অলিগার্কদের সুবিধা দিতে গিয়ে জনকল্যাণ সঙ্কুচিত হচ্ছে
- বিশেষ সংবাদদাতা
- ০৭ জুলাই ২০২৪, ০২:৩৪
বাজেটোত্তর অর্থনীতির আগামীর ওপর আয়োজিত এক অনলাইন সেমিনারে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রের আনুকূল্যপ্রাপ্ত অলিগার্কদের সুবিধা দিতে গিয়ে দেশের দরিদ্র মানুষের সুবিধা ও কল্যাণমূলক কর্মসূচিকে সঙ্কুচিত করা হচ্ছে। এতে গরিব মানুষ আরো গরিব হচ্ছে।
গতকাল শনিবার ফোরাম ফর বাংলাদেশ সেন্টার এই অনলাইন সেমিনারের আয়োজন করে। অস্ট্রেলিয়ার সিডনি পলিসি অ্যানালাইসিস সেন্টারের আন্তর্জাতিকবিষয়ক পরিচালক অর্থনীতিবিদ জ্যোতি রহমান এতে মূল নিবন্ধ উপস্থাপন করেন। আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর, কলামিস্ট ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডা: জাহেদ উর রহমান, উন্নয়ন ও অর্থনীতি বিশ্লেষক জিয়া হাসান ও সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার ওয়েবিনারে সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাংবাদিক মনির হায়দার। জ্যোতি রহমান মূল প্রবন্ধে বলেন, সরকার জনগণের কল্যাণমূলক কর্মসূচি অব্যাহত থাকুক জনগণ সেটি চায়। বিভিন্ন খাতে ভর্তুকি বাবদ যে বরাদ্দ রাখা হয়েছে তাতে এটি স্পষ্ট হয়।
বাজেট ঘাটতির স্ফীতিকে তিনি উদ্বেগজনক বলে উল্লেখ করে বলেন, দেশের ব্যাংকিং খাতের এখন যে অবস্থা বিরাজ করছে তাতে এখান থেকে ঘাটতি অর্থায়ন বিপদের কারণ হতে পারে।
ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, বাজেট বাস্তবায়নের জন্য যে রাজনৈতিক অঙ্গীকার ও অর্থনৈতিক কাঠামো প্রয়োজন তার অনুপস্থিতিতে মূল সমস্যা নিহিত। জনগণের কাছে রাজনৈতিক জবাবদিহিতা না থাকলে নীতিমালা যতই ভালো হোক না কেন তাতে সাধারণ মানুষের প্রাধিকার থাকে না। অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলো দুর্বল হতে থাকে আর নীতিমালা বাস্তবায়নের ক্ষমতা লোপ পায়।
ড. রাশেদ মাহমুদ তিতুমীর ১৪ বিলিয়ন ডলারের ভুল রফতানি আয়ের কথা উল্লেখ করে বলেন, এর প্রভাব জিডিপি থেকে শুরু করে জাতীয় হিসাব-নিকাশের সব ক্ষেত্রে পড়বে। সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলোর উচিত সঠিক ডাটা প্রকাশ করা। তা না হলে ভুল ডাটার ওপর নির্ভর করে নেয়া নীতি পদক্ষেপও ভুল হবে।
ডা: জাহেদ উর রহমান বলেন, বাংলাদেশে এখন যা আছে তাতে গণতন্ত্র ও জবাবদিহিতা কোনোটাই নেই। এ অবস্থায় সরকার যদি জনগণের কল্যাণ করতে চাইলেও তা করা সম্ভব হবে না। কারণ সরকারকে অলিগার্ক বা অভিজাতদের স্বার্থ পূরণ করতে হবে। যে স্বার্থ পূরণের জন্য মূল্য দিতে হবে সাধারণ মানুষকে। তাদের অবস্থা মন্দ থেকে মন্দতর হবে।
জিয়া হাসান রাজস্ব আদায়ে ডিলেমার ওপর আলোকপাত করে বলেন, দুর্নীতিবাজ রাজস্ব কর্মকর্তাদের কারণে করদাতারা কর দিচ্ছেন কিন্তু এর বড় একটি অংশ চলে যাচ্ছে অসৎ কর্মকর্তাদের পকেটে। সরকার জনগণের দেয়া রাজস্ব পাচ্ছে না। আর চাপ বাড়ছে সৎ করদাতাদের ওপর।
অর্থবছরের শেষ দিনগুলোতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সরকারের ব্যাপক ঋণ গ্রহণের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এভাবে উচ্চ ক্ষমতার অর্থ সরবরাহ বাড়ানো হলে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে না। এর শিকার হতে হবে সর্বসাধারণকে।
ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, জনপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার গঠন না হলে বাজেটের প্রকৃত অগ্রাধিকারের প্রতি নজর দেয়া সরকারের জন্য সম্ভব হয়ে ওঠে না। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ছাড়া অর্থনীতি বা রাজনীতি কোনো ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা আসবে না।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা