১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
এজেন্সি মালিকদের সংবাদ সম্মেলন

হজ ব্যবস্থাপনায় প্রতিবন্ধকতা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা

-

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কিছু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং মক্কা হজ মিশনের কিছু কর্মকর্তার অবহেলা বা দায়িত্বহীনতার কারণে হজ ব্যবস্থাপনায় সঙ্কট দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বেসরকারি এজেন্সি মালিকরা।
গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ অভিযোগ করেন। একই সাথে প্রতিবন্ধকতা নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন হজ এজেন্সির মালিকেরা।
অপারেটিং হজ এজেন্সি মালিকদের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আল-কুতুব হজ ট্রাভেলসের স্বত্বাধিকারী হাবিবুল্লাহ মুহাম্মদ কুতুবুদ্দীন বলেন, এবার হজ ব্যবস্থাপনায় নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। এখনো বাংলাদেশের সব হজযাত্রীর মিনার জোন চূড়ান্ত এবং পূর্ণাঙ্গ ও ফাইনাল ফাইট শিডিউল ঘোষণা করা হয়নি। এ অবস্থায় টিকিট নিশ্চিত না করে কিভাবে এজেন্সি মক্কা-মদিনার বাড়ি ভাড়া করবে। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি হজ অফিস থেকে মুনাজ্জিম ভিসা দেয়ার কথা বলে সব কাগজপত্র জমা নিয়ে এখনো মুনাজ্জিম ভিসা দেয়া হয়নি। কিছুদিন আগে আবার জানালেন আমরা যেন বিজনেস ভিসায় মক্কায় যাই। বিজনেস ভিসার জন্য টাকা জমা দিয়ে বিধিমোতাবেক সবকিছু করে প্রত্যাখ্যাত হয়েছি। ধর্ম মন্ত্রণালয় বলেছিল- বিজনেস ভিসা নিতে কোনো অসুবিধা হলে তাদের জানাতে। জানিয়েও কোনো প্রতিকার হয়নি। বর্তমানে ওমরা ভিসাও বন্ধ আছে। বিনা নোটিশে ওমরা ভিসা বন্ধ রাখা হলেও মন্ত্রণালয় বা হজ মিশন এ বিষয়ে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছেন বলে আমাদের জানা নেই। ২২ এপ্রিল এক সার্কুলারে মুনাজ্জিমদের জন্য ‘হজ মিশন ভিসা’ দেয়ার কথা জানানো হয়। দীর্ঘদিন ধরে আমরা হজের কাজের সাথে জড়িত আছি। এমন ভিসার নাম আমরা এই প্রথমবার শুনলাম।

তিনি বলেন, হজ মিশন ভিসার প্রকৃতিতে বলা হয়েছে, এই ভিসা নিয়ে এজেন্সি সুবিধা মতো যেতে পারবে এবং হজযাত্রীদের দায়িত্ব পালন শেষে প্রত্যাবর্তন করবে। তবে হজ মিশন ভিসায় গেলে হজ করার নিশ্চয়তা প্রদান করে না বলেও জানিয়ে দেয়া হয়েছে। চিঠির এই ভাষায় আমাদের কাছে সুস্পষ্টভাবে প্রতিয়মান হচ্ছে, অন্যান্য বছরের মতো অপারেটিং হজ এজেন্সিকে মুনাজ্জিম ভিসা দেবে না, এই মিশন ভিসা দিয়েই আমাদের বাড়ি ভাড়াসহ আনুষঙ্গিক কাজ করে হজযাত্রীদের সার্ভিস দিয়ে হজ শেষে বাড়ি ফিরতে হবে। এই ভিসায় মুনাজ্জিমরা এহরামের কাপড় পরতে পারবেন না, হজ করতে পারবেন না, মুনাজ্জিম যদি এহরামের কাপড় পরতে না পারেন তবে হজযাত্রীদের পরিচালনা, তাদের নিয়ে দোয়া করা, তাদের সালাতে ইমামতি করা- এগুলো কিভাবে সম্ভব হবে? কারণ মিনা আরাফাতে যিনি হাজী নন তার ইমামতি, দোয়া ইত্যাদি কি হজযাত্রীদের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে? হজযাত্রীদের আবেগ অনুভূতিকে কি আরাফাতের ময়দানে পাগড়ি, টুপি পরে জাগ্রত করা যাবে? তিনি আরো বলেন, এ ছাড়াও এখনই যদি আমাদের বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যেতে হয়- হজযাত্রীদের ভিসা করা, তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া, তাদের বিভিন্ন জিজ্ঞাসার জবাব দেয়া, তাদের সাথে নিয়ে যাওয়া, বকেয়া টাকা কালেকশন করাসহ বাংলাদেশ পর্বের এই বিশাল কার্যক্রমকে সম্পন্ন করবে? এতে হজ ব্যবস্থাপনায় চরম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে। যদি একান্ত মিশন ভিসায় আমাদের বাড়ি ভাড়া করার কাজে যেতেই হয় তবে মুনাজ্জিমদের জন্য বারকোড ভিসার ব্যবস্থা করতে হবে। এখনো অনেক এজেন্সির সৌদি অ্যাকাউন্টে টাকা জমা করা হয়নি। কিভাবে তারা বাড়ি ভাড়া করবে? ২০ এপ্রিল হজযাত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে টিকা দেয়ার নোটিশ দেয়া হয়েছে। এখনো সরকার নির্ধারিত কোনো হাসপাতালে টিকা পৌঁছেনি এবং টিকা দেয়া শুরু হয়নি। আগামী ৯ মে হজ ফ্লাইট শুরু হবে। এতগুলো জরুরি, গুরুত্বপূর্ণ কাজ এখনো সম্পন্ন হয়নি। সৌদি ই-হজ সিস্টেমে ভিসার অপশন এখনো ওপেন হয়নি।
তিনি আরো বলেন, আমরা আশা করি প্রধানমন্ত্রী সদয় দৃষ্টি দিলে এসব জটিলতা দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। আর এসব জটিলতা নিরসন না করে হজ এজেন্সিকে হজ আইনে শাস্তির হুমকি দিলে সমস্যার সমাধান হবে না। যারা বিধিমোতাবেক কাজ করবে না তারা আইনের আওতায় আসবে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে, এটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এখানে যেসব সমস্যাগুলোর কথা তুলে ধরা হয়েছে এগুলোর সমাধান করার দায়িত্ব ধর্ম মন্ত্রণালয় ও মক্কার হজ মিশনের। যার যে কাজের দায়িত্ব তিনি সে কাজ যথাযথভাবে যথা সময়ে না করলে তার দায়ভার সংশ্লিষ্টদের ওপরই বর্তায়।

এ সময় এজেন্সি মালিকরা হজ ব্যবস্থাপনার সব প্রতিবন্ধকতা দ্রুত নিরসনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করে আট দফা দাবি জানান। দাবির মধ্যে অন্যতম হলো- অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে বাংলাদেশী সব হাজীর মিনার জোন নির্ধারণ করে ই-হজ সিস্টেমে আপডেট, ফাইনাল ফাইট শিডিউল ঘোষণা ও অপারেটিং সব এজেন্সির হজযাত্রী অনুপাতে টিকিট নিশ্চিত করা, অপারেটিং এজেন্সির মুনাজ্জিমদের জন্য মুনাজ্জিম ভিসার দ্রুত ব্যবস্থা করা, অথবা মিশন ভিসা শুধু বাড়ি ভাড়ার কাজে ব্যবহারের ঘোষণা দিয়ে পরে অন্যান্য বছরের মতো মুনাজ্জিমদের জন্য বারকোড ভিসার বিষয়টি নিশ্চিত করা খুবই প্রয়োজন। যাদের সৌদি অ্যাকাউন্টে এখনো রিয়াল জমা হয়নি তাদের অ্যাকাউন্টে দ্রুত সময়ের মধ্যে রিয়াল জমার ব্যবস্থা করা দরকার। অপারেটিং হজ এজেন্সির অ্যাকাউন্টে গত বছরের মতো যার যার অ্যাকাউন্টে সে রিয়াল পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে। বর্তমান ব্যবস্থায় সৌদি অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকতে প্রায় দেড় মাস লাগছে। ভিসা করার সময় যদি কারো অ্যাকাউন্টে এক পয়সাও কম থাকে তবে ওই হাজীর আর হজ করা সম্ভব হবে না। সৌদি সরকারের বিবিধ চার্জ একেবারে চূড়ান্ত হিসাব করে পাঠানো অনেকটা অসম্ভব ব্যাপার। মেনেনজাইটিস ও ইনফ্লুয়েঞ্জা টিকা প্রদানের দ্রুত ব্যবস্থা করা হোক। ভিসা ইস্যু কার্যক্রম অন্যান্য বছরের মতো সর্বশেষ হজ ফ্লাইটের এক সপ্তাহ আগ পর্যন্ত চালু রাখতে হবে। অতীত ইতিহাস সাক্ষী- অনেক হজযাত্রী সব প্রস্তুতি গ্রহণের পর মৃত্যুবরণ করেন, কেউবা মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হয়ে যান, বিভিন্ন এক্সিডেন্টের কারণে অনেকে শত ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও হজে যেতে পারেন না। তখন তাদের স্থলে যদি অন্য হাজীর ভিসা করা না যায় তবে যিনি হজে যেতে পারলেন না তার সম্পূর্ণ টাকাই গচ্ছা যায়। ভিসা ইস্যু এত আগে বন্ধ হয়ে গেলে অনেক অর্থ অহেতুক সৌদি আরবে চলে যাবে। এতে দেশের অনেকে ক্ষতি হবে। বিষয়টি সৌদি সরকারকে বুঝাতে পারলে সৌদি সরকার বাস্তব অবস্থা অবশ্যই বিবেচনা করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, হজ এজেন্সি মালিক এইচ এম বরকতউল্লাহ, মাওলানা সেলিম হোসাইন আজাদী, জামাল হোসেন, মহসিন উদ্দীন ও মাসুদুর রহমান প্রমুখ।


আরো সংবাদ



premium cement
ইঞ্জিনিয়ারিং খাতে দুর্নীতি কে প্রশয় দেয়া হবে না : জাতীয় নাগরিক কমিটি ফতুল্লা থেকে অপহৃত ২ শিশু বরিশাল থেকে উদ্ধার মহানবী সা:-কে নিয়ে কটূক্তি করা শিক্ষককে চাকরিচ্যুতের দাবি টাইম ম্যাগাজিনের বর্ষসেরা ব্যক্তি ট্রাম্প আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য দিবসে রিকের র‌্যালি ও মানববন্ধন অনলাইন এডিটরস অ্যালায়েন্সের সভাপতি হাসান শরীফ, সাধারণ সম্পাদক সোহেল চুয়েটে র‌্যাগিংয়ের দায়ে ১১ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার ঢাকায় উচ্চমাত্রার হর্ন ব্যবহার না করতে ডিএমপির নির্দেশনা তামিমের ঝড়ে জয় পেল চট্টগ্রাম তথ্য উপদেষ্টার বক্তব্য নিয়ে ধোঁয়াশা, কর্মকর্তা প্রত্যাহার বরগুনায় জেলা আ‘লীগ নেতা মন্টু গ্রেফতার

সকল