১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে ৩ দিনের কর্মসূচি

ঢাকায় বিএনপির সমাবেশ শনিবার

-

সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। গতকাল বুধবার দুপুরে দলের অঙ্গসংগঠনের সাথে বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিএনপিসহ দলের অঙ্গসংগঠনের এই যৌথ সভা হয়।
ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- আগামী ২৯ জুন শনিবার বেলা ৩টায় নয়া পল্টন অফিসের সামনে সমাবেশ, ১ জুলাই সোমবার দেশের মহানগর এবং ৩ জুলাই জেলা সদরে সমাবেশ।
কর্মসূচি ঘোষণা করে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন। কিছু দিন পরপরই তাকে হাসপাতালে নিতে হয়। এবারো তাকে জরুরিভাবে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে, আল্লাহর অশেষ রহমত যে তাকে আমরা ফিরে পেয়েছি। তার ফিরে আসার সম্ভাবনা খুব কঠিন ছিল যদি ঠিক সময়ের মধ্যে ডাক্তার চিকিৎসা দিতে না পারতেন। এই অবস্থার মধ্যে আমাদের চিকিৎসকরা বারবার বলেছেন, তাকে বাইরের উন্নত হাসপাতালে নেয়া উচিত। কিন্তু সরকার তাকে যেতে দিচ্ছে না। তারা পরিকল্পিভাবে আদালতকে ব্যবহার করে সেটা থেকে তাকে বঞ্চিত করে রেখেছে। এজন্য বিএনপি সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশনেত্রীর মুক্তির আন্দোলন জোরদার করার।

প্রসঙ্গত, গত ২৩ জুন রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার হৃদপিণ্ডে ‘পেস মেকার’ বসানো হয়েছে। এ অবস্থায় তার মুক্তির দাবিতে ফের আন্দোলন গড়ে তোলা প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের এই মুক্তির দাবি জনগণকে সাথে নিয়েই করছি। আমরা জনগণের কাছে প্রত্যাশা করব, তাকে মুক্ত বাতাসে রাজনীতি করার সুযোগ সৃষ্টি করার জন্য তারা আপ্রাণ চেষ্টা করবে এবং তারা আন্দোলনের ঝাঁপিয়ে পড়বে। আমরা আশা করি, দেশনেত্রীর মুক্তির আন্দোলনের সাথে আপমর জনসাধারণ একাত্ম হবেন। আমাদের সাথে যারা যুগপৎ আন্দোলন করেছেন তারাও অনেকে বিবৃতি দিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, তার মুক্তির কথা বলেছেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, দেশনেত্রীকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে সরকার আটক করে রেখেছে। এটা আইন বিরোধী, সংবিধান বিরোধী। যেকোনো সাধারণ একজন মানুষের যদি পাঁচ বছরের সাজা হয়, সে সাথে সাথে জামিন পেয়ে যায়। আমাদের দলেরই অনেকে আছেন, যাদের ১৩ বছর/১৪ বছর সাজা হয়েছে তাদের জামিন দেয়া হয়েছে এবং আওয়ামী লীগের নেতাদের এই ধরনের সাজা হওয়ার পরে তাদের প্রত্যেককে মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। তারা মন্ত্রিত্ব পেয়েছেন, এমপি নমিনেশন পেয়েছেনে। শুধু দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ব্যাপারেই এটা মানা হচ্ছে না। আপনি জামিন দিতে পারবেন না এরকম কোনো বিধান নেই।
তিনি বলেন, এটা তার প্রাপ্য, এটা সাংবিধানিক অধিকার। এখনো ওনার মামলা সুপ্রিম কোর্টে পেন্ডিং আছে। সুতরাং এই বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ যে তারা (সরকার) পরিকল্পিতভাবে তাকে কারাগারে আটক করে রাখছে। সেটা সম্পূর্ণভাবে বেআইনি।
সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ফরহাদ হালিম ডোনার, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, আব্দুস সালাম আজাদ, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, কেন্দ্রীয় নেতা শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, মীর সরাফত আলী সপু, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সাইয়েদুল আলম বাবুল, মাহবুবুল হক নান্নু, মনির হোসেন, বেনজীর আহমেদ টিটো, নজরুল ইসলাম আজাদ, তাবিথ আউয়াল, ঢাকা মহানগরের আমিনুল হক, রফিকুল আলম মজনু, যুবদলের গোলাম মাওলা শাহিন, স্বেচ্ছাসেবক দলের এস এম জিলানি, রাজিব আহসান, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান, মৎস্যজীবী দলের আবদুর রহিম, উলামা দল মাওলানা সেলিম রেজা, কাজী আবুল হোসেন, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, মজিবুর রহমান, জাসাসের লিয়াকত আলী, জাকির হোসেন রোকন, ছাত্রদলের রাকিবুল ইসলাম রাকিব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement