উন্নয়ন অভিযাত্রায় প্রধানমন্ত্রীর চীন সফর গুরুত্বপূর্ণ : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- কূটনৈতিক প্রতিবেদক
- ০৪ জুলাই ২০২৪, ০০:২৭
বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিযাত্রাকে বেগবান করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন চীন সফর গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, চীন আমাদের বড় উন্নয়ন সহযোগী। বঙ্গবন্ধু টানেল, পদ্মা সেতুসহ বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নে এবং নানা ক্ষেত্রে অনেক আইকনিক স্থাপনা নির্মাণে চীন আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা দিয়েছে। এত দিন ধরে চীন আমাদের উন্নয়ন অভিযাত্রায় যে ভূমিকা রেখে আসছে, সেই অভিযাত্রাকে বেগবান করতে প্রধামন্ত্রীর চীন সফর নিশ্চিতভাবেই গুরুত্বপূর্ণ।
গতকাল রাজধানীতে ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমির জার্নাল, স্মার্ট লাইব্রেরি ও ওয়েবসাইটের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী ৮ জুলাই চার দিনের সফরে চীন যাচ্ছেন। এর আগে টানা চতুর্থ মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার পর শেখ হাসিনা প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফরে ভারত গেছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বেইজিং সফরে বাংলাদেশের উন্নয়ন ইস্যু অগ্রাধিকার পাবে। আমাদের পররাষ্ট্রনীতি হচ্ছে, সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরিতা নয়। আমরা সবার সাথে সুন্দর সম্পর্ক রেখে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। প্রধানমন্ত্রী কিছু দিন আগে ভারত সফর করে এসেছেন। সেই সফর অত্যন্ত ফলপ্রসূ ছিল।
চীন সফর নিয়ে ভারতের কোনো আপত্তি রয়েছে কি না- প্রশ্ন করা হলে হাছান মাহমুদ বলেন, ভারতের কখনো কোনো আপত্তি ছিল না। ভারতের সাথে আমরা যখন রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেছিলাম, তখন চীনের ভূমিকার প্রসঙ্গটি এসেছিল। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, আমি তো চীন যাচ্ছি, সেখানে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করব।
চীন সফরে নতুন কোনো চুক্তি হবে কি না- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, সেটি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। এ ব্যাপারে বলার সময় এখনো আসেনি।
অন্য দিকে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরে দুই দেশের মধ্যে বেশ কিছু সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সইসহ গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি ঘোষণা আসতে পারে। এ ছাড়া আঞ্চলিক সহযোগিতা, বিনিয়োগ, রোহিঙ্গাসহ নানা ইস্যুতে আলোচনা হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র সচিব জানান, চীন সফরে তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কোনো কথা হবে কি না, তা এখনো নিশ্চিত না।
প্রধানমন্ত্রী ৮ জুলাই বেইজিং পৌঁছাবেন। ৯ জুলাই তিনি চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াংয়ের সাথে বৈঠক করবেন। ১০ জুলাই চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাথে তার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। একই দিন চীনের পার্লামেন্ট ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেস অব চায়নার প্রেসিডেন্ট ঝাও লেজির সাথে বৈঠক করবেন শেখ হাসিনা। সরকারপ্রধান বঙ্গবন্ধুর বই ‘আমার দেখা নয়াচীন’ এর চীনা ভাষায় অনুবাদের মোড়ক উন্মোচন করবেন।
প্রধানমন্ত্রীর বেইজিং সফরকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে ঢাকা ঘুরে গেছেন চীনের কমিউনিস্ট পার্টির আন্তর্জাতিক বিভাগের মন্ত্রী লিউ জিয়ানশাও। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরের জন্য প্রতীক্ষায় রয়েছে চীন। এই সফর সফল করতে উভয় পক্ষ কাজ করছে।
সৌদি আরবে সদ্য সমাপ্ত রাজনৈতিক সংলাপ প্রসঙ্গে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ অন্যদের সাথে বেশ ভালো আলোচনা হয়েছে। সৌদি আরবের সাথে আমাদের সম্পর্ক এখন আর শ্রমিক রফতানি আর শ্রমিক গ্রহীতার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। আমাদের সম্পর্কের বহুমাত্রিকতা বহু আগেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সৌদি আরব আমাদের দেশে বিনিয়োগ করছে। তারা আরো করতে চায়। সৌদি আরবকে বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছি। তিনি বলেন, আমাদের অর্থনৈতিক খাতে সৌদি আরবের সম্ভাব্য বিনিয়োগ নিয়ে আলাপ হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার সবার জন্য বিনিয়োগের একটি নতুন জানালা খুলেছে। অনাবাসী বাংলাদেশী, প্রবাসী বাংলাদেশী, পৃথিবীর যেকোনো বিদেশী কোম্পানি বা বিদেশী নাগরিক অফশোর ব্যাংকিংয়ে অর্থ রাখতে পারবেন। এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সাড়ে ৮ শতাংশ সুদ দেয়া হবে। বিষয়টি নিয়ে সৌদি আরবের সাথে আলোচনা করেছি। অফশোর ব্যাংকিংসহ অন্যান্য বিনিয়োগ নিয়ে আমাদের ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা