‘রাজমিস্ত্রি চক্র’ হাতিয়ে নেয় মোটা অঙ্কের টাকা
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০১ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০৫
পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। কিন্তু রাতারাতি ধনী হওয়ার স্বপ্ন পেয়ে বসে তাকে। স্বল্প পরিশ্রমে বেশি টাকা উপার্জনে কয়েক বন্ধু মিলে গড়ে তোলে একটি চক্র। চক্রটি কখনো মোবাইল ব্যাংকিং অফিসের লোক, কখনো শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তা পরিচয়ে বিভিন্ন ব্যক্তিকে ফোন করত। উপবৃত্তির টাকা দেয়া হবে জানিয়ে প্রথমে প্রলোভন দেখাত। পরে অভিনব কৌশলে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও বিকাশের পিন নম্বর জেনে নিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিত।
এমনই প্রতারক চক্রের একজন সাজ্জাত হাওলাদার ধরা পড়েছে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাতে। সম্প্রতি এক আইনজীবীর মেয়েকে উপবৃত্তি দেয়ার কথা বলে দুই লাখ ৮০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে সাজ্জাতকে গ্রেফতার করেছে, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গত শনিবার রাতে রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গতকাল রোববার রাজধানীর মিন্টু রোডে নিজ কার্যালয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ও গোয়েন্দা প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ সাংবাদিকদের জানান, ভুক্তভোগী আইনজীবীর মেয়ে গত বছর এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। গত ২২ জানুয়ারি ওই আইনজীবীর ফোনে একটি মেসেজ আসে। সেখানে জানানো হয়, ভালো রেজাল্টের জন্য তার মেয়ে প্রতি মাসে পাঁচ হাজার ২০০ টাকা করে উপবৃত্তি পাবে। এ জন্য উল্লিখিত ফোন নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়। তিনি বলেন, ২৩ জানুয়ারি নির্ধারিত নম্বরে ফোন করলে রাজধানীর বকশিবাজার শিক্ষা বোর্ডের অফিস থেকে কথা বলা হচ্ছে বলে জানানো হয়। এ সময় ওই আইনজীবীর মেয়ে প্রতি মাসে পাঁচ হাজার ২০০ টাকা করে সাত মাস এবং এক বছর পর থেকে তিন বছর পর্যন্ত মাসিক ১২ হাজার ৫০০ টাকা করে উপবৃত্তি পাবেন বলে জানায় ওই প্রতারক। ভুক্তভোগীর ব্যাংকের হিসাব নম্বর ও শাখার নাম জানতে চায় সে। স্কলারশিপের টাকা পাঠানোর জন্য একটি বিকাশ নম্বর, মেয়ের মোবাইল ফোন নম্বর এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর জানতে চায় অভিযুক্ত। ওই আইনজীবী প্রয়োজনীয় তথ্য দিলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ফোন করে আরো কিছু তথ্য চাইবে বলেও জানানো হয়।
গোয়েন্দা প্রধান বলেন, পরে ভুক্তভোগীর বিকাশ নম্বরে বিভিন্ন মেসেজ যায় এবং একাধিক কোডও সরবরাহও করেন তিনি। একপর্যায়ে ফোন করে নির্দিষ্ট একটি নম্বরের সাথে অপর একটি নম্বর এবং বিকাশের পিন যোগ করে যোগফল জানতে চায় অভিযুক্ত। ওই আইনজীবী তা জানান। তখন তাকে ১২ ঘণ্টা বিকাশে লেনদেন বন্ধ রাখতে বলা হয়, অ্যাকাউন্ট চেক করতেও নিষেধ করা হয়। সন্দেহ হলে ১০-১৫ মিনিট পর বিকাশ অ্যাকাউন্ট চেক করে ওই আইনজীবী দেখেন তার এক লাখ টাকা কেটে নেয়া হয়েছে। এভাবে পরে আরো এক লাখ এবং ৮০ হাজার টাকাসহ মোট দুই লাখ ৮০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়। পরে শাহবাগ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী। মামলার তদন্তে নেমে সাজ্জাতকে গ্রেফতার করে ডিবি সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম দক্ষিণ বিভাগ। গ্রেফতারকৃত সাজ্জাদের বাড়ি ফরিদপুরে। সে ঢাকায় রাজমিস্ত্রির কাজ করত।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা