উত্তরপ্রদেশে মোদি-শাহকে যেভাবে টেক্কা দিলেন অখিলেশ যাদব
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০৬ জুন ২০২৪, ১২:৫৮
গত ১ জুন ভারতের লোকসভা ভোটের শেষ পর্বের পর সে দিনই সন্ধ্যায় যখন বুথফেরত সমীক্ষা এলো, তখন মনে হচ্ছিল উত্তরপ্রদেশে লড়াইটা একতরফা হয়েছে।
কিন্তু পরে দেখা গেল, আসল পরিস্থিতি এমনটাই ছিল যে অযোধ্যায় যেখানে বিজেপি রাম মন্দির নিয়ে এত প্রচার চালিয়েছিল, ঠিক সেখানেই বিজেপির তিনবারের সংসদ লাল্লু সিংকে ভোটে হারিয়ে দিলেন সমাজবাদী পার্টির অবধেশ প্রসাদ। দু’জনের মধ্যে ভোটের ব্যবধান ছিল প্রায় ৫৫ হাজার।
অবধেশ প্রসাদ একজন দলিত। তাকে ফৈজাবাদের সাধারণ আসন (যেটি দলিত বা তফসিলিদের জন্য সংরক্ষিত নয়) থেকে টিকিট দিয়েছিলেন সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব।
এদিকে সমস্ত বুথফেরত জরিপেই বলা হয়েছিল, উত্তরপ্রদেশ থেকে লোকসভা ভোটে বিজেপি প্রায় ৭০টি আসন পাবে। কিন্তু মঙ্গলবার যখন ভোট গণনা শুরু হয়, তখন একটা সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র দেখা গেল উত্তরপ্রদেশে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যখন ৪০০ আসন পেরিয়ে যাওয়ার স্লোগান দিয়েছিলেন, ওই সময় বিজেপি চেয়েছিল উত্তরপ্রদেশ থেকে সর্বাধিক আসন জিততে। কিন্তু তা হয়নি।
উত্তরপ্রদেশে বিজেপির চেয়ে পাল্লা ভারী দেখা গেল তাদের বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ জোটের। বিজেপি সেখানে পেয়েছে মাত্র ৩৩টি আসন, আর ইন্ডিয়া জোটের ঝুলিতে গেছে ৪৩টি আসন।
রাষ্ট্রীয় লোক দল (আরএলডি) দু’টি আসন জিতেছে। আরএলডি আবার বিজেপির নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সের (এনডিএ) অংশ।
এর অর্থ হলো এনডিএ উত্তরপ্রদেশে পেয়েছে মোট ৩৫টি আসন।
৫৪৩টি আসনের লোকসভায় নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য তাদের (বিজেপির) প্রয়োজন ছিল ২৭২টি আসন, কিন্তু এবার তা কমে দাঁড়িয়েছে ২৪০টিতে। গত লোকসভায় বিজেপি পেয়েছিল ৩০৩টি আসন।
এবার উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টি ৬২টি আসনে এবং কংগ্রেস ১৭টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল। ৬২টি আসনের মধ্যে ৩৭টি আসনে জিতেছে সমাজবাদী পার্টি। আর কংগ্রেস ১৭টি আসনের মধ্যে ছয়টিতে জিতেছে।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশে বিজেপি পেয়েছিল ৬২টি আসন। বহুজন সমাজ পার্টি ১০টি, সমাজবাদী পার্টি পাঁচটি, আপনা দল (সোনেলাল) দু’টি এবং কংগ্রেস একটি আসন জিতেছিল।
কিন্তু উত্তরপ্রদেশে এইবার ২০১৯ সালের পুনরাবৃত্তি ঘটাতে পারেনি বিজেপি।
আমেঠিতে প্রায় এক লাখ ৬৭ হাজার ভোটে হেরে গেছেন স্মৃতি ইরানি। গান্ধী-নেহরু পরিবারের অনুগত কিশোরী লাল শর্মার সামনে ভোটের ময়দানে টিকতে পারেননি স্মৃতি ইরানি।
নরেন্দ্র মোদির জন্য ধাক্কা
২০১৯ সালে স্মৃতি ইরানিকে আমেঠিতে প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী ময়দানে নামিয়েছিল বিজেপি। তিনি প্রতিদ্বন্দ্বী রাহুল গান্ধীকে ভোটে পরাজিত করেন। ওই সময় এর মাধ্যমে একটা বার্তা দেয়া হয়েছিল যে নেহরু-গান্ধী পরিবারের উত্তরাধিকারী (রাহুল গান্ধী) তার শক্ত ঘাঁটিতে হেরেছেন একজন সাধারণ বিজেপি নেতার কাছে।
২০২৪-এর নির্বাচনে রাহুল গান্ধী অবশ্য স্মৃতি ইরানির বিরুদ্ধে লড়েননি। প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য প্রার্থী হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন দলের একজন সাধারণ কর্মীকে, যিনি এই লড়াইটা জিতেছেন।
এবার আসা যাক নরেন্দ্র মোদির নির্বাচনী ফলাফলের প্রসঙ্গে।
গণনার সময় প্রাথমিক ট্রেন্ডে প্রধানমন্ত্রী মোদিও বারাণসীতে পিছিয়ে থাকলেও দ্রুত এগিয়ে যান। কিন্তু এইবার নরেন্দ্র মোদি শেষ পর্যন্ত জিতেছেন প্রায় দেড় লাখ ভোটের ব্যবধানে।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদি বারাণসী থেকে প্রায় ৪ লাখ ৮০ হাজার ভোটে জিতেছিলেন। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বারাণসীতে ৬৩ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন মোদি। এবার পেয়েছেন ৫৪ দশমিক ২৪ শতাংশ ভোট।
অন্যদিকে, ২০১৪ সালে বারাণসীতে মোট পাঁচ লাখ ৮১ হাজার ২২ ভোট পেয়েছিলেন তিনি, যা ওই আসনের মোট ভোটের ৫৬ শতাংশ। সেই বছর তার প্রতিদ্বন্দ্বী অরবিন্দ কেজরিওয়াল পেয়েছিলেন দুই লাখ নয় হাজার ২৩৮টা ভোট।
তুলনায় এবার প্রধানমন্ত্রী মোদির জয়ের ব্যবধান হয়েছে অর্ধেকেরও কম।
কোথায় বাধা পেল বিজেপি?
উত্তরপ্রদেশ এমন একটা রাজ্য যেখানে সরকার এবং বিরোধী দু’পক্ষের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বরা নির্বাচনের মাঠে নেমেছিলেন।
মোদি লড়েছেন বারাণসী থেকে আর রাহুল গান্ধী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন রায়বেরিলিতে। বিজেপির রাজনাথ সিং, সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব ছাড়াও তার স্ত্রী ডিম্পল যাদবও ভোটের লড়াই লড়েছেন।
এবার রায়যেরিলি আসনে চার লাখেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে জিতেছেন রাহুল গান্ধী।
উত্তরপ্রদেশে অর্থনৈতিক সঙ্কট, কৃষি ও কৃষকদের সমস্যার কথা, সংবিধানকে দুর্বল করার বিষয়গুলোকে নির্বাচনী ইস্যু করেছিল সমাজবাদী পার্টি ও কংগ্রেস। সংরক্ষণের বিষয়ও উত্থাপন করেছিল দু’টি দলই।
কংগ্রেস ও সমাজবাদী পার্টির অভিযোগ, সংরক্ষণের অবসান ঘটাতে চাইছে বিজেপি।
এর পাশাপাশি ভারতীয় সেনাবাহিনীতে নিয়োগের ক্ষেত্রে ‘অগ্নিবীর’ নামক প্রকল্প নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন রাহুল গান্ধী। অগ্নিবীর প্রকল্প নিয়ে যুবকদের মধ্যে যে ক্ষোভ রয়েছে তা বহুবার প্রতিফলিত হয়েছে রাস্তায়।
উত্তরপ্রদেশের প্রবীণ সাংবাদিক শরৎ প্রধান জানান, উত্তরপ্রদেশে বিজেপির ৩৩টি আসনে আটকে থাকাটা কেবল প্রধানমন্ত্রী মোদির জন্য একটা ধাক্কা নয়, মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের জন্যও খারাপ খবর।
যোগী আদিত্যনাথের ওপর এর কী প্রভাব পড়তে পারে?
এই প্রসঙ্গে উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনী ফল সম্পর্কে তার আগাম অনুমানের কথা উল্লেখ করেছেন এই প্রবীণ সাংবাদিক।
তার কথায়, ‘আমি ভেবেছিলাম উত্তরপ্রদেশে বিজেপি ৫০টি আসন পাবে, কিন্তু ৩৩টি আসনে তাদের গুটিয়ে যাওয়ার বিষয়টা প্রমাণ করে যে মানুষ প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং অমিত শাহের ঔদ্ধত্যকে প্রত্যাখ্যান করেছে। বিরোধী দলগুলো দলিত, পিছিয়ে পড়া জাতি এবং উদার গণতন্ত্রে বিশ্বাসী সাধারণ মানুষকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছিল যে মোদি আরো শক্তিশালী হলে সংবিধান সঙ্কটে পড়বে। সেই কারণেই দলিতরাও মায়াবতীর পরিবর্তে ভোট দিয়েছেন ইন্ডিয়া জোটকে। দলিতদের মাঝে এই বার্তা পৌঁছে গিয়েছিল, যে বিজেপি থাকলে সংরক্ষণ দুর্বল হয়ে যেতে পারে। এমনকি মায়াবতী যে জাতির অন্তর্ভুক্ত, তারাও ইন্ডিয়া জোটের পক্ষেই ভোট দিয়েছেন।’
পুরো ঘটনার প্রভাব বিশদে ব্যাখ্যা করে সাংবাদিক শরৎ প্রধান আরো বলেন, ‘উত্তরপ্রদেশে বিজেপির আসন সংখ্যা ৩৩-এ থমকে যাওয়ার প্রভাব কিন্তু যোগীর ওপরেও পড়বে। অমিত শাহ ও নরেন্দ্র মোদি চাইলে এই পরাজয়ের দায় যোগীর ঘাড়ে চাপিয়ে তাকে মুখ্যমন্ত্রীর আসন থেকে সরিয়ে দিতে পারেন। উত্তরপ্রদেশে যে শীর্ষে পৌঁছেছিলেন নরেন্দ্র মোদি, সেখান থেকে তার নেমে আসার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।’
শরৎ প্রধান বলেন, ‘যোগী ভাবতেন উত্তরপ্রদেশে তার চেয়ে বড় নেতা নেই এবং হিন্দুত্বের সামনে কেউ দাঁড়াতে পারবে না। কিন্তু নির্বাচনের ফলাফল এটাকেও ভুল প্রমাণ করেছে। ভারতের মানুষ একনায়কতন্ত্র পছন্দ করে না। স্মৃতি ইরানির হেরে যাওয়া তো সরাসরি মোদিরই পরাজয়। মোদির কৌশলেই স্মৃতি ইরানিকে হারিয়েছেন রাহুল গান্ধী। রাহুলের এই কৌশলটা ভালো ছিল, স্মৃতিকে হারাব কিন্তু এক ছোট দলীয় কর্মীকে দিয়ে।’
উত্তরপ্রদেশে কেন ধাক্কা খেল বিজেপি?
এই প্রসঙ্গে আরো একটি বিষয় ব্যাখ্যা করেন শরৎ প্রধান। তিনি বলেন, ‘এবারের নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশ থেকে দু’টি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা প্রকাশ্যে এসেছে। প্রথম বার্তাটা মায়াবতীর জন্য এবং সেটা হলো দলিতরা তার (মায়াবতীর) বন্ডেড লেবার নন। দ্বিতীয় বার্তা মোদির জন্য যে তিনি হিন্দু ও মুসলিমদের মেরুকরণ করে প্রতিবার নির্বাচনে জিততে পারবেন না। মায়াবতী পুরোপুরি বিজেপির পক্ষে ছিলেন এবং যখন তিনি তার ভাইপোকে (আকাশ আনন্দ) সরিয়ে দেন, সে সময়েও (এই পদক্ষেপ) আরো ভুল বার্তা পাঠিয়েছিল। আর ফলাফল তো সবার সামনেই রয়েছে।’
রিতা বহুগুণা জোশী এলাহাবাদের বিজেপি সাংসদ এবং যোগী আদিত্যনাথের প্রথম মেয়াদে মন্ত্রীও ছিলেন।
বিজেপি এবার তাকে টিকিট দেয়নি। তার জায়গায় বিজেপি নেতা কেশরিনাথ ত্রিপাঠীর ছেলে নীরজ ত্রিপাঠীকে প্রার্থী করা হয়েছিল। তিনিও হেরে গিয়েছেন।
রিতা বহুগুণা জোশীকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, কেন এবার উত্তরপ্রদেশে বিজেপির আসন সংখ্যা ৩৩-এ নেমে এসেছে?
এর উত্তরে তিনি বলেন, ‘সরকার তো আমরাই গঠন করব, কিন্তু স্পষ্টতই ২০১৪ বা ২০১৯ সালের মতো জয় হয়নি। আমরা ইউপিতে কাজ করেছি, কিন্তু কর্মসংস্থানের প্রশ্ন আমাদের সামনে ছিল। অযোধ্যাতেও নির্বাচনে আমরা হেরেছি। এ বার কেন এমন হলো, সেটা আমাদের ভাবতে হবে।’
রিতা বহুগুণা জোশীকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল উত্তরপ্রদেশে নির্বাচনী ফলাফলের প্রভাব সেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের ওপরে পড়বে কিনা?
এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে, আমার মনে হয় না কোনো রকম প্রভাব পড়বে।’
অখিলেশ যাদবের রণকৌশল
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকেই এবারের নির্বাচনে সমাজবাদী পার্টির রণকৌশলের প্রশংসা করছেন। ভোটে টিকিট দেয়ার ক্ষেত্রে যাদব জাতির নন, এমন প্রার্থীদের ওপর বিশেষ নজর দিয়েছিলেন অখিলেশ যাদব।
মুসলিম এবং যাদবদের সমাজবাদী পার্টির ভোটব্যাংক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু অখিলেশ যাদব ৬২ জনের মধ্যে মাত্র পাঁচজন যাদবকে প্রার্থী করেছিলেন, যাদের সকলেই তার পরিবারেরই সদস্য।
২০১৯ সালে বহুজন সমাজ পার্টি এবং জয়ন্ত চৌধুরীর রাষ্ট্রীয় লোক দলের সাথে জোট বেঁধেছিল সমাজবাদী পার্টি।
সমাজবাদী পার্টি ওই সময়ে ৩৭টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল এবং ১০ জন যাদব প্রার্থীকে ভোটে দাঁড় করিয়েছিল।
২০১৪ সালে সমাজবাদী পার্টি উত্তরপ্রদেশে ৭৮টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল। তার মধ্যে ছিলেন ১২ জন যাদব প্রার্থী। এদের মধ্যে চারজন ছিলেন মুলায়ম সিং যাদব পরিবার সদস্য।
এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক পঙ্কজ কুমারও ভোটের প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে অখিলেশ যাদবের প্রশংসা করেছেন।
অধ্যাপক পঙ্কজ কুমার বলেন, ‘ভোটে টিকিট দেয়ার বিষয়ে সমাজবাদী পার্টি খুব ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অযোধ্যায় একজন দলিতকে টিকিট দেয়া খুব বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্ত ছিল। অবধেশ প্রসাদ একজন প্রবীণ সৈন্য। বালিয়ায় সনাতন পাণ্ডেকে টিকিট দেয়াটাও বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্ত।’
তিনি বলেন, ‘অখিলেশ যাদব পিডিএ-এর (পিছড়ে, দলিত ও অল্পসংখ্যক) কথা বলছিলেন, যেখানে সমস্ত জাতের কথা অন্তর্ভুক্ত ছিল। অন্যদিকে বিজেপি বেশি করে মুসলিম-মুসলিম করেছে।’
এই প্রসঙ্গে বিজেপির তরফে তাদের দলের প্রার্থীদের ভোটে টিকিট দেয়ার সিদ্ধান্তেরও সমালোচনা করেছেন অধ্যাপক কুমার।
তিনি বলেন, ‘বিজেপি খুব খারাপভাবে টিকিট বিতরণ করেছে। আমার মনে হয় না টিকিট দেয়ার বিষয়ে যোগীকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। কৌশাম্বিতে রাজা ভাইয়া বলেছিলেন যে তার লোককে টিকিট দিতে হবে। কিন্তু অমিত শাহ রাজি হননি।’
তিনি আরো বলেন, ‘এলাহাবাদে টিকিট দেয়া হয়েছিল নীরজ ত্রিপাঠীকে এবং তিনি হেরে গিয়েছেন। দিল্লিতে বসে টিকিট দিয়েছেন অমিত শাহ।’
এখন প্রশ্ন হলো যোগীর রাজনীতিতে উত্তরপ্রদেশে বিজেপির এই ফলাফলের কী প্রভাব পড়বে?
অধ্যাপক পঙ্কজ কুমার বলেন, ‘যোগীর নির্দেশে টিকিট দেয়া হয়নি, তবে তাকে দোষ দেয়া যেতে পারে। সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়াটা যোগীর ঘাটতি। রাজনৈতিক কর্মীদের সাথে তার কোনো যোগাযোগ নেই।’
অধ্যাপক পঙ্কজ বলেন, ‘যোগী গুজরাট মডেলে সরকার চালাতে চান। আমলার জোরে সরকার চালাচ্ছেন তিনি। তিনি জনগণ ও দলীয় কর্মীদের চেয়ে পুলিশকে বেশি বিশ্বাস করেন। আমার মনে হয়, আরএসএস-ও এই নির্বাচনে সরে দাঁড়িয়েছিল। আরএসএসও অনুভব করতে শুরু করেছিল যে মোদি একটু বেশিই শক্তিশালী হয়ে উঠছেন এবং এটা সঙ্ঘের সংঘের পক্ষে ভালো নয়।’
অধ্যাপক পঙ্কজ মনে করেন, এবারের নির্বাচনে মায়াবতী পুরোপুরি কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন এবং ফিরে আসাটা তার পক্ষে এখন কঠিন।
তিনি বলেন, ‘মায়াবতীর জায়গা নিতে পারেন চন্দ্রশেখর। নাগিনা থেকে তার জয়ও এটাই প্রমাণ করে।’
উত্তরপ্রদেশে বিজেপির খারাপ ফলাফল নরেন্দ্র মোদির তৃতীয় মেয়াদের জন্য অনেক প্রস্তুতিকেই নষ্ট করতে পারে। উত্তর ভারতে যখন আঞ্চলিক দলগুলো সঙ্কুচিত হচ্ছিল, ঠিক সেই সময়ে অখিলেশ যাদব একজন শক্তিশালী নেতা হিসেবে উঠে এসেছেন। আমেঠি ও রায়বরেলিতে কংগ্রেসও বেশ ভালো ফল করেছে।
নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহ কখনোই এটা চাননি, তা সত্ত্বেও এমনটা হয়েছে।
আপাতত নরেন্দ্র মোদির আগামী পাঁচ বছর চন্দ্রবাবু নাইডু এবং নীতিশ কুমারের মতো শরিকদের ওপর নির্ভর করছে। কিন্তু এই দুই নেতার সাথে বিজেপির অতীতের অভিজ্ঞতা ভালো নয়।
সূত্র : বিবিসি
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা