১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

তামিলনাড়ুতে বিষাক্ত মদ পানে ৩৭ জনের মৃত্যু

-

ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের কাল্লাকুরিচি জেলায় বিষাক্ত মদ পানে ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত কয়েক দিনে বিষাক্ত মদ পানে অসুস্থ হয়ে আরো অন্তত ৫৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তামিলনাড়–র রাজধানী চেন্নাই থেকে কাল্লাকুরিচি জেলা প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে। মৃত ও অসুস্থদের বেশির ভাগই জেলার করুনাপুরম এলাকার বাসিন্দা। এনডিটিভি।
ছেলেকে হারানো এক মা বলেন, ‘তার ছেলের প্রচণ্ড পেটে ব্যথা ও চোখ খুলতে কষ্ট হচ্ছিল। সে জানিয়েছিল সে আরক পান করেছে। প্রথমে মাতাল আখ্যা দিয়ে তাকে ভর্তি নিতে অস্বীকার করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। রাজ্য সরকারের উচিত সব মদের দোকান বন্ধ করে দেয়া।’
এ ঘটনায় সন্দেহভাজন এক অবৈধ মদ ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার এবং আরো দু’জনকে আটক করেছে পুলিশ। বিষাক্ত মদ পানের কারণে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এনডিটিভিকে বলেন, ‘তারা ঠিক কী পান করেছিল তা আমরা তদন্ত করে দেখছি। আমরা তিনজনকে হেফাজতে নিয়েছি। যারা মারা গেছেন তাদের বেশির ভাগই ব্যক্তিগত মাধ্যম ব্যবহার করে মদ কিনেছিলেন, কোনো সরকার পরিচালিত মদের দোকান থেকে কেনেননি।’
রাজ্য সরকার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ২৬ জন প্যাকেট থেকে ‘আরক’ পান করেছিলেন আর ফরেনসিক তদন্তে তাতে বিষাক্ত মিথানলের উপস্থিতি নিশ্চিত হয়েছে। রাজ্য সরকার এ ঘটনার পর জেলা পুলিশ প্রধানকে বরখাস্ত করে তার জায়গায় নতুন আরেকজন কর্মকর্তাকে নিয়োগ দিয়েছে। জেলা কালেক্টরকেও বদলি করা হয়েছে। এর পাশাপাশি প্রহিবিশন এনফোর্সমেন্ট উইংয়ের ডেপুটি সুপার, তিনজন পরিদর্শক ও একাধিক সহ-পরিদর্শককে বরখাস্ত করা হয়েছে।

রাজ্য সরকার বিষাক্ত মদ কাণ্ডের তদন্তভার সিবি-সিআইডির হাতে তুলে দিয়েছে। সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ পোস্ট করা এক শোকবার্তায় মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন বলেছেন, ‘আসামিদের গ্রেফতার করা হয়েছে। যেসব কর্মকর্তা এটি প্রতিরোধে ব্যর্থ হয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আমরা শক্ত হাতে দমন করব।’
মাদ্রাজ হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত এক বিচারপতি প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের কথাও জানিয়েছেন স্ট্যালিন। মৃতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ১০ লাখ রুপি করে ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে। তিনি বেআইনি মদ প্রস্তুতকারক, মিথানল বিক্রেতাদের গ্রেফতার করার নির্দেশ দেয়ার পাশাপাশি মিথানল ধ্বংস করারও নির্দেশ দিয়েছেন।
গত তিন দিনে রাজ্যটির বিভিন্ন স্থানে তিনজনের মৃত্যুর পর বুধবার উদ্বেগজনক খবর আসতে শুরু করে। বিষাক্ত মদপানের কারণে এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে গুঞ্জন থাকলেও জেলা কালেক্টর শ্রাবণ কুমার জাতাবথ প্রাথমিকভাবে এ জাতীয় প্রতিবেদন অস্বীকার করেন। তিনি বলেছিলেন, তিন দিন ধরে এসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। তাদের মধ্যে একজন কখনোই মদ পান করেননি আর অপর একজনের পেটের সমস্যা ছিল। হাসপাতালে কেউ মারা যায়নি এবং কেউ মদ্যপ অবস্থায় আসেনি। হট্টগোলের মধ্যে কেউ বেআইনি মদ বলে ছড়িয়ে দিয়েছেন। আমরা এ বিষয়ে তদন্ত করছি। এই শোচনীয় ঘটনাটিকে গোয়েন্দা সংস্থা এবং নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগকারী শাখার একটি বড় ধরনের ব্যর্থতা হিসাবে দেখা হচ্ছে। গত বছরও তামিলনাড়ুতে বিষাক্ত মদ পানে ২২ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

 


আরো সংবাদ



premium cement