০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`


যুক্তরাষ্ট্র থেকে পার্সেলে তরুণদের কাছে আসছে কোটি টাকার মাদক

-

আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্য থেকে বাংলাদেশের ডাক বিভাগের বৈদেশিক শাখায় পার্সেলের মাধ্যমে আসছে উচ্চমূল্যের মাদক। এসব মাদক তরুণ বয়সী একটি সঙ্ঘবদ্ধ চক্রের মাধ্যমে রাজধানীর অভিজাত এলাকায় ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। এমনই একটি চক্রের সদস্যদের প্রায় কোটি টাকার মাদকসহ গ্রেফতার করা হয়েছে।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর (ডিএনসি) তাদের গ্রেফতার করে। অভিযান চালিয়ে জব্দ করা হয়েছে টেট্রাহাইড্রো ক্যানাবিনলযুক্ত কুশ (বিশেষ ধরনের গাঁজা) ও গাঁজার তৈরি চকোলেট ও কেক।
ডিএনসি জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া থেকে বাংলাদেশ ডাক বিভাগের বৈদেশিক শাখায় খেলনা বাক্সের একটি পার্সেল আসে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে পার্সেলটি জব্দ করা হয়। পরে বক্সটি খুলে দেখা যায়, খেলনার বাক্সে উচ্চমূল্যের মাদক টেট্রাহাইড্রো ক্যানাবিনলযুক্ত কুশ, গাঁজার চকলেট ও কেক। যার বাজার মূল্য প্রায় কোটি টাকা। পার্সেলে একটি ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর দেয়া ছিল। তবে ঠিকানাটা ছিল ভুল। তাই মোবাইল নম্বর ধরে অভিযান চালায় ডিএনসি। পরে সাভারের আশুলিয়ায় বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে সংশ্লিষ্ট তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের নাম- রাসেল মিয়া, রমজান মিয়া ও মো: ইমরান ওরফে রাজ।
পার্সেলের ভেতরে ছয়টি প্যাকেটে ছিল টেট্রাহাইড্রো ক্যানাবিনলযুক্ত কুশ (আমেরিকার তৈরি), যার ওজন এক কেজি ৩০০ গ্রাম। এ ছাড়াও ছিল আমেরিকায় তৈরি গাঁজার ৯টি চকোলেট ও গাঁজার ১০টি কেক।
গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ডিএনসির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির মহাপরিচালক (ডিজি) মুস্তাকিম বিল্লাহ ফারুকী জানান, রোববার পল্টনের পুরাতন ডাক ভবনের বৈদেশিক ডাকের সিইডি/ডিসিএল শাখায় ক্যালিফোর্নিয়া থেকে খেলনার বক্সে করে আসা প্রায় কোটি টাকার বিপুল পরিমাণ মাদক জব্দ করা হয়।

পার্সেলে থাকা মোবাইল নম্বর ধরে প্রযুক্তির সহায়তায় আশুলিয়ার কাঠগড়া বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রথমে রাসেল মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, পার্সেলটি নিজে ডেলিভারি নেবে। পরে তার কাছ থেকে টাকার বিনিময়ে রিসিভ করার কথা ছিল রমজান মিয়ার। পরে আশুলিয়ার আমতলা এলাকা থেকে রমজানকে গ্রেফতার করা হয়।
রমজান জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তাকে টাকার বিনিময়ে পার্সেলটি রিসিভ করতে বলে ইমরান ওরফে রাজ। এরপর আমতলা থেকেই গ্রেফতার করা হয় রাজকে। তারা দুজন বন্ধু।
ডিএনসি ডিজি আরো বলেন, যে প্যাকেটে মাদকগুলো আমেরিকা থেকে বাংলাদেশে এসেছিল, সেগুলো ছিল বাচ্চাদের খেলনার প্যাকেট। এটা করার কারণ যাতে কেউ বুঝতে না পারে এসব প্যাকেটে মাদক রয়েছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে এভাবে বিদেশ থেকে গাঁজার কেক, কুশ ও চকোলেট এনে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করে আসছিল।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিজি বলেন, ক্যালিফোর্নিয়ায় এসব মাদক বৈধ কিংবা অবৈধ সেটি বিষয় না। বাংলাদেশে এই মাদক অবৈধ, তাই বাংলাদেশে এই মাদক পাঠানো আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। বাংলাদেশে এটা অবৈধ জেনেই তারা বাচ্চাদের খেলনার প্যাকেটে মাদক পাঠিয়েছে। এই পার্সেলটি যে কোনো আমেরিকান নাগরিক পাঠিয়েছেন বিষয়টি এমন নয়। ওখানে বসবাসরত অন্য কোনো দেশের নাগরিকও পাঠাতে পারেন।
ডিজি বলেন, গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে একজন একটি গার্মেন্ট ফ্যাক্টরির মার্কেটিং অফিসার। আমরা তদন্তে জানার চেষ্টা করব তাদের অর্থের উৎস কী এবং তারা কিভাবে অর্থ সেখানে পাঠিয়েছে। এর সাথে মানিলন্ডারিং জড়িত থাকতে পারে। তাদের পেছনে আরো কেউ আছে কি না এমন সব বিষয়ে তদন্ত করবা।

 


আরো সংবাদ



premium cement