১৯ মে ২০২৪, ০৫ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলকদ ১৪৪৫
`


স্কুলে শতভাগ বই না দিয়েই চার শ্রেণীতে নতুন শিক্ষাক্রম

-


নতুন শিক্ষাবর্ষের প্রথম দিন আজ। বিগত কয়েক বছর ধরেই বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেয়ার রীতি থাকলেও এ বছর সবাই বই পাচ্ছে না। অর্থাৎ চলতি বছর শতভাগ বই স্কুলে না দিয়েই প্রাথমিকে দুই শ্রেণী এবং মাধ্যমিকেরও দুই শ্রেণীসহ মোট চার শ্রেণীতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু করা হচ্ছে। যদিও নতুন বই হাতে না পেলে নতুন শিক্ষাক্রম চালু করা নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছে। অন্য দিকে বই সঙ্কটের কথা জানিয়েই নতুন বছরে প্রাথমিকে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীতে এবং মাধ্যমিকে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি।
এ দিকে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলাপর্যায় থেকে স্কুলে স্কুলে বিনামূল্যের পাঠ্যবই পৌঁছানোর যে তথ্য দেয়া হয়েছে সেখানেও রয়েছে হতাশার চিত্র। এখন পর্যন্ত মাধ্যমিক পর্যায়ের ৮০ আর প্রাথমিকের ৬৫ শতাংশ বই উপজেলাপর্যায়ে পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। যদিও মুদ্রণ শিল্প সমিতির দাবি, ঘাটতির পরিমাণ এনসিটিবির হিসাবের চেয়ে অনেক বেশি। সূত্র মতে, গত ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত যেসব বই ছাপানো হয়েছে, সেগুলো মাঠপর্যায়ে (উপজেলা) চলে গেছে। এরপর ছাপানো বইগুলো ছাড়পত্র দিয়ে উপজেলাপর্যায়ের স্কুলগুলোতে এখনো পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। এর মানে হলো ৮০ শতাংশ মাধ্যমিক আর ৬৫ শতাংশ প্রাথমিকের বই দিয়েই হবে এবারের বই উৎসব।


সূত্র জানায়, এ বছর নানামুখী সঙ্কটের পাশাপাশি বই ছাপানোর কার্যাদেশ দিতে দেরি করায় ঠিক সময়ে শতভাগ পাঠ্যবই ছাপার কাজ শেষ হয়নি। তারপরও উৎসব করেই শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিতে সবধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে এনসিটিবি। গতকাল শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে উৎসবের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ রোববার সীমিত বই দিয়েই স্কুলে স্কুলে পালিত হবে বই উৎসব।
এনসিটিবি সূত্র জানায়, এবার প্রাথমিকের ৯ কোটি ৬৬ লাখ আট হাজার ২৪৫ এবং মাধ্যমিকে ২৩ কোটি ৮৩ লাখ ৭০ হাজার ৫৮৮টি বই ছাপানো হচ্ছে। কাগজ ও কালির সঙ্কট, ভালো মানের মণ্ডের (পাল্প) সঙ্কট, ঊর্ধ্বমুখী দাম, ছাপা সরঞ্জামের মূল্যবৃদ্ধি, লোডশেডিং, এনসিটিবির বইয়ের কার্যাদেশে দেরিসহ কয়েকটি কারণে এবার সময়মতো সব শিক্ষার্থীর হাতে মানসম্মত বই তুলে দেয়া নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত এই সঙ্কট কাটেনি। কাগজের মূল্যবৃদ্ধির অজুহাতে মুদ্রণকারীদের চাওয়া অনুযায়ী ছাপার কাগজের উজ্জ্বলতায় ছাড় দিয়েছে এনসিটিবি। তাতে দু-একটি বাদে বাকি প্রেসগুলো নিম্নমানের কাগজে বই ছাপিয়েছে; কিন্তু এর পরও গতকাল পর্যন্ত উপজেলাপর্যায়ে সব বই পাঠানো সম্ভব হয়নি।
এনসিটিবি কর্মকর্তারা জানান, এ বছর পয়লা জানুয়ারিতে সীমিত বই দিয়েই উৎসব পালন করা হলেও মূলত জানুয়ারি পুরো মাসজুড়েই চলবে বই ছাপার কাজ। আর সব স্কুলে একসাথে সব বই দিতে না পারলেও পর্যায়ক্রমেই সব স্কুলে সব বই দেয়া হবে।


সূত্র আরো জানায়, এ বছর বই ছাপার কাজ দেরিতে শুরু হওয়ায় মাধ্যমিকের চেয়ে কিছুটা পিছিয়ে আছে প্রাথমিকের বই ছাপার কাজ। প্রাথমিকে মোট বইয়ের ৬৫ শতাংশ ছাপার কাজ শেষে স্কুলগুলোতে পাঠানোর পর্যায়ে আছে। তবে এসব বই সব উপজেলাতে সমানভাবে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। তাদের আশা, জানুয়ারির মধ্যেই শিক্ষার্থীরা সব বই পাবে।
স্কুলপর্যায়ে বইয়ের সঙ্কট কবে নাগাদ কাটতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম নয়া দিগন্তকে জানান, নতুন বছরের শুরুতে অর্থাৎ পয়লা জানুয়ারির আগে প্রথম থেকে পঞ্চম এবং ষষ্ঠ-সপ্তম শ্রেণীর ৫০ শতাংশ আর অষ্টম-নবম শ্রেণীর ৭৫ শতাংশ বই উপজেলাপর্যায়ে পৌঁছে গেছে। আর যেহেতু ক্ষেত্রবিশেষে ১৭ থেকে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত টেন্ডারের মেয়াদ আছে সেই ক্ষেত্রে জানুয়ারি মাসের মধ্যেই সব শিক্ষার্থী সব বই হাতে পাবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement