১৮ মে ২০২৪, ০৪ জৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৯ জিলকদ ১৪৪৫
`


বাল্যবিবাহ ঠেকানোয় বিষপানে তরুণীর আত্মহত্যা

বাল্যবিবাহ ঠেকানোয় বিষপানে তরুণীর আত্মহত্যা - প্রতীকী

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় বাল্যবিবাহ ভেঙে যাওয়ার পর সুইটি খাতুন (১৬) নামে এক তরুণী বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এর আগে, বিয়ের দিন ভ্রাম্যমাণ আদালত তার বাবাকে আট হাজার টাকা জরিমানা করে এবং বিয়ে বাড়ির বরযাত্রীর খাবার এতিমখানায় বিতরণ করা হয়।

শনিবার (৪ মে) দুপুর সাড়ে ১২টায় ওই তরুণী আত্মহত্যা করেন। আর বৃহস্পতিবার দুপুরে বাল্যবিবাহের অপরাধে বন্ধ হয় তার বিয়ে।

পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরে মৃত ঘোষণা করেন।

সুইটি খাতুন উপজেলার হাউলী ইউনিয়নের ডুগডুগী গ্রামের আমির হোসেনের মেয়ে।

স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সুইটি খাতুনের সাথে একই উপজেলার লোকনাথপুর গ্রামের মোচ্ছাদেকের ছেলে সমিরের সাথে বৃহস্পতিবার বিবাহ ঠিক হয়। কিন্ত বাল্যবিবাহের খবর পেয়ে দামুড়হুদা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সজল কুমার দাশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিয়ে বন্ধ করেন এবং মেয়ের বয়স না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দেয়া যাবে না মর্মে আমির হোসেনের থেকে মুচলিকা নেন।

এদিকে ছেলে ও মেয়ের মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক থাকায় উভয় পরিবারের অভিভাবক গোপনে বিয়ে দেয়ার প্রস্তুতি নিলে তাও বন্ধ হয়ে যায় বলে জানা গেছে।

আমির হোসেন বলেন, ‘বৃহস্পতিবার সমিরের সাথে আমার মেয়ের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাল্যবিবাহের অপরাধে আমার আট হাজার টাকা জরিমানা হয়। পরে সিদ্ধান্ত নিলাম, জরিমানা যখন হয়েছে তখন আমি আর মেয়ে বিয়ে দেবো না। কিন্তু ছেলেপক্ষ আমাদের সাথে যোগাযোগ করে এবং তারা বলে যেভাবেই হোক এই বিয়ে হবে। তারপর শনিবার চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় আমার মেজো মেয়ের বাড়ি বিয়ের আয়োজন করা হয়। অতিথিদের জন্য রান্নাবান্নার আয়োজনও সম্পূর্ণ করা হয়। কিন্তু বিয়ের ঠিক পূর্ব মুহূর্তে ছেলে এবং ছেলেপক্ষ বলে বিয়ে করবে না।’

এ বিষয়ে সমির বলেন, ‘আমি বিয়ে করতে রাজি ছিলাম পরে মেয়ের বয়স কম হওয়ায় ওই দিন বিয়ে ভেঙে যায়। পরে মেয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে আমাকে বিয়ের জন্য চাপাচাপি করে। তখন আমি বলি যে আমার বাবা গরু ব্যবসায়ী, তিনি বাহিরে আছেন। আমার বাবা এলে তখন বিয়ে নিয়ে আলোচনা করা হবে। কিন্তু এর মধ্যে মেয়েটি বিষ পান করে আত্মহত্যা করেছে বলে শুনেছি।’

সমিরের বাবা মোসাদ্দেক বলেন, ‘বিয়েতে আমাদের কোনো আপত্তি ছিল না। কিন্তু মেয়ে অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় বৃহস্পতিবার বিয়ের দিন ভ্রাম্যমাণ আদালত বিয়ে বন্ধ করে দেয়। এরই মধ্যে মেয়েটি বিষপানে আত্মহত্যা করল।’

দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আলমগীর কবির বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, একটি মেয়ে বিষপান করে আত্মহত্যা করেছে মর্মে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ চুয়াডাঙ্গা মর্গে আছে। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল