১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

সঙ্কটাপন্ন খালেদা জিয়া

গভীর রাতে হাসপাতালে ভর্তি,আজ সারা দেশে দোয়ার কর্মসূচি
২২ সঙ্কটাপন্ন খালেদা জিয়া -


বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তার অবস্থা সঙ্কটাপন্ন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক ও দলটির নেতারা। বেগম জিয়ার শারীরিক এমন অবস্থায় সারা দেশে আজ দোয়ার কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি।
গত শুক্রবার গভীর রাতে হঠাৎ শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায় বেগম খালেদা জিয়ার। এর পর পরই অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে গুলশানের বাসা থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাকে হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
বেগম জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার হঠাৎ করে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় শুক্রবার গভীর রাত ৩টা ৫ মিনিটে তাকে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে আনা হয়। বেগম জিয়াকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। জানা গেছে, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে অধ্যাপক এফ এম সিদ্দিকী, অধ্যাপক শামসুল আরেফিন, অধ্যাপক এ কিউ এম মহসিনসহ মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যরা কয়েক দফা বৈঠক করে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সর্বশেষ অবস্থা পর্যালোচনা করেছেন। রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মেডিক্যাল বোর্ডের চিকিৎসকরা বৈঠক করছিলেন। প্রতি ঘণ্টায় তার শারীরিক অবস্থার আপডেট নেয়া হচ্ছে। মেডিক্যাল বোর্ডের এসব বৈঠকে লন্ডন থেকে ডা: জুবাইদা রহমানসহ যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়ার কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন।
অধ্যাপক জাহিদ বলেন, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা ম্যাডামের শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্টগুলো পর্যালোচনা করে তাৎক্ষণিক যা করণীয় সেই ব্যবস্থা নিচ্ছেন।
এ বিষয়ে বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সঙ্কটাপন্ন। তার মেডিক্যাল বোর্ডের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা নিবিড়ভাবে প্রায় প্রতি ঘণ্টায় পর্যবেক্ষণ করছেন।

এ দিকে সিসিইউতে মেডিক্যাল বোর্ডের চিকিৎসক-নার্স ছাড়া সবার প্রবেশে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। দলীয় প্রধানের কাছে যেতে না পারলেও তাকে দেখতে গতকাল শনিবার সকাল থেকে হাসপতালের নেতাকর্মীরা ভিড় করেন। সকাল সাড়ে ৯টায় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নিতে এভারকেয়ার হাসপাতালে যান। তিনি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসক অধ্যাপক ডা: এ জেড এম জাহিদ হোসেনের সঙ্গে কথা বলেন।
বেলা দেড়টায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এভারকেয়ার হাসপাতালে যান এবং বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যদের সাথে কথা বলেন। তিনি বেগম জিয়ার শারীরিক চিকিৎসার সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে অবহিত হন। পরে গণমাধ্যমকে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি ম্যাডামকে দেখতে এভারকেয়ার হাসপাতালে গিয়েছিলাম। এখন তিনি সিসিইউতে আছেন। তার অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক এবং ডাক্তাররা এখন ভেতরে কাউকে যেতে দিচ্ছেন না।’ তিনি বলেন, আমি তার চিকিৎসার সাথে নিয়োজিত ডাক্তারদের সাথে কথা বলে যেটা বুঝলাম, ডাক্তারদের কাছ থেকে জানতে পেরেছি যে, তার অবস্থা বেশ ক্রিটিক্যাল। আমি জনগণের কাছে আহ্বান জানাই তারা যেন ম্যাডামের সুস্থতার জন্য দোয়া করেন, আল্লাহ তায়ালার কাছে সেই দোয়া চাই।’
রোগ মুক্তি কামনায় মিলাদ ও দোয়া : খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনা করে নয়াপল্টন জামে মসজিদে মিলাদ ও বিশেষ দোয়া করা হয়। বাদ জোহর দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ নেতাকর্মীরা মিলাদ ও দোয়ায় অংশ নেন। এ সময় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর শরাফত আলী সপু,সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল খালেক, মাহবুবুল হক নান্নু, আমিনুল ইসলামসহ যুববিষয়ক সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী, সহ-গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আনিছুর রহমান তালুকদার খোকনসহ নেতাকর্মীরা দোয়ায় অংশ নেন।

এ দিকে গতকাল সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে আজ ঢাকাসহ সব মহানগর ও জেলায় বেগম জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়ার কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
প্রসঙ্গত, ৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ নানা রোগে ভুগছেন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের একটি মেডিক্যাল বোর্ড খালেদা জিয়ার চিকিৎসা কার্যক্রম সার্বক্ষণিক তদারকি করছেন। সর্বশেষ গত ১ মে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে যান খালেদা জিয়া। সে সময় তার চিকিৎসায় নিয়োজিত বোর্ডের পরামর্শে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এক দিন পর ২ মে মেডিক্যাল বোর্ডের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে হাসপাতাল থেকে নিজ বাসায় ফেরেন তিনি। এর আগে গত ৩০ মার্চ এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন খালেদা জিয়া। হাসপাতালের সিসিইউতে রেখে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন চিকিৎসকরা। প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে ২ এপ্রিল সন্ধ্যায় বাসায় ফেরেন তিনি।
গত বছরের ৯ আগস্ট বেগম খালেদা জিয়াকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তখন ৫ মাসের বেশি সময় চিকিৎসা শেষে গত ১১ জানুয়ারি তিনি বাসায় ফেরেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নিতে দল ও পরিবারের পক্ষ থেকে বার বার সরকারের কাছে আবেদন করা হলেও অনুমতি পাওয়া যায়নি। এমন পরিপ্রেক্ষিতে লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত বিএনপির চেয়ারপারসনের রক্তনালীতে অস্ত্রোপচার করা হয় গত বছরের ২৭ অক্টোবর।

 


আরো সংবাদ



premium cement
বরখাস্ত সিপাহী শাহীন বাহিনী সম্পর্কে অপপ্রচার করছেন : বিজিবি সব কোচের সাথে যেন সমান বিচার করা হয় : বার্সেলোনা কোচ বিজয় দিবসে শিশু পার্কে বিনা টিকিটে প্রদর্শনীর নির্দেশ লাউয়াছড়া বনে পাহাড়িকার চার বগি বিচ্ছিন্ন খুলনায় হাসিনা ফিরে আসার ভিডিও, তদন্তে ৪ সদস্যের টিম বাংলাদেশ থেকে ওষুধ আমদানিতে আগ্রহী পাকিস্তান আরএনপিপিতে শেখ হাসিনা পরিবারের দুর্নীতি অনুসন্ধানে রুল আধিপত্যবাদমুক্ত একটি ইসলামী কল্যাণরাষ্ট্র উপহার দিবে জামায়াত : গোলাম পরওয়ার বিদেশে চিকিৎসায় বছরে ৫ বিলিয়ন ডলার হারাচ্ছে বাংলাদেশ : গভর্নর সিংগাইরে হিছা খা হত্যা মামলায় গ্রেফতার ২ সেন্টমার্টিনে যাতায়াতে বিধিনিষেধের সিদ্ধান্ত প্রশ্নে হাইকোর্টে রুল

সকল