যুব উন্নয়ন কর্মকর্তাকে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতন করল আপন ভাইয়েরা
- ফরিদপুর প্রতিনিধি
- ০৩ এপ্রিল ২০২৪, ০১:১৪
ফরিদপুরে যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা হোসেন প্রামাণিককে গাছের সাথে বেঁধে বর্বর নির্যাতন চালিয়েছে তারই আপন ভাইয়েরা। ঠেকাতে গিয়ে তার স্ত্রী ও কলেজপড়ুয়া মেয়েকেও মাটিতে ফেলে মারধর করা হয়েছে। এরপর ৯৯৯ নম্বরে খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানা পুলিশের একটি দল তাদের উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসে। বর্তমানে তাদের হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে। গত সোমবার সকালে ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের চাঁদপুর পূর্ব মল্লিকপাড়ায় এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
নির্যাতনের শিকার হোসেন প্রামাণিক রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা। তিনি বলেন, সোমবার সকাল ৬টার দিকে তিনি বাজারে যাচ্ছিলেন। পথে তার ভাই কাদের, লতিফ, আজিজুল, মাইনুদ্দিন, মুরশিদসহ ৭ থেকে ৮ জন তাকে দেখে ধাওয়া করে। তিনি দৌড়ে একটি বাড়ির দিকে যেতে চাইলে চারজন তাকে ঘিরে ধরে। তাকে গলায় গামছা দিয়ে টেনেহিচড়ে চ্যাংদোলা করে বাড়ির মধ্যে টেনে নিয়ে রান্নাঘরের সামনে লিচু গাছের সাথে বেঁধে বর্বর নির্যাতন করা হয়। এরপর লতিফ হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে ও প্লাস দিয়ে আহত করে। আব্দুল, আজিজুল ও মুরশিদ বাঁশ ও লাঠি দিয়ে পেটায়। তার নিকট থেকে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর রাখে। আজমত নামে একজন এসে তার চোখ উঠিয়ে দিতে বলে। দু’জন নারীও হামলার সময় তাদের সাথে ছিল। তারা শলা দিয়ে পেটায়। তার পা ভেঙে গেছে। সারা শরীরে থেঁতলে যাওয়া আঘাতের চিহ্ন।
এ দিকে হোসেন প্রামাণিকের ওপর নির্যাতনের খবর পেয়ে তার স্ত্রী নাজমা বেগম (৪৫) ও তার মেয়ে নুপুর (২০) ও ফাতেমা (২২) তাকে বাঁচাতে এলে তাদেরকেও মারধর করা হয়। নাজমা বেগম বলেন, আশেপাশের বাড়ির লোকদের জানালে তারা কেউ তার স্বামীকে রক্ষায় এগিয়ে আসেনি। এরপর তিনি তার মেয়েরা স্বামীকে উদ্ধার করতে গেলে তাকে বিবস্ত্র করে পেটাতে থাকে। তার মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। আঘাতে তার পা ভেঙে গেছে। এরপর ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলে পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে। নাজমা বেগম বলেন, ঘটনার সময় চৌকিদার এসে তাকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর দিতে বলে।
কোতোয়ালি থানার এসআই সুজন বিশ্বাস ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, জরুরি নম্বরে কল পেয়ে হোসেন প্রামাণিক ও তার স্ত্রীকে আহতাবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
জানা গেছে, তার পিতা মৃত ওয়াহেদ প্রামাণিক ৪ একর ৩৬ শতাংশ জমি বড়পীর আব্দুল কাদের জিলানী (রহ.) ও খাজা মাইনুদ্দিন চিশতি (রহ.) এর নামে ওয়াকফ করে যান। ওই জমির মোতোয়াল্লি ছিল বড় সন্তান আব্দুল কাদের ও মেজো সন্তান মাইনুদ্দিন প্রামাণিক। ওয়াকফকৃত সম্পত্তির ফসলাদি, ফলফলাদি ও গাছপালার সম্পদ তারাই ভোগদখল করত। এরপর ২০২২ সালের আগস্টে ওয়াকফ এস্টেট হোসেন প্রামাণিককে মোতোয়াল্লি নিযুক্ত করে। এ নিয়ে তখন থেকেই হোসেন প্রামাণিকের ওপরে ভাইয়েরা রুষ্ট।
হোসেন প্রামাণিক বলেন, প্রায় এক বছর আগে ভাইয়েরা তাকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। ওই ঘটনায় একটি মামলা চলমান রয়েছে। এ অবস্থায় গত ২০ মার্চ ও ২৭ মার্চ রাতে পরপর দুবার তার বাড়িতে আগুন দেয়া হয়। তিনি থানায় একটি মামলা করেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা