রিক চায় বোকা হতে!
- নয়া দিগন্ত ডেস্ক
- ০১ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০৫
তৃতীয় শ্রেণীর ক্লাসঘরে শিক্ষক জানতে চেয়েছিলেন, কী হতে চাও বড় হয়ে? পশ্চিমবঙ্গের লাভপুরের শীতলগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা একে একে বলে যাচ্ছিল, কেউ ডাক্তার হতে চায়। কেউ মাস্টার। কারো আবার পুলিশ, সিআইডি অফিসার হওয়ার ইচ্ছে। সবার শেষে মুখ খুলল রিক। রিক বাগদি। অদ্ভুত মায়াভরা এক হাসি নিয়ে সে বলে উঠল, স্যার, আমি বোকা হতে চাই।
কেন রিক, কেন চাও বোকা হতে? রিক আবার লাজুক হাসে। তার পর বলে, বাবাকে বলতে শুনেছি, ‘বোকা পেয়ে সবাই আমাকে ঠকিয়ে নিচ্ছে।’ কিন্তু বাবা কাউকে ঠকিয়েছে, এমনটা শুনিনি। বাবার মতো আমিও কাউকে ঠকাতে চাই না।
শিক্ষক অবাক। বললেন, ‘বোকা হলে তো তোমাকে সবাই ঠকিয়ে নেবে!’ রিক হাসতেই থাকে। উত্তর দেয়, ‘ঠকিয়ে নেয় তো নেবে! বোকা হলে আমি তো কাউকে ঠকিয়ে নিতে পারব না।’
রিকের কথাগুলো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন স্কুলেরই শিক্ষক রিপন কান্তি বালা। যত মানুষ সেই ভিডিও দেখে, কথাগুলো নাড়িয়ে দেয় তাদেরও।
শীতলগ্রামেই বাড়ি ছোট্ট রিকের। বাবা অভিজিৎ বাগদি পেশায় দিনমজুর। মা সুমিন্দা গৃহিণী। দু’জনেই বললেন, ‘রিক মাঝে মধ্যে এমন অনেক কথা বলে, যা আমাদের ভাবিয়ে তোলে।’ আর রিকের শিক্ষক রিপন জানিয়ে দিচ্ছেন, বোকা হতে চাইলেও রিক পড়াশোনায় মোটেই খারাপ নয়। বরাবরই সে নির্বিরোধী। কারো সাথে ঝগড়াঝাঁটিতে জড়ায় না। বসার জায়গা থেকে খেলার হারজিত কোথাওই কোনো প্রতিযোগিতায় সে নেই।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক শান্তনু ঘোষও রিকের কথা শুনে বিস্মিত। বললেন, ‘ছোট্ট শিশুটির কথায় ধরা পড়েছে গভীর জীবনবোধ। ভবিষ্যতে সে একজন সৎ নাগরিক হবে বলে আশা রাখি।’ স্কুলের এক অভিভাবক সুমন্ত ঘোষ বলছেন, ‘তৃতীয় শ্রেণীতে পড়া একটি ছেলের মুখে এমন ভাবনার কথা কল্পনাই করা যায় না। এমন মনোভাব প্রতিটি মানুষের কাছে কাম্য।’ ইন্টারনেট।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা