ডলারের লোভে ৭৮ লাখ টাকা খুইয়েছেন রতে্নশ্বর
- বরিশাল ব্যুরো
- ০৮ জুলাই ২০২৪, ০১:০৮
মূল্যবান মনিরত্ন ও ডলার ভর্তি লাগেজের লোভে প্রায় ৭৮ লাখ টাকা খুইয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছেন বরিশালের বেসরকারি অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবী রতেœশ্বর মাঝি (৬৫)। এ ঘটনায় সোহাগ শেখ (২৪) নামে এক ব্যক্তিকে গত শনিবার রাতে ঢাকার মতিঝিল থেকে গ্রেফতার করেছে বরিশাল নগর পুলিশ। এ সময় ৩৫টি ব্যাংকের ৮৬টি এটিএম কার্ড, বিভিন্ন ব্যাংকের ১৫১টি চেকের পাতা, অ্যানড্রয়েডসহ চারটি মোবাইল সেট ও ৮টি সিমকার্ড উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানান উপকমিশনার (দক্ষিণ) আলী আশরাফ ভূঞা।
গ্রেফতার সোহাগ শেখ (২৪) শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের পাঁচগাঁও গ্রামের জব্বার শেখের ছেলে। ভুক্তভোগী রতেœশ্বর বরিশাল নগরীর বাসিন্দা।
উপকমিশনার বলেন, ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর রতেœশ্বরের মোবাইল নম্বরে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের সিভিল এভিয়েশন কাস্টমস অফিসার পরিচয়ে খায়রুন নেছা নামে এক নারী ফোন দেয়। তিনি বলেন, ‘এলিজাবেদ এরিস’ নামের একজন একটি লাগেজ পাঠিয়েছেন। যার মধ্যে বিপুল পরিমাণে মনিরতœসহ ডলার আছে। এরপর লোভে পরে ২৩ দিনে বিভিন্ন ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে ও বিভিন্ন বিকাশ নম্বরে সর্বমোট ৭৭ লাখ ৯০ হাজার টাকা পাঠান রতেœশ্বর। কাস্টমস থেকে মূল্যবান জিনিস ছাড়ানোর জন্য পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন পরিমাণের টাকা নেয়া হয়েছে। পরে প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে ২০২৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী। এ চক্রের অন্য সদস্যের গ্রেফতারে কাজ করছে পুলিশ। গ্রেফতার সোহাগের বিরুদ্ধে ঢাকার খিলগাঁও থানাসহ বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
উপকমিশনার আলী আশরাফ জানান, গ্রেফতার সোহাগ শেখ প্রতারক চক্রের প্রথম স্তরের প্রথম ম্যান। এখানে কমপক্ষে আরো চার থেকে পাঁচটি ধাপে ১০-১২ বা তারও বেশি সদস্য রয়েছে। এর মধ্যে বিদেশেও একটি স্তর থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। যারা প্রতিটি স্তরে প্রতারণা আশ্রয় নিয়ে মানুষের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
উপকমিশনার বলেন, তারা মূলত বিদেশী নাগরিকের নামে থাকা ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে টার্গেট ব্যক্তির সাথে বন্ধুত্ব করে। যেখানে ওই ফেসবুক আইডির ব্যক্তি নিজেকে সেনাবাহিনী, পুলিশ কিংবা অন্য কোন বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সদস্য হিসেবে দাবি করে। ব্যবসা করার জন্য দেশে আসতে চান। আর তখন বিদেশ থেকে বাংলাদেশের ব্যক্তিকে কিছু গিফট পাঠানোর নামে প্রতারণার মূল নাটক শুরু হয়। গিফট পাঠিয়ে টার্গেট ব্যক্তির মেইল বা অন্য মাধ্যমে কিছু কাগজ পাঠানো হয়। যা পরবর্তীতে বাংলাদেশের কাস্টমস কর্মকর্তার পরিচয় দেয়া ব্যক্তির পাঠানো কাগজের সাথে মিলে যায়। আর এর মাধ্যমেই প্রথম বিশ্বাসটা অর্জনের চেষ্টা করে প্রতারকরা।
উপকমিশনার আলী আশরাফ আরো বলেন, এখানে দেশের বাইরেও চক্রের সদস্য থাকতে পারে। তবে তারা এত চালাক যে টাকা পাঠানোর কয়েক মিনিটের মাথায় বিকাশ ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে তা উঠিয়ে ফেলে। আর গ্রেফতার সোহাগের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া এটিএম কার্ডগুলো উত্তোলনের ক্ষেত্রে ব্যাংকে যে জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়া হয়েছে তা চক্রের কারো নয়। এখানেও চক্রটি জালিয়াতি করেছে বলে জানান তিনি।.
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা