নবীনগরে তুচ্ছ ঘটনায় নিহত ১, আহত ৩ গ্রেফতার ৪

ব্রাহ্মণবাড়িয়া নবীনগরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাদশা মিয়া (১৮) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন তিনজন। এর মধ্যে সাইফুল ইসলাম ও জিহাদ নামে দুই যুবককে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় ও কুমিল্লায় পাঠানো হয়েছে। আরেকজনকে নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। শনিবার (২০ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার সলিমগঞ্জ ইউনিয়ন বাড্ডা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত বাদশা মিয়া বাড্ডা গ্রামের আবু কালামের একমাত্র ছেলে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা মর্গে পাঠিয়েছেন। এ ঘটনায় নিহতের বোন পপি আক্তার বাদি হয়ে নবীনগর থানায় অনিক মিয়াকে প্রধান আসামি দিয়ে এজাহারভুক্ত ২১ ও অজ্ঞাতনামা চার-পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
এলাকাবাসী জানান, ঢাকা থেকে বাড্ডা গ্রামে জনৈক ব্যক্তির বাড়িতে একটি মেয়ে বেড়াতে আসলে ওই মেয়ের সাথে মামলার প্রধান আসামি অনিক ও তার বন্ধুরা সম্পর্ক সৃষ্টির চেষ্টা করেন, অপর দিকে মহল্লার সাইফুল, জিহাদ, তারেক ও তার বন্ধুরা একই মেয়ের সাথে কথা বলতেন। ওই মেয়ের সাথে কথা বলতে নিষেধ করেন আসামি পক্ষের শাহ আলম মিয়ার ছেলে সোহেল মিয়া। এ নিয়ে শুক্রবার হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে, ওই দিন বাদশা ছিলেন মির্জাচর বিয়ের দাওয়াতে। হাতাহাতির বিষয়টি মীমাংসা করে দেয়ার জন্য গ্রামের মুরুব্বিদের জানানো হলেও তারা এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেননি। পরদিন শনিবার সন্ধ্যার পর আসামি পক্ষের লোকজন বাড্ডা পশ্চিম পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে একটি চায়ের দোকানে চা পান করার নাম করে একজন ওই মেয়ের খবর নিতে গিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এ সময় তাদের হাতে থাকা দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে সাইফুল আহত হলে তা দেখে বাদশা চিৎকার দিলে হামলাকারীরা বাদশা মিয়ার ওপর হামলা চালিয়ে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তাকে মারাত্মকভাবে আহত করে। এরপর তারেক ও জিহাদকে কুপিয়ে আহত করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদেরকে স্থানীয় হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা ও ঢাকায় রেফার করেন।
ঢাকায় নেয়ার পথে রক্ত শূন্যতায় বাদশা মিয়া মারা যান। মারা যাওয়ার আগে হামলাকারীদের কয়েকজনের নাম নিজ মুখে বলে গেছেন। আহত সাইফুলের অবস্থা এখনো আশঙ্কাজনক।
মামলার বাদি পপি আক্তার জানান, আমাদের তিন বোনের মাঝে একমাত্র ভাই বাদশা। ভাইয়ের বিদেশ যাওয়ার কথা ছিল কয়েক মাসের ভেতরে, আমার ভাই এই ঘটনার সাথে জড়িত নন, তাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে।
নবীনগর থানার ওসি মাহবুব আলম জানান, এ ঘটনায় পুলিশ চারজনকে গ্রেফতার করেছে। নিহতের লাশ রাতেই উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা মর্গে পাঠানো হয়েছে এবং নিহতের বোন বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। পরবর্তী সংঘর্ষ এড়াতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।