দুই হাজার টাকা চাঁদার মামলা থেকে ১৯ বছর পর খালাস
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০৮ জুলাই ২০২৪, ০১:০৪
২০০৫ সালের ২৮ আগস্ট রাজধানীর পল্লবীর রূপনগরে দুই হাজার টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে মামলায় সুজনকে দুই বছরের কারাদণ্ড ও দুই হাজার টাকা জরিমানা করেন আদালত। ১৯ বছর আগের দুই হাজার টাকা চাঁদা দাবির মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত সুজনকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি মো: আশরাফুল কামালের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ ২০২৩ সালের ৯ মার্চ এ রায় দেন। সম্প্রতি এ রায়টি প্রকাশ করা হয়েছে।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মো: আশেক মোমিন। আসামিপক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০০৫ সালের ৩০ মে রূপনগর আবাসিকে একটি চা দোকানে সুজন নামে এক ব্যক্তি দুই হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। অপর আসামি সায়েম তাকে এই চাঁদার জন্য পাঠিয়েছিলেন। টাকা না দিলে দোকান ভাঙচুর করার হুমকি দিয়ে চলে যান তিনি। পরে ১ জুন ফের চাঁদা দাবি করেন। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি টহল দল গণ্ডগোল শুনে বাদির দোকানে যায়। ঘটনা শুনে আসামি সুজনকে আটক করা হয়। পরে দোকানদার পল্লবী থানায় এজাহার করেন। এ মামলায় দুই আসামির বিরুদ্ধে ২০০৫ সালের ১২ জুন অভিযোগ গঠন করা হয়। তবে আসামিপক্ষের দাবি, বাদি ও আসামি পূর্ব পরিচিত। দোকান পরিচালনার জন্য সুজনের কাছ থেকে বাদি দুই হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন। সেই টাকা ফেরত চাইতে গেলে তর্ক বিতর্ক হয় এবং মিথ্যা মামলা করেন ওই দোকানি।
ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (দ্রুত বিচার আদালত-৪) এ মামলার বিচার শেষে ২০০৫ সালের ২৮ আগস্ট অভিযুক্তকে কারাদণ্ড দেন। রায়ে সায়েমকে খালাস দিয়ে সুজনকে দুই বছরের কারাদণ্ড এবং দুই হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
এ রায়ের বিরুদ্ধে ২০০৫ সালে আপিলের পর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত ২০০৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আপিল নামঞ্জুর করেন। এরপর হাইকোর্টে রিভিশন দায়ের করেন। শুনানি শেষে ২০২৩ সালের ৯ মার্চ রায় দেন হাইকোর্ট।
রায়ে রিভিশন হাইকোর্ট বিচারিক আদালত ও আপিল আদালতের রায় বাতিল করেন এবং সুজনকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়ে খালাস দেন।
রায়ে হাইকোর্ট বলেছেন, ২ নম্বর সাক্ষী বলেছেন তিনি এ ঘটনা দেখেননি। তারও দোকান আছে এবং তার দোকানে অভিযুক্ত ব্যক্তি কোনো চাঁদা দাবি করেননি। যে চাঁদাবাজ সে তো সব দোকান থেকে চাঁদা দাবি করবে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে অভিযুক্ত শুধু বাদির দোকান থেকে চাঁদা চাওয়া অন্য কিছু প্রমাণ করে। ৩ নম্বর সাক্ষী বৈরী ঘোষণা করা হয়েছে। ৪, ৫, ৬ ও ৭ নম্বর ঘটনাস্থলে অভিযুক্তকে দেখেছেন মর্মে উল্লেখ করেননি।
সার্বিক পর্যালোচনায় প্রতীয়মান হয় যে, প্রসিকিউশন অভিযোগ প্রমাণে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছেন। বাদি অভিযুক্তকে হয়রানি করার হীন মানসে অত্র মিথ্যা মামলাটি করেছেন। তাই দিনাজপুর নিবাসী সুজনকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়া হলো।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা