুহুল কুদ্দুসকে (কাজল) যথাক্রমে গত ৯ ও ১০ মার্চ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় গ্রেফতার করে তাদের ডিবি অফিসে রিমান্ডে নেয়া হয়। তারা উভয়েই দুই সপ্তাহ কারাভোগ করেন। তাদের কারাগারে রেখে গত ১০ মার্চ লুট হয়ে যাওয়া ব্যালট পেপার গণনার নাটক সাজিয়ে তথাকথিত ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
যে নির্বাচনে আমাদের পুরো প্যানেলেরই বিজয় সুনিশ্চিত ছিল, সেখানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভোট ডাকাতি জায়েজ করতে আপনাকে সভাপতি পদে ও অ্যাডভোকেট ফাতিমা আকতার, অ্যাডভোকেট মো: শফিকুল ইসলাম ও অ্যাডভোকেট সৈয়দ ফজলে এলাহী অভিকে নামকাওয়াস্তে সদস্য পদে বিজয়ী দেখানো হয়।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গত ৬ এপ্রিল বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটি, উপদেষ্টামণ্ডলী ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি/সম্পাদকদের এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিস্তারিত আলোচনা শেষে আপনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি হিসেবে আপনার এহেন কার্যক্রমকে দলীয় চরম শৃঙ্খলা পরিপন্থী হিসেবে গণ্য করে সর্বসম্মতভাবে আপনাকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম, কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহসভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement