দোষীদের শাস্তি দেয়ার আহ্বান বিভিন্ন সংগঠনের
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০১:০৬
ফরিদপুরে মধুখালীতে মন্দিরে আগুন দেয়ার সন্দেহে সহোদর দুই ভাইকে তুলে নিয়ে প্রচণ্ড নির্যাতন করে হত্যার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন সংগঠন। এ সময় দোষীদের শাস্তি দেয়ার আহ্বান জানান নেতারা।
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন : দলটির আমির মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজ্জি এক বিবৃতিতে বলেন, কোনো তথ্য-প্রমাণ ছাড়া সম্পূর্ণ সন্দেহবশত বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে হাত-পা বেঁধে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা অতীতের সব বর্বরতাকে হার মানিয়েছে। দেশে থানা-পুলিশ, আইন, প্রশাসন থাকা সত্ত্বেও সবকিছুকে উপেক্ষা করে আইনকে নিজের হাতে তুলে নিয়ে কেন দুইজন খেটে-খাওয়া মুসলিম শ্রমিককে গণপিটুনি দিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে তার রহস্য উদঘাটন করতেই হবে। তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধানোর নতুন কোনো গভীর ষড়যন্ত্র আছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে হবে। আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জি অবিলম্বে এ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের দাবি জানিয়ে বলেন, অন্যথায় উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য সরকারকে দায় নিতে হবে।
খেলাফত মজলিস : ফরিদপুরের মধুখালীতে মুসলিম শ্রমিকদের হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হব। এ নিয়ে কোনো রকম সময়ক্ষেপণ বা আইওয়াশ দেশবাসী মেনে নিবে না। সম্প্রতি ফরিদপুরের মধুখালীতে উগ্র হিন্দু গ্রামবাসীর তাণ্ডবে দু’জন মুসলিম তরুণ হত্যাকাণ্ডের শিকার এবং প্রশাসনের ত্বরিত ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হওয়ায় তীব্র ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে খেলাফত মজলিস। বিবৃতিতে খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদ ও মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেন, ৯২ শতাংশ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশে সর্বোচ্চ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিরাজমান। এখানে সংখ্যালঘু হিন্দুসহ অন্যান্য সম্প্রদায় নির্বিঘেœ তাদের ধর্মকর্ম পালন করতে পারছে। কিন্তু সাধারণ হিন্দুদের উসকানি দিয়ে কারা উগ্রতার বিষবাষ্প এখানে ছড়িয়ে দিতে চায় প্রশাসনকে সুষ্পষ্টভাবে খতিয়ে দেখতে হবে এবং তা নির্মূল করতে হবে। মন্দিরের প্রতিমায় আগুন কিভাবে লেগেছে বা কারা লাগিয়েছে সে ব্যাপারে স্পষ্ট না হয়ে আইন নিজের হাতে তুলে নেয়া এবং নিরীহ মানুষকে টার্গেট করে হত্যা করা জঘন্য অপরাধ। ফরিদপুরের হত্যাকাণ্ডের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দানে কোনোরকম টালবাহানা করা হলে জনগণ তার সমুচিত জবাব দিবে।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস : ফরিদপুরের মধুখালীর এক মন্দিরে আগুনের ঘটনায় নিছক সন্দেহের বশে স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় দুই মুসলিম শ্রমিককে নৃশংসভাবে হত্যা ও কয়েকজনকে আহত করার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ। তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষ সাম্প্রদয়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এখানে মুসলিম, হিন্দু বৌদ্ধসহ অনেকে বসবাস করছে। মসজিদ মাদরাসা ও মন্দির পাশাপাশি থেকেও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু ভারতের নির্বাচনের প্রাক্কালে হিন্দুদের মন্দিরে হামলা এবং একে কেন্দ্র করে দুইজন মুসলিম শ্রমিককে নিমর্মভাবে হত্যা ও কয়েকজনকে আহত করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়েছে। এ ঘটনার উদ্দেশ্য সরকারকে খুঁজে বের করতে হবে। এদের চক্রান্ত দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে। দেশের মানুষ এ ঘটনায় স্তব্ধ ও মর্মাহত এবং বাকরুদ্ধ। কোনো ধরনের তদন্ত ছাড়া এভাবে দুইজন মানুষকে হত্যা করা কেনো ভাবেই মেনে নিতে পারি না। ৯৫ শতাংশ মুসলমানের দেশে মুসলিম শ্রমিকদের নির্যাতন ও হত্যা গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীদের শনাক্ত করে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
জাতীয় উলামা মুভমেন্ট : ফরিদপুরের মধুখালীর দুই মুসলিম তরুণকে হত্যা করে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি করে হিন্দুদের ধর্মীয় উন্মাদনা কাজে লাগিয়ে হিন্দুত্ববাদের নগ্ন দোসর নরেন্দ্র মোদি চলমান নির্বাচনে ফায়দা নেয়ার ষড়যন্ত্র থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় উলামা মুভমেন্টের আমির মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মাসউদ খান ও মহাসচিব মাওলানা এহতেশামুল হক সাখী। এক যুক্ত বিবৃতিতে জাতীয় উলামা মুভমেন্টের পক্ষ থেকে এই পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে নেতৃদ্বয় বলেন, কোনো ধরনের দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি করে বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার চক্রান্তে পা দেয়া যাবে না। সরকারের উচিত বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যাবস্থা করা। নইলে মুসলিম জনগোষ্ঠীর মনের পুঞ্জিভূত ক্ষোভ ছড়িয়ে পারলে পরিস্থিতি জটিল হবে এবং তা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা