সরকার ভিন্ন মত প্রকাশের সুযোগ দিচ্ছে না -ড. মঈন খান
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ৩১ মার্চ ২০২৪, ০২:১০
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, সরকার ভিন্ন মত প্রকাশের কোনো সুযোগ দিচ্ছে না। আজকে কেউ আওয়ামী লীগ করবে, কেউ বিএনপি করবে, কেউ অন্য দল করবে এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। এ দেশ স্বাধীনও হয়েছিল গণতন্ত্রের জন্য। কিন্তু সরকার মুক্তিযুদ্ধের সেই চেতনা থেকে দূরে সরে দেশে একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছে। এ দেশে এখন আমরা কীভাবে বাস করব, সেটিই বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে।
গতকাল রাজধানীর মগবাজারে নির্যাতিত ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্যসচিব রবিউল ইসলাম নয়নের বাসায় এবং মিরপুরে মরহুম সাংবাদিক হাবিবুর রহমান খানের পরিবারের সদস্যদের সান্ত¡না দিতে গিয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
ড. মঈন খান বলেন, আমরা আশা করব সরকার গণতন্ত্রের পথে ফিরে আসবে। মানুষকে তাদের মতামত প্রকাশের সুযোগ দেবে। ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেবে। তারা মুখে যা বলে বাস্তবে তা প্রমাণ করবে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের বিগত তিনটি নির্বাচনের ইতিহাস দেখুন। দেশের ১২ কোটি ভোটার এই নির্বাচনকে প্রত্যাখ্যান করেছে। কিন্তু সরকার গায়ের জোরে ক্ষমতায় আছে। সরকারকে মানুষের ভোটের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিতে হবে। আমরা মুক্ত পরিবেশে বসবাস করতে চাই। কথা বলার স্বাধীনতা চাই।
‘বিএনপি বিদেশীদের কাছে ধরনা দিচ্ছে’ আওয়ামী লীগের এমন অভিযোগের বিষয়ে মঈন খান বলেন, সরকারের অভিযোগ সত্যি নয়। বিএনপি যদি বিদেশীদের ওপর নির্ভর করত তাহলে সারা বছর এসি রুমে বসে সিনেমা দেখত। কিন্তু বিএনপি রাজপথে আন্দোলন করছে, সভা-সমাবেশ করছে। সারা দেশে পদযাত্রা করেছে। সরকারের অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই।
রবিউল ইসলাম নয়নের পিতা আক্কাস শেখ কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আজকে ১৫ বছর ধরে আমার ছেলে বাসায় থাকতে পারে না। ছেলের চেহারা দেখতে পারি না। কোথায় আছে জানি না। রাজনীতি করার কারণে দুইবার আমার ছেলেকে গুলি করা হয়েছে। একবার গুলি করার পর মৃত ভেবে নয়নকে মর্গে নিয়ে যায় পুলিশ। নয়নের বিরুদ্ধে আড়াই শতাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে। ১০০’র বেশি দিন রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। হাত-পায়ের নখ তুলে ফেলা হয়েছে। বিএনপির রাজনীতি করাই আমার ছেলের অপরাধ।
রবিউল ইসলাম নয়নের বাসা হয়ে মিরপুরের শাইনপুকুরে মরহুম সাংবাদিক হাবিবুর রহমান খানের পরিবারের সদস্যদের সাথে দেখা করেন ড. মঈন খান। এ সময় হাবিবের স্ত্রী ফারজানা মাহমুদ সনি ছাড়াও যুবদল নেতা আসিফুর রহমান বিপ্লব, গোলাম কিবরিয়া শাহীন, মুনতাকিম সারোয়ার রকি উপস্থিত ছিলেন।
জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য বিএনপি রাজনীতি করে
মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, বিক্রমপুর একটি ঐতিহ্যের নাম। বাংলাদেশের দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৯৭৯ সালে এখান থেকে সর্বকনিষ্ঠ সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন আব্দুল হাই। আমরা জিয়ার আদর্শের রাজনীতি করি। খালেদা ও তারেক রহমানের নির্দেশে রাজনীতি করি। আমরা তিনটি নির্দেশ পালন করলে আমাদেরকে আর কেউ ঠকাতে পারবে না। বিএনপি বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে চায়। জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য বিএনপি রাজনীতি করে। ভোটের অধিকার, অর্থনীতির শোষণ থেকে মুক্ত করার, আইনের শাসন ফিরিয়ে আনার জন্যই আমরা রাজনীতি করি। শুক্রবার জারা কমিউনিটি সেন্টারে মুন্সীগঞ্জ জেলা বিএনপির আলোচনাসভা, ইফতার ও দোয়া মাহফিলে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ বক্তব্য দেন। পরে মীর সরাফত আলী সফুও বক্তব্য রেখেছেন এবং সব কারামুক্ত নেতাকর্মীদের ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নিয়েছেন।
আলোচনা সভায় মুন্সীগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মো: কামরুজ্জামান রতনের সভাপতিত্বে মুখ্য আলোচকের বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান। এ ছাড়া বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজীর আহমেদ টিটো এবং কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল।
এ ছাড়া আলোচনা করেন মুন্সীগঞ্জ জেলা সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মো: মহিউদ্দিন, মো: শাহজাহান খান, আলী আজগর রিপন মল্লিক, এ কে এম ইরাদত মানু, শহিদুল ইসলাম শাহিন প্রমুখ।
আলোচনা শেষে ইফতারের পূর্ব মুহূর্তে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, ফিলিস্তিনের নির্যাতিত সব মুসলিম জাতির জন্য দোয়া করা হয়। আলোচনা ও দোয়া মাহফিলে জেলা বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের সব নেতাকর্মী অংশ গ্রহণ করেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা