গ্রহে জীবনের উন্নতির আশা ক্ষীণ
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৩:৪৯
![](https://www.dailynayadiganta.com/resources/img/article/202309/777705_111.jpg)
আগামী সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কে বিশ্ব নেতাদের বৈঠকে ২০৩০ সালের মধ্যে মানবতার উন্নতির মূল লক্ষ্যগুলো পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করা হবে। ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও অন্য সঙ্কট অব্যাহত থাকায় পরিকল্পনাগুলোর লক্ষ্য অর্জনের আশা এখন ক্ষীণ এবং সন্দেহের মধ্যে রয়েছে।
২০১৫ সালে জাতিসঙ্ঘের সদস্য-রাষ্ট্রগুলো ২০৩০ সালের মধ্যে বাস্তবায়ন করার জন্য ১৭টি বিস্তৃত উন্নয়ন লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে দারিদ্র্য ও ক্ষুধা দূর করা, খাবার পানির সুবিধা প্রদান, সকলের জন্য লিঙ্গ সমতা এবং স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা।
জাতিসঙ্ঘের উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) প্রধান আচিম স্টেইনার সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘একবিংশ শতাব্দীতে অর্থনৈতিকভাবে উন্নতির জন্য আপনি আর প্রকৃতির ওপর বা পিছিয়ে থাকা লোকদের ওপর নির্ভর করার চেষ্টা করতে পারবেন না।’
জাতিসঙ্ঘের মতে, ২০৩০ সালের অ্যাজেন্ডা সমস্যায় পড়েছে।
জুলাই মাসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জাতিসঙ্ঘ বলেছে, ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বিপদের মধ্যে রয়েছে।’
এই লক্ষ্যগুলো পূরণের জন্য সোমবার জাতিসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদে একত্রিত হওয়া সরকারগুলোকে খসড়া ঘোষণা অনুসারে ‘মানুষ, এই গ্রহ, সমৃদ্ধি, শান্তি এবং অংশীদারিত্বের জন্য কাউকে পিছিয়ে না রাখার প্রতিশ্রুতি পূরণে জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে।’
দারিদ্র্য এবং ক্ষুধা :
কিছু ক্ষেত্রে, পরিস্থিতি এখন ২০১৫ সালের তুলনায় আরো খারাপ। কোভিড-১৯ মহামারী চরম দারিদ্র্য (২.১৫ ডলারের এর কম আয়ে জীবনযাপন) মোকাবিলায় অগ্রগতি স্থগিত করেছে। দারিদ্র্য নির্মূলের প্রত্যাশিত লক্ষ্য থেকে বিশ্ব অনেক পিছিয়ে রয়েছে। বর্তমান হারে ৫৭৫ মিলিয়ন মানুষ ২০৩০ সালে এই ধরনের দারিদ্রের পরিস্থিতিতে বসবাস করবে। যাদের বেশিরভাগই সাব-সাহারান আফ্রিকায় এবং বিশ্বকে ২০০৫ সালের থেকে এমন ক্ষুধার মাত্রায় ফিরে আসতে দেখা যায়নি।
১.১ বিলিয়ন মানুষ শহরাঞ্চলে বস্তির মতো অবস্থায় বাস করে। দুই বিলিয়নেরও বেশি এখনো খাবার পানির সুবিধা পায় না। এক হাজার শিশুর মধ্যে ৩৮ জন তাদের পঞ্চম জন্মদিনের আগেই মারা যায় এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবগুলো ক্রমবর্ধমান ধ্বংসাত্মক।
ঋণের বোঝা
কোভিড-১৯ থেকে শুরু করে ইউক্রেনের যুদ্ধ পর্যন্ত বিভিন্ন সঙ্কটে বিশ্ব আজ পঙ্গু। অনেক দেশ তাদের ঋণের ভারে ভেঙে পড়েছে এবং পথ পরিবর্তন করার উপায় নেই। স্টেইনার বলেন, ‘দেশগুলো এখনই যে উন্নয়ন চায় তা অনুসরণ করতে সক্ষম নয়, তবে তারা শুধুমাত্র প্রবৃদ্ধি ফিরে পেতে একটি পুনরুদ্ধারের পথ বেছে নিতে পারে।’
যদিও এটি একটি ঝুঁকিপূর্ণ পথ।
তিনি বলেন, ‘এই বৃদ্ধি আমাদের জীবাশ্ম জ্বালানি নির্ভরতা এবং বৃহত্তর অসমতার দিকে নিয়ে যায়। অবিকল যে জিনিসগুলো আমাদের রাস্তায় অনেক উত্তেজনা, বিক্ষোভের দিকে পরিচালিত করেছে।’
এ কারণে সোমবার যে খসড়া ঘোষণার বিষয়ে আলোচনা করা হবে তাতে আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কারের কথা বলা হয়েছে। যার ওপর জাতিসঙ্ঘের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।
জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য পূরণের জন্য ২০৩০ সালের মধ্যে প্রতিবছর অতিরিক্ত ৫০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন। সাম্প্রতিক জি-২০ সম্মেলনে তার পরিকল্পনা সমর্থন পেয়েছে।
দারিদ্র্য থেকে বেরিয়ে আসা, শিক্ষা, খাবার পানি বা ক্লিন এনার্জির সুবিধা, সুস্বাস্থ্য এবং শান্তিতে বসবাস- এ সমস্ত উন্নয়ন লক্ষ্যগুলো মূলত পরস্পর নির্ভরশীল।
স্টেইনার বলেন, গ্লোবাল ওয়ার্মিং এবং বৈরী আবহাওয়ার ঘটনাগুলো বেশিরভাগ উন্নয়ন লক্ষ্যগুলোকে ক্ষুণ্ন করে। কারণ, তারা ফসল, অবকাঠামো এবং জীবিকার ব্যবস্থা ধ্বংস করে। এর জন্য পরিবর্তন অবশ্যই ব্যাপক হতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা এক ডলার ব্যবহার করতে পারি, সুবিধা এক ডলারের বেশি পেতে চাই। আপনি যদি দারিদ্র্যকে মোকাবেলা করতে চান তাহলে বিদ্যুৎ সুবিধাও নিশ্চিত করতে হবে, একটি অপরটির পরিপূরক। আপনি যদি বিদ্যুতের অ্যাক্সেসের দিকে নজর দেন এবং এটিকে ডিকার্বনাইজেশনের উদ্দেশের সাথে একত্রিত করেন তবে আপনি দারিদ্র্য হ্রাস উভয়ই অর্জন করতে পারেন এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা করতে পারেন।’
সূত্র : বাসস
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা