ফের হাসপাতালে ভর্তি খালেদা জিয়া
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০৯ জুলাই ২০২৪, ০০:০০
৬ দিনের মাথায় আবারো বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হার্টে পেসমেকার বসানোর পর গত ২ জুলাই তাকে বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
বেগম জিয়ার চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, গতকাল সোমবার ভোরে গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’য় ‘হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে মেডিক্যাল বোর্ডের নিবিড় তত্ত্বাবধানে কেবিনে রেখে তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
হাসপাতালে ভর্তি করার পর গতকাল দুপুরের পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, খালেদা জিয়ার জীবন হুমকির মুখে।
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানান, হৃদযন্ত্রের সমস্যার কারণে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন খালেদা জিয়া। সে কারণেই তাকে মেডিক্যাল বোর্ডের পরামর্শে দ্রুত হাসপাতালে আনা হয়েছে। আপাতত মডিক্যাল বোর্ডের নিবিড় তত্ত্বাবধানে তিনি কেবিনে আছেন। এভারকেয়ার হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের তত্ত্বাবধানে একটি মেডিক্যাল বোর্ড তার চিকিৎসা দিচ্ছেন।
সকালে দলীয় প্রধানের অসুস্থতার খবর ছড়িয়ে পড়লে নেতাকর্মীরা হাসপাতালের আশপাশে ভিড় করেন। তবে কেউ কাছে যেতে পারেনি। কারণ হাসপাতালর স্টাফ ছাড়া অন্য কাউকে তার পাশে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হচ্ছে না। এরই মধ্যে দুপুরে বিএনপি নেত্রীকে দেখতে যান দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এরপর ১২টার দিকে যান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তারা হাসপাতালে গিয়ে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের খোঁজ নেন।
হাসপাতালে বিএনপি চেয়ারপারসনকে দেখে আসার পর গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের কাছে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ভোরের দিকে হঠাৎ করে উনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। ম্যাডামকে চব্বিশ ঘণ্টা মনিটর করছেন চিকিৎসকরা। উনার অসুস্থতার বিষয়ে বারবার জাতির কাছে তুলে ধরেছি। কিন্তু সরকার কোনো কেয়ার করেনি। উনার জীবন হুমকির মুখে। এটা এরা (সরকার) ইনটেনশনালি করছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, দেশনেত্রীকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। এখন এটা জাতীয় দাবিতে পরিণত হয়েছে। তার প্রতি যে অন্যায় করা হচ্ছে, চরম অন্যায় এটা উদ্দেশ্যে প্রণোদিতভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে করা হচ্ছে। এভাবে আটকে রেখে তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে হঠাৎ করে হাসপাতালে আসতে হচ্ছে। কয়েক দিন আগেও তাকে হাসপাতালে আসতে হয়েছে। ক্রমাগত অত্যন্ত জটিল অসুখগুলো তাকে আক্রমণ করেছে। সে ক্ষেত্রে বারবার বলা হচ্ছে, তার চিকিৎসাটা দরকার বিদেশে মাল্টি ডিসেপ্ল্যানারি চিকিৎসা কেন্দ্রে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হচ্ছে সরকার প্রতিহিংসার কারণে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিচ্ছে না।
মির্জা ফখরুল বলেন, দেশনেত্রীর নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আন্দোলন চলছে এবং চলবে। ভবিষ্যতে আরো আন্দোলন হবে। বিএনপি শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বিশ্বাস করে। কখনোই অগণতান্ত্রিক পথে কোনো কিছু আমরা করতে চাই না। সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে, এটাতে সাড়া দিয়ে তার মুক্তির ব্যবস্থা করা।
প্রসঙ্গত, ৭৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী হৃদরোগ, ফুসফুস, লিভার, কিডনি, আর্থরাইটিস, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন।
গত ২২ জুন গভীর রাতে গুলশানের বাসায় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে অ্যাম্বুলেন্সে করে বেগম খালেদা জিয়াকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) ভর্তি করা হয়। পরদিনই তার হৃদপিণ্ডে পেসমেকার বসানো হয়। দুই দিন সিসিইউতে থাকার পর মেডিক্যাল বোর্ড সিসিইউর সকল সুবিধা নিয়ে কেবিনে তাকে কয়েক দিন রাখেন। এরপর গত ২ জুলাই এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে গুলশানের বাসা ফিরোজায় ফেরেন বিএনপি চেয়ারপারসন। ছয় দিন বাসায় থাকার পর আবারো তাকে হাসপাতালে নেয়া হলো। এর আগে গত বছরের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনজন লিভার বিশেষজ্ঞ এনে তার লিভারে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা