১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
ঈশ্বরদীতে ৪০ ডিগ্রি

চুয়াডাঙ্গায় মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা

-


চুয়াডাঙ্গায় এ মৌসুমের সর্বোচ্চ ৪০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে গতকাল শনিবার। টানা কয়েকদিনের তাপপ্রবাহে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়ছে। সাথে রোজাদার ও খেটে খাওয়া মানুষদের ব্যাপক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ঈদে মার্কেটগুলোতে কেনাকাটা জমে উঠলেও ভাপসা গরমের কারণে দিনে লোকজন বাইরে তেমন বের হচ্ছেন না। চুয়াডাঙ্গার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের সিনিয়র আবহাওয়া পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান তাপমাত্রা রেকর্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গত সোমবার ১ এপ্রিল চুয়াডাঙ্গার মাপমাত্রা ছিল ৩৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২ এপ্রিল মঙ্গলবার ছিল ৩৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৩ এপ্র্রিল বুধবার ছিল ৩৮.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৪ এ্রপ্রিল বৃহস্পতিবার ৩৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও ৫ এ্রপ্রিল শুক্রবার ছিল ৩৮ দশমিক ডিগ্রি সেলসিয়াস। শনিবার বিকাল ৩টায় সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ৪০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উন্নীত হয় তাপমাত্রা।

এদিকে, গত ১ এপ্রিল থেকে জেলার ওপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তাপপ্রবাহের কারণে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হতেও পরামর্শ দিচ্ছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: আওলিয়ার রহমান পরামর্শ দিয়ে বলেন, তাপপ্রবাহের কারণে হিট স্ট্রোকের ঝুঁঁকি থাকে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হতেও পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। রোজাদারদের সন্ধ্যার পর থেকে বেশি বেশি পানি ও ফলমূল খেতে বলা হচ্ছে। শিশুকিশোর ও যারা রোজা থাকছেন না তাদেরকে ঘন ঘন পানি ও শরবত পান করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
অপরদিকে, চলমান তাপপ্রবাহের কারণে কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর। চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, তাপপ্রবাহের ক্ষতি থেকে সাবধান রার জন্য বোরো ধানের জমিতে পর্যাপ্ত পানি ধরে রাখা, ধানের শিষে দানা শক্ত না হওয়া পর্যন্ত জমিতে অবশ্যই ২ থেকে ৩ ইঞ্চি পানি রাখতে হবে। আম গাছের গোড়ায় পর্যাপ্ত সেচ প্রদান করা; প্রয়োজনে গাছের শাখাপ্রশাখায় পানি স্প্রে করা যেতে পারে। সবজি ক্ষেতে মাটির ধরন বুঝে প্রয়োজন অনুযায়ী ২ থেকে ৩টি সেচের ব্যবস্থা করা।

জেলার বিভিন্ন গ্রামের কৃষকরা জানান, অতিরিক্ত গরমে মাঠে কৃষি কাজের ব্যাঘাত ঘটছে। রোজায় তারা দিনে বেশি কাজ করতে পারছেন না।
শহরে কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, আর কয়েকদিন পর পবিত্র ঈদুল ফিতর। বেচাকেনা জমে উঠলেও অতিরিক্ত গরমের কারণে দুপুর ১২টা পর থেকে বিকেল পর্যন্ত মার্কেটগুলোতে লোকজনের আনাগোনা খুবই সীমিত।
চুয়াডাঙ্গার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের সিনিয়র আবহাওয়া পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান বলেন, আজ শনিবার বেলা ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, যা চলছি মৌসুমে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। চলমান তাপপ্রবাহ আরো বিস্তার লাভ করতে পারে। জলীয়বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বাড়তে পারে।

ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে নাভিশ্বাস জনজীবনে
ঈশ্বরদী সংবাদদাতা জানান ঈশ্বরদীতে এ বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঈশ্বরদী আবহাওয়া অধিদফতরের ইনচার্জ হেলাল উদ্দিন।
গতকাল বেলা ৩টায় দিনের প্রতিঘণ্টা তাপমাত্রায় এ রেকর্ড সংরক্ষণ করা হয়েছে। এর আগে দুপুর ১২টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এ দিকে গতকাল সকাল ১০টার পর থেকেই তাপমাত্রা বাড়তে থাকে। ফলে ঈশ্বরদীর বিভিন্ন এলাকার পাকা রাস্তায় দেখা গেছে বিটুমিন (পিচ) গলে গাড়ির টায়ার ও পথচারীদের জুতায় লেপ্টে যাচ্ছে।
ঈশ্বরদী আবহাওয়া অধিদফতরের ইনচার্জ হেলাল উদ্দিন জানান, শনিবার এ বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। তাপমাত্রা আরো বাড়তে পারে ও কয়েকদিন স্থায়ী হতে পারে।
শনিবার দুপুর থেকেই অগ্নিঝরা বাতাস আর ভাপসা গরমে নাভিশ্বাস উঠেছে জনজীবনে। বিশেষ করে গ্রামীণ জনপদে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। তীব্র তাপমাত্রা সেই সাথে বিদ্যুতের দীর্ঘ সময়ের ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে বিপর্যস্ত হয়েছে উঠেছে জনজীবন।


আরো সংবাদ



premium cement