১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

আলোচিত যত মামলা

দুদকের নিষ্ক্রিয়তায় প্রশ্ন -


গত এক বছরে দুর্নীতিবাজদের লাগাম টেনে ধরার মতো বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকাণ্ডে। বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে উল্টো চিত্র চোখে পড়েছে। এর আগের কয়েক বছরে আলোচিত বেশ কিছু ঘটনা ও দুর্নীতির অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলাগুলো এখনো তদন্তাধীন রয়েছে। সংবাদমাধ্যমে বারবার উল্লেখের পরও চাঞ্চল্যকর কিছু দুর্নীতি ঘটনার বিষয়ে দুদকের অবস্থান ছিল যেন অসহায়ের মতো। কিছু ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ওঠা সুুনির্দিষ্ট অভিযোগের ব্যাপারে সংস্থাটির নমনীয় ভূমিকা ব্যাপক সমালোচিতও হয়। বর্তমানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদধারীর দুর্নীতির তথ্য প্রকাশ্যে আসার পর প্রশ্ন উঠেছে এসব ব্যক্তির বিরুদ্ধে আগেই নানা মহল থেকে অভিযোগ থাকার পরও কেন নিশ্চুপ ছিল দুদক।
বাংলাদেশ থেকে অর্থপাচার নিয়ে গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকটি ঘটনা ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস। এই প্রতিষ্ঠানটি আরো ৩টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান দখলে নিয়ে ১০ বছরে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও বাইরে পাচার করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। যদিও পিপলস লিজিংয়ের প্রধান ব্যক্তি পি কে হালদার ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে দুদকের দায়ের করা ৩৭টি মামলায় প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।
এ ছাড়া বিকল্প ধারার মহাসচিব মেজর (অব:) আবদুল মান্নান, বেসিক ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ আবদুল হাই বাচ্চু, সরকারসমর্থিত ১৪ দলীয় জোটের অংশীদার তরিকত ফেডারেশনের সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারিসহ অনেক রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী রয়েছেন দুদকের দায়ের করা মামলায় আসামির তালিকায়।

বিচারাধীন মামলা : দুদকের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা ও ঢাকার বাইরে নিম্ন আদালতে তিন হাজারের বেশি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। গত বছরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী এর মধ্যে দুই হাজার ৮৪৭টি মামলার বিচার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। উচ্চ আদালতের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে ৪৩১টি মামলার কার্যক্রম। উচ্চ আদালতে ৬৭৬টি রিট ও ফৌজদারি অপরাধের বিবিধ মামলা রয়েছে ৮২৯টি। এক হাজার ১৩৬টি ক্রিমিনাল আপিল মামলা ও ৫৭৮টি ফৌজদারি রিভিশন মামলা নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে।
মামলার ৮ বছর পর আসামি বেসিক ব্যাংকের বাচ্চু : নানা সমালোচনা ও প্রশ্ন পেরিয়ে মামলার আট বছর পর গত বছর জুনে আলোচিত সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চুকে বেসিক ব্যাংকের ৫৮ মামলার চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করে দুদক। চার্জশিটে বাচ্চুসহ ১৪৭ জনকে আসামি করা হয়। ৫৮টি মামলার তদন্তে নতুন আসামি হিসেবে আলোচিত আবদুল হাই বাচ্চু ও কোম্পানি সচিব শাহ আলম ভূঁইয়াকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। অথচ ২০১৫ সালে দায়ের করা কোনো মামলায়ই বাচ্চুকে আসামি করা হয়নি। যে কারণে দুদককে বারবার নানা প্রশ্নের মুখেও পড়তে হয়েছে। চার্জশিটে আসামিদের বিরুদ্ধে মোট ২ হাজার ২৬৫ কোটি ৬৮ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়। আসামিদের মধ্যে ৪৬ জন ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও ১০১ জন গ্রাহকসহ বিভিন্ন স্তরের ব্যক্তিরা রয়েছে। যেখানে ব্যাংকের সাবেক এমডি কাজী ফখরুল ইসলামকে আসামি করা হয়েছে ৪৮টি মামলায়। আর ডিএমডি ফজলুস সোবহান ৪৭টি, কনক কুমার পুরকায়স্থ ২৩টি, মো: সেলিম আটটি, বরখাস্ত হওয়া ডিএমডি এ মোনায়েম খানকে ৩৫টিতে আসামি করা হয়।

২০০৯ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকের গুলশান, দিলকুশা ও শান্তিনগর শাখা থেকে মোট সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার ঋণ অনিয়মের মাধ্যমে বিতরণের অভিযোগ ওঠার পরপরই অনুসন্ধানে নামে দুদক। ঋণপত্র যাচাই না করে জামানত ছাড়া, জাল দলিলে ভুয়া ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ঋণদানসহ নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে বিধিবহির্ভূতভাবে ঋণ অনুমোদনের অভিযোগ ওঠে ব্যাংকটির তৎকালীন পরিচালনাপর্ষদের বিরুদ্ধে। প্রায় পাঁচ বছর অনুসন্ধান শেষে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা লোপাটের ঘটনায় ২০১৫ সালের ২১, ২২ ও ২৩ সেপ্টেম্বর তিন দিনে টানা ৫৬টি মামলা হয়।
বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারির ঘটনায় যখন মামলা করা হয় তখন দুদক চেয়ারম্যান ছিলেন মো: বদিউজ্জামান। তিনি মামলার তদন্ত শেষ করে যেতে পারেননি। তারপর ২১০৬ সালের দুদক চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পান ইকবাল মাহমুদ। তার পাঁচ বছরেও বেসিক ব্যাংকের তদন্ত সম্পন্ন হয়নি। আর সংস্থাটির বর্তমান চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ। তার আমলে মামলার তদন্ত শেষ করা হয়। এ মামলার তদন্ত করে চার্জশিট দিতে দুদকের আট বছর লেগে যায়।

পি কে হালদার : দেশের আর্থিক খাতে অর্থ লোপাট ও পাচারের অন্যতম খলনায়ক প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পিকে হালদার। দুদক এ পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে ৩৭টি মামলা দায়ের করে। দুদকের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধানের নেতৃত্বাধীন একটি টিম এসব মামলা করেন। এর মধ্যে দুটি মামলার বিচার চলছে আদালতে। বাকি মামলাগুলোর তদন্ত চলছে এখনো। পি কে হালদারের প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড ও বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি (বিআইএফসি)। ২০০৯ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ১০ বছরে এই চারটি প্রতিষ্ঠান দখলে রেখে পি কে হালদার ও তার সহযোগীরা প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা লোপাট করেন এবং সেই অর্থ দেশের বাইরে পাচারের অভিযোগ রয়েছে। যদিও এ পর্যন্ত দুদকের ৩৭টি মামলায় পি কে হালদার ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়।
গত বছরের ১৪ মে হালদার পশ্চিমবঙ্গে ধরা পড়েন ভারতের কেন্দ্রীয় আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) হাতে। এর পর থেকেই ভারতের কারাগারে আছেন বাংলাদেশের আর্থিক খাতের কেলেঙ্কারির এ খলনায়ক। পি কে হালদারকে ফেরানো ও তার পাচার করা অর্থ ফেরত আনার বিষয়ে দুদকের কমিশনার জহুরুল হক এর আগে বলেছেন, পি কে হালদারকে ফেরত আনার বিষয়টি তাদের একক এখতিয়ারে নেই। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন জায়গায় এ ব্যাপারে চিঠি দেয়া হয়েছে। কিছুদিন পর পর তাগাদাও দেয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে আরো যাদের এখতিয়ার আছে, তাদের সাথেও যোগাযোগ রাখছে দুদক।

মেজর (অব:) এম এ মান্নান : বিকল্প ধারার মহাসচিব মেজর (অব:) এম এ মান্নান ও তার স্ত্রী উম্মে কুলসুম মান্নানসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রায় ২০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ১০টি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ব্যাংক-বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স করপোরেশন লিমিটেড (বিআইএফসি) থেকে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান হিসেবে ঋণ মঞ্জুর ও বিতরণ দেখিয়ে এসব টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ আনা হয় তাদের বিরুদ্ধে। এসব মামলার বিষয়ে দুদকের এক কর্মকর্তা বলেন, ইতোমধ্যে দু’টি মামলার বিচারকার্যক্রম চলছে আদালতে। বাকি মামলাগুলো তদন্ত শেষে পর্যায়ক্রমে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হবে।
সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী : চট্টগ্রাম-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও তরিকত ফেডারেশনের প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারীর দুই ছেলে সৈয়দ তৈয়বুল বশর মাইজভাণ্ডারী ও সৈয়দ আফতাবুল বশর মাইজভাণ্ডারী এবং প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের কর্মকর্তাসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুদক। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি (২০২৩) দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১ এর সহকারী পরিচালক মো: সাইফুল ইসলাম বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রাইম ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড থেকে ৩৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের বিষয়ে অনুসন্ধানে সত্যতা পায় দুদক।

মামলা দায়েরের পর সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী দুদককে হুমকি দিয়ে বলেছেন, দুদক নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারীকে চেনে নাই। যা তা কমেন্ট করেছেন সহকারী পরিচালক। চামড়া সব ছিঁড়ে ফেলব। মাইজভাণ্ডারীর গায়ে হাত!’ দুর্নীতি দমন কমিশনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারীর দেয়া এমন বক্তব্যের পরপরই ক্ষোভ প্রকাশ করেন হাইকোর্ট। তবে তার দুই ছেলের বিরুদ্ধে দুদকের মামলাকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে অভিহিত করেন মাইজভাণ্ডারী।
সাবেক সচিব প্রশান্ত কুমার রায় : পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সাবেক সচিব ড. প্রশান্ত কুমার রায়ের বিরুদ্ধে ২ কোটি ৮৫ লাখ ২৯ হাজার ৮১৬ টাকার সম্পদ গোপনসহ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা দায়ের করে দুদক। গত ৫ জুন দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১ এ মামলাটি দায়ের করেন দুদকের উপ-পরিচালক মো: মশিউর রহমান। পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সাবেক সচিব ড. প্রশান্ত কুমার রায় ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ছিলেন।
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী : শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী মো: জুলফিকার আলী হায়দারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। ৫২ লাখ ১৪ হাজার ৮১ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন ও এক কোটি ৪১ লাখ ৮৬ হাজার ২২ টাকা জ্ঞাত আয়-বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।

ডলি কনস্ট্রাকশন : ডলি কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো: নাসির উদ্দিন ও তার স্ত্রী ডলি আক্তারসহ আট জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুদক। রূপালী ব্যাংক থেকে ৪৪৩ কোটি ৪৫ লাখ ৯৫ হাজার ৫০৪ টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাতের অভিযোগে মামলাটি করেন দুদকের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ জাফর সাদেক শিবলী। মামলায় ব্যাংকের ৫ কর্মকর্তাকেও আসামি করা হয়।
প্রকৌশলী মো: তৌহিদুজ্জামান : বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী ও বর্তমানে প্রগতি ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো: তৌহিদুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুদক। প্রতারণা ও জাল কাগজপত্র তৈরি করে ৩৯ লাখ ৮০ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গত ১৩ এপ্রিল (২০২৩) তার বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন দুদকের সহকারী পরিচালক মাহবুবুল আলম বাদি হয়ে মামলাটি করেন।
ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন : ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: শফিক উদ্দিন এবং বাংলাদেশ স্মার্ট ইলেক্ট্রিক্যাল কোম্পানির সাবেক বোর্ড মেম্বার ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মোতালেবসহ তিনজনের বিরুদ্ধে গত বছর ৩১ মে ৩৬ কোটি ৩৭ লাখ ৫৬ হাজার ৮৭৯ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলাটি করেন দুদকের খুলনা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক তরুণ কান্তি ঘোষ।
এসপি সুব্রত কুমার হালদার : মাদারীপুরের সাবেক পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদারসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত ৫ জুলাই মাদারীপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো: হাফিজুল ইসলাম। মামলার প্রধান আসামি এসপি সুব্রত কুমার হালদার বর্তমানে রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত আছেন। পুলিশে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে ৬ হাজার ৮০০ জন পুরুষ এবং ২ হাজার ৮৮০ জন নারীসহ মোট ৯ হাজার ৬৮০ জন পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যাপক দুর্নীতির মাধ্যমে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে সর্বমোট ৭৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা ঘুষ নেয়ার অভিযোগের সত্যতা পায় দুদক। যে কারণে তাদের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।

ওসি আবদুল্লাহ : বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বর্তমানে ফেনীর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের অপরাধ বিভাগের ইন্সপেক্টর (পরিদর্শক) সৈয়দ আব্দুল্লাহর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত ১৫ জুন পিরোজপুর জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো: মোস্তাফিজ মামলাটি দায়ের করেন। পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া থানার সাবেক ওসি সৈয়দ আব্দুল্লাহ ছাড়াও তার স্ত্রী ফারহানা আক্তার ও শাশুড়ি কারিমা খাতুনকে আসামি করা হয় এ মামলায়। তাদের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ২৬ কোটি ৫০ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়।
এমজিএইচ গ্রুপের সিইও আনিস আহমেদ : অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে এমজিএইচ গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আনিস আহমেদ গোর্কির বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক সৈয়দ নজরুল ইসলাম বাদি হয়ে দুদক আইন-২০০৪-এর ২৭(১) ধারায় ও মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে মামলাটি দায়ের করেন। তার বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ১৩৬ কোটি দুই লাখ ৭৭ হাজার ৪০০ টাকার সম্পদ অর্জন, স্থানান্তর, হস্তান্তরের অভিযোগ আনা হয়।
বিমানের ক্যাপ্টেনসহ ২৩ জনের মামলা : মিসরীয় উড়োজাহাজ লিজ আনার ক্ষেত্রে দুর্নীতি করায় রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের গচ্চা গেছে এক হাজার ১৬১ কোটি টাকা। এই দুর্নীতির সাথে বিমানের সাবেক ফ্লাইট (অপারেশন) ক্যাপ্টেন ইশরাত আহমেদসহ ২৩ জন জড়িত ছিলেন বলে অনুসন্ধানে তথ্য পায় দুদক। এরপরই চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি দুদকের উপ-পরিচালক জেসমিন আক্তার বাদি হয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের মামলাটি দায়ের করেন।
আপন জুয়েলার্স : আপন জুয়েলার্সের মালিক গুলজার আহমেদের বিরুদ্ধে প্রায় ৩০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা দায়ের করে দুদক। গত ৬ জুলাই দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নেয়ামুল আহসান গাজী বাদি হয়ে ঢাকার সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলাটি দায়ের করেন।


আরো সংবাদ



premium cement
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতার ‘শূন্য পাঁচ’ কর্মসূচি ঘোষণা সিরিয়া যাচ্ছেন কাতারের প্রতিনিধিদল ভারত কখনো চায়নি বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াক : মিয়া গোলাম পরওয়ার ‘উৎপাদনের জন্য কৃষি পণ্য ও উপকরণ সহজলভ্য এবং সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে হবে’ পলিথিনে মোড়ানো নবজাতকের লাশ! আপনাকে ধরে এনে বিচার করা হবে : মোবারক হোসেন কালীগঞ্জে ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে উলামা পরিষদের বিক্ষোভ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তর করে সরে যাবো : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ভারতকে দেয়া ‘বিশেষ সুবিধা’ বাতিল করল সুইজারল্যান্ড বুদ্ধিজীবী দিবসে ঢাবি ও অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের শ্রদ্ধা কবি হেলাল হাফিজের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত

সকল