২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

খেলাপি ঋণ কমে গেল

ঋণ আদায়ের ওপর শিথিলতার প্রভাব
-

গত জানুয়ারি থেকে ঋণ আদায়ের ওপর শিথিলতা আরোপ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বলা হয়েছে, কেউ ঋণ পরিশোধ না করলে তাকে খেলাপি করা যাবে না। এ নির্দেশনা ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে খেলাপি ঋণে। গত সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ বাড়েনি, বরং আগের তিন মাসের তুলনায় প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা কমে গেছে। এ সুবাদে খেলাপি ঋণের হারও কমে নেমেছে মোট খেলাপি ঋণের ৮ দশমিক ৮৮ শতাংশে। যেখানে গত জুনে ছিল ৯ দশমিক ১৬ শতাংশ।
ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, গত জানুয়ারি থেকে ঋণ আদায়ের ওপর শিথিলতা আরোপ করায় আদায় কার্যক্রম থেমে গেছে। যারা নিয়মিত ঋণ পরিশোধ করতেন তাদের অনেকেই পরিশোধ বন্ধ করে দেন। এতে ব্যাংকের ঋণ আদায়ের ওপর বড় ধরনের প্রভাব পড়ে। এতে ব্যাংকগুলোর মোটা দাগে দুই ধরনের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। প্রথমত. ঋণ আদায় কমে যাওয়ায় বিনিয়োগ থেকে প্রকৃত মুনাফা কমে যাচ্ছে। অপর দিকে ঋণ আদায় না হলেও সংশ্লিষ্ট গ্রাহককে ঋণখেলাপি করা হচ্ছে না। এতে এক দিকে ব্যাংকের প্রকৃতপক্ষে পুঞ্জীভূত খেলাপি ঋণ বেড়ে গেলেও নীতিমালার কারণে খেলাপি ঋণ দেখানো সম্ভব হচ্ছে না। এ সুযোগটি অনেক ব্যাংক নিচ্ছে। কারণ খেলাপি ঋণের শ্রেণীভেদে শতভাগ পর্যন্ত প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হয়। আর এ প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হয় ব্যাংকের মুনাফা থেকে। কিন্তু যেখানে নীতিমালার কারণে ঋণখেলাপি করা যাচ্ছে না, এতে ঋণ আদায় না হলেও খেলাপি ঋণ না বাড়ায় প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হচ্ছে না। এতে কিছু কিছু ব্যাংক কৃত্রিম আয় বাড়িয়ে দেখাচ্ছে। আর এ কৃত্রিম আয়ের ওপর ভিত্তি করেই ৪০ শতাংশ পর্যন্ত সরকারের করপোরেট ট্যাক্স পরিশোধ করতে হচ্ছে। এতে ব্যাংকের ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়ছে।
দেশের প্রথম প্রজন্মের একটি ব্যাংকের এমডি জানিয়েছেন, ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি ঋণ খেলাপি হলে সে পণ্য আমদানির জন্য এলসি খুলতে পারে না। এমনকি কোনো জাতীয় নির্বাচনেও অংশ গ্রহণ করতে পারে না। এ কারণে কারো ঋণ আনাদায়ী থাকলে ব্যবসা চালু রাখার স্বার্থেই তড়িঘড়ি করে অনেকেই ঋণ পরিশোধ করতেন। আবার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে হলেও ঋণ খেলাপিরা ব্যাংকের অর্থ পরিশোধ করতেন। এভাবে ব্যাংকের ঋণ আদায় বেড়ে যেত। কিন্তু গত জানুয়ারি থেকে প্রথমে জুন মাস পর্যন্ত ঋণ আদায়ের ওপর শিথিলতা আরোপ করা হয়। ব্যাংকাররা ধরেই নিয়েছিলেন জুলাই থেকে তারা খেলাপি করতে পারবেন। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের কথা চিন্তা করে ঋণ আদায়ের শিথিলতা আরো তিন মাস বাড়িয়ে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়। কিন্তু পরিস্থিতি উন্নতি না হওয়ায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ শিথিলতা আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত বর্ধিত করে। ফলে ব্যাংকগুলো অনেকটা অসহায় হয়ে পড়ে। এক বছর ঋণ আদায় কার্যক্রম বন্ধ থাকলে প্রকৃত আয় কমে যায়। আবার আমানতকারীদের অর্থও শর্তানুযায়ী ফেরত দিতে হয়। এমনি পরিস্থিতিতে ব্যাংকগুলো নতুন বিনিয়োগ পারলে বন্ধ করে দেয়। অনেক ব্যাংকই নতুন বিনিয়োগে না গিয়ে সরকারের ট্রেজারি বিল ও বন্ডে বিনিয়োগের মধ্যে সীমাবদ্ধ করে ফেলে। পাশাপাশি গত এপ্রিল থেকে ঋণের সর্বোচ্চ সুদহার বেঁধে দেয়া হয়। বলা হয় ব্যাংকগুলো ৯ শতাংশের বেশি সুদে ঋণ বিতরণ করতে পারবে না। এক দিকে ঋণ আদায় কমে যাওয়া, অপর দিকে ঋণের সর্বোচ্চ সুদহার বেঁধে দেয়ায় ব্যাংকগুলো আমানতের সুদহার তলানিতে নামিয়ে আনে। সবমিলেই নতুন বিনিয়োগ যেমন কমে যায়, তেমনিভাবে খেলাপি ঋণের পরিমাণও কমে যায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান মতে, গত সেপ্টেম্বরে ব্যাংকিং খাতে মোট ঋণ ছিল ১০ লাখ ৬৩ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা। এর বিপরীতে খেলাপি ঋণ হয় ৯৪ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা। যা মোট ঋণের ৮ দশমিক ৮৮ শতাংশ। যদিও জুনে খেলাপি ঋণ ছিল ৯৬ হাজার ১১৭ কোটি টাকা। যা মোট ঋণের ৯ দশমিক ১৬ শতাংশ। এ কারণে আগামী ডিসেম্বরে খেলাপি ঋণ আরো কমে যাবে বলে তারা মনে করেন।


আরো সংবাদ



premium cement
‘মুক্ত সাংবাদিকতা চরম সঙ্কটে’ ‘রাফা হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরাইলি সেনারা’ ৪৬তম বিএসএস প্রিলি পরীক্ষা : শুরুতেই স্বপ্নভঙ্গ ৮১ শিক্ষার্থীর মরুর উষ্ণতায় ক্ষতির মুখে কৃষি ছেলেদের কারণে বিপাকে মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির দুই বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে ফ্রান্স, ব্রাজিল ও প্যারাগুয়ে সফরে যাচ্ছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ড সফরকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে মাইলফলক বললেন প্রধানমন্ত্রী লালমনিরহাটে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশী যুবক নিহত এখনো শেষ হয়নি বিতর্কিত আউটের রেশ, ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ মুশফিকের ‘ফ্রি ভিসার গল্প’ আর শূন্য হাতে ফেরা লাখো শ্রমিক

সকল