২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ঋণ বিতরণে অনীহায় ১৮ ব্যাংককে শোকজ

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তদারকি জোরদার; সাপ্তাহিক ভিত্তিতে তথ্য পাঠানোর নির্দেশ
-

শিল্প ও সেবা খাতে ঋণ বিতরণে অনীহায় ১৮ ব্যাংককে শোকজ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। একই সাথে এসব ব্যাংকের বিপরীতে বরাদ্দ থাকা প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণ অন্য ব্যাংকের পক্ষে বরাদ্দ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি কুটির ও এসএমই শিল্পে কাক্সিক্ষত হারে ঋণ বিতরণ না করারও অভিযোগ উঠেছে কয়েকটি ব্যাংকের বিরুদ্ধে। এ জন্য ব্যাংকগুলোর ঋণ অনুমোদন ও বিতরণের সার্বিক অবস্থা তদারকি জোরদার করা হয়েছে। এর অংশ হিসেবে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের ঋণ বিতরণের হালনাগাদ তথ্য প্রতি সপ্তাহেই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আগে ১৫ দিন পর পাঠানোর নির্দেশনা ছিল। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
ব্যবসায়ী উদ্যোক্তারা অভিযোগ করেছেন, তারা চলতি মূলধনের অভাবে ব্যবসা নতুনভাবে চালু করতে পারছেন না। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে এমনিতেই ব্যবসাবাণিজ্য স্থবির হয়ে গেছে। অনেকেরই মূলধন আটকে গেছে। ফলে চলতি মূলধনের অভাবে তারা ব্যবসাবাণিজ্যে গতি আনতে পারছেন না। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর থেকে কাগজপত্র পরীক্ষার নামে কালক্ষেপণ করা হচ্ছে। কেউ কেউ এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকেও অভিযোগ করছেন। নির্ধারিত সময়ে ঋণ বিতরণ করতে না পারায় বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ফজলে কবির এর আগে ১৫টি ব্যাংক ও চারটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এমডির সাথে বৈঠক করেন। বৈঠকে ঋণ বিতরণের ধীরগতির কারণ জানতে চাওয়া হয়। বৈঠকে গভর্নর ব্যাংকগুলোকে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ঋণ বিতরণে কড়া নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, অর্থনীতিতে গতি ফেরাতে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের মধ্যে যে করেই হোক ঋণ বিতরণ করতে হবে। তিনি এ জন্য সর্বোচ্চ আরো এক মাসের সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত দেন। অর্থাৎ আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যেই করোনার প্যাকেজের সমুদয় অর্থ অর্থাৎ ২০ হাজার কোটি টাকাই বিতরণ করতে হবে। যেসব ব্যাংক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঋণ বিতরণে ব্যর্থ হবে ওই সব ব্যাংককে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে দেয়া নানা সুযোগ-সুবিধা কমিয়ে দেয়া হবে। অর্থাৎ ব্যর্থ ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
ব্যাংকাররা জানান, চলমান পরিস্থিতিতে ব্যাংকগুলো নতুন ঋণ বিতরণে কালক্ষেপণ করছে এটা যেমন ঠিক, তেমনি প্রকৃত ব্যবসায়ীরাও এ মুহূর্তে নতুন করে ঋণ নিতে চাচ্ছেন না। তবে কিছু কিছু ব্যবসায়ী প্রকৃতপক্ষেই খারাপ অবস্থানে রয়েছেন। কিন্তু প্রয়োজনীয় জামানত দিতে না পারায় তাদেরকে নতুন করে ঋণ দেয়া যাচ্ছে না। আবার অনেকেই ঋণখেলাপি। তারা আবার নতুন করে ঋণ চাচ্ছেন; কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী, ঋণখেলাপিদের নতুন করে ঋণ বিতরণ করা যাবে না। আবার চলমান পরিস্থিতিতে ঋণ বিতরণ করে ঋণ আদায় করারও কষ্টকর হবে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ঝুঁকি রয়েছে। এ কারণে ব্যাংকগুলো এই মুহূর্তে ব্যাপক ভিত্তিতে ঋণ বিতরণ করতে চাচ্ছে না। এরই প্রভাব পড়েছে প্রণোদনা প্যাকেজে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে, অক্টোবরের মধ্যেই ঋণ বিতরণ করতে হবে ব্যাংকগুলোকে। ইতোমধ্যে শিল্প ও সেবা খাতে ঋণ বিতরণের অনীহার কারণে ১৮টি ব্যাংককে শোকজ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ১৮টি ব্যাংক কোনো ঋণ বিতরণ করেনি, বরং ঋণ বিতরণের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাথে যোগাযোগও করেনি। এ কারণে গত ১৭ সেপ্টেম্বর ব্যাংকগুলোকে শোকজ করা হয়। তিন দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়। জবাব সন্তোষজনক না হলে ব্যাংকগুলোর নামে বরাদ্দ থাকা ঋণ অন্য ব্যাংকে বরাদ্দ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ব্যাংকভেদে কুটির ও এসএমই খাতে ২০ হাাজর কোটি টাকার ঋণ বিতরণের জন্য লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। যেসব ব্যাংকের আর্থিক ভিত্তি দুর্বল ওই সব ব্যাংকের এক বছরে ৫০ কোটি টাকার কম ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়েছিল। আর যেসব ব্যাংকের আর্থিক ভিত্তি একটু ভালো ওই সব ব্যাংককে ৫০ কোটি টাকার বেশি; কিন্তু ৩০০ কোটি টাকার কম ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়েছিল। অপর দিকে, যেসব ব্যাংকের আর্থিক ভিত্তি মোটামুটি ভালো ওই সব ব্যাংককে ৩০০ কোটি টাকার অধিক ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়েছিল। প্রায় একই হারে শিল্প ও সেবা খাতে ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেয়া হয়েছিল।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে আর্থিক অবস্থা ভালো এমন ব্যাংকের সংখ্যা ২৩টি। আর দুর্বলের চেয়ে কিছুটা ভালো এমন ব্যাংকের সংখ্যা ১৫টি। বাকি ব্যাংকগুলোর আর্থিক ভিত্তি অনেকটাই দুর্বল।
এ দিকে, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প খাতে ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক তদারকি ব্যবস্থা জোরদার করেছে। এরই অংশ হিসেবে গতকাল দ্বি-সাপ্তাহিকের পরিবর্তে প্রতি সপ্তাহেই ঋণ অনুমোদন ও বিতরণের তথ্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পাঠাতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে ব্যাংকগুলোকে। প্রথমে চলতি বছরের ১৩ এপ্রিলে বলা হয়েছিল, প্রতি এক মাস পর পর তথ্য পাঠাতে হবে। গত ২২ জুনে তা পরিবর্তন করে তথ্য পাঠানোর সময়সীমা দুই সপ্তাহে নামিয়ে আনা হয়। গতকাল তা এক সপ্তাহে নামিয়ে আনা হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement
বিতর্কিত ক্যাচের ছবির ক্যাপশনে মুশফিক লিখেছেন ‘মাশা আল্লাহ’ উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ায় ৭৩ জনকে বহিষ্কার করলো বিএনপি মিরসরাইয়ে অবৈধ সেগুনকাঠসহ কাভার্ডভ্যান জব্দ মানিকগঞ্জে আগুনে পুড়ে যাওয়া মলিরানীর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে বিশ্বরেকর্ড ইন্দোনেশিয়ার নারী ক্রিকেটার রোহমালিয়ার ‘এখন আমি কী নিয়ে বাঁচব’ যদি বন্ধু হও, সীমান্তে অহরহ গুলি কেন : ভারতকে ফারুক সাহারা মরুভূমির গরমের মতো অনুভূত হচ্ছে : সরকারকে দায়ী করে রিজভী মধুখালীর পঞ্চপল্লীতে ২ ভাইকে হত্যার প্রতিবাদে সমাবেশ শ্রীলঙ্কাভিত্তিক এয়ারলাইন্স ফিটসএয়ারের ঢাকা-কলম্বো সরাসরি ফ্লাইট চালু রোহিঙ্গা ইস্যুতে একসাথে কাজ করবে ঢাকা-ব্যাংকক : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

সকল