মুনাফা ৫৭ হাজার ৩৮৮ কোটি টাকা
- সৈয়দ সামসুজ্জামান নীপু
- ২০ জুন ২০২৪, ০০:৪৯
দেশের বাজারে জ্বালানি তেল বিক্রি করে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) বছরের পর বছর ধরে হাজার হাজার কোটি টাকা মুনাফা করছে। বিগত ৯ বছরে শুধু বিভিন্ন ধরনের জ্বালানি তেল বিক্রি করেই প্রতিষ্ঠানটি মুনাফা করেছে ৫৭ হাজার ৩৮৭ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। বিদেশ থেকে কম দামে তেল কিনে এনে দেশের বাজারে তা বেশি দামে বিক্রি করার কারণে এই মুনাফা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এত মুনাফা করার পরও বিপিসি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলে (আইএমএফ) পরামর্শে গত দুই মাসে দুই দফা তেলের দাম ‘সমন্বয়ের’ নামে বৃদ্ধি করেছে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, মূলত তেল ও বিদ্যুতের দাম দফায় দফায় বাড়ানোর কারণে দেশে মূল্যস্ফীতি কমছে না।
অর্থমন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত ‘অর্থনৈতিক সমীক্ষা-২০২৪’ এ বিপিসি’র মুনাফার এই চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। পরিসংখ্যানে দেখানো হয়েছে, বিপিসি ২০১৪-২০১৫ অর্থবছর থেকে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছর-মোট ১০ অর্থবছরে শুধু ২০২১-২০২২ অর্থবছর বাদে আর সব বছরে তেল বিক্রি করে প্রচুর মুনাফা করেছে। যেমন- ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরে বিপিসি’র মুনাফা হয়েছে চার হাজার ১২৬ কোটি টাকা। এর পরের অর্থবছর ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরে মুনাফার পরিমাণ ছিল ৯ হাজার ৪০ কোটি টাকা। একইভাবে ২০১৬-২০১৭ ও ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে মুনাফার পরিমাণ ছিল যথাক্রমে আট হাজার ৬৫৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা ও পাঁচ হাজার ৬৪৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। ২০১৮-২০১৯ তে চার হাজার ৭৬৮ কোটি ৪২ লাখ টাকা। ২০১৯-২০২০ তে পাঁচ হাজার ৬৬ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।
একইভাবে ২০২০-২০২১ অর্থবছরে বিপিসি মুনাফা করেছে সর্ব্বোচ্চ ৯ হাজার ৫৫৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। এর পরের অর্থবছরে শুধু প্রতিষ্ঠানটি এক হাজার ৯৮৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা লোকসান দিয়েছিল। কিন্তু ২০২২-২০২৩ আবার মুনাফা ধারায় ফিরে আসে বিপিসি। এ বছর মুনাফা হয়েছিল পাঁচ হাজার ৬৫৩ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। এবং চলতি ২০২৩-২০২৪ বছরে বিপিসির মুনাফা ধরা হয়েছে চার হাজার ৮৭৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা।
অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, নভেম্বর ২০১৪ হতে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম হ্রাস পায়। ফলে বিপিসিকে এখন আর সরকারের ভর্তুকি দেয়া লাগছে না। তবে ২০২১-২২ অর্থবছরে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট বৈশ্বিক পরিস্থিতির কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপিসি সেই বছর দুই হাজার ৭০৫ কোটি ৬৪ লাখ টাকা লোকসান দিয়েছিল।
উল্লেখ্য, দেশে প্রতি বছর জ্বালানি তেলের চাহিদা ৬৫ লাখ টন। এর মধ্যে ৭৩ শতাংশ ডিজেল দ্বারা পূরণ করা হয়। ডিজেলের প্রায় পুরোটায় বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। তবে অকটেনের চাহিদার অর্ধেকের বেশি ও পেট্রোলের পুরোটাই দেশে উৎপাদিত হয়। তাই দেশে উৎপাদিন এই দুই পণ্যের দাম বাড়ানোকে অনেকে অযৌক্তিক এবং অন্যায় বলেছেন। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, প্রতি লিটার জ্বালানি তেলে সরকার ৩০ থেকে ৩২ শতাংশ ভ্যাট ও ট্যাক্স নেয়। তাই বর্তমান বাস্তবতায় দেশের জ্বালানি তেলের দাম না বাড়িয়ে এটি আরো কমিয়ে দেয়া যায়। এর ফলে ভোক্তাদের যেমন একটু সাশ্রয় হবে, তেমনি দেশে মূল্যস্ফীতির হারও কমে আসবে।
বর্তমান অর্থবছরের ৯ মাস ধরে দেশে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের ওপরে অবস্থান করছে। অন্যদিকে, খাদ্য মূল্যস্ফীতির চূড়া ১০ শতাংশ অতিক্রম করেছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা