বিএমইটিতে অনিয়ম দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেট সক্রিয়
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০৮ জুন ২০২৪, ০২:৩১
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে শ্রমিক যাওয়ার হার বাড়ার পরের দুই মাসে কমেছিল গতি। কিন্তু এপ্রিল মাসে সেই ধারা থেকে বেরিয়ে আবারো গতি বেড়েছে বিদেশগামী শ্রমিকের।
এদিকে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর বহির্গমন শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কর্মচারীদের অনিয়ম দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ উঠলেও প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে।
একক ভিসায় (ওয়ানস্টপ) বিদেশগামীদের বহির্গমন ছাড়পত্র দেয়ায় ব্যাপক অনিয়ম হচ্ছে। আর এসব লেনদেন বেশির ভাগ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বাইরে হচ্ছে বলে এই পেশার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িতরা সংশ্লিষ্টদের বলার চেষ্টা করছেন। আর এসব ঘটনা প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসং¯প্রণ মন্ত্রণালয় থেকে জনৈক এক ব্যক্তি নিয়ন্ত্রণ করছেন বলে বিভিন্নভাবে তথ্য ভেসে বেড়াচ্ছে।
উল্লেখ্য, এই বহির্গমন ছাড়পত্র করানোর ঘটনায় অতীতে অনেকেই ফায়দা লুটে কাড়ি কাড়ি টাকা কামাই করে বিত্তবৈভব করেছেন। যা পরবর্তীতে জানাজানি হয়েছে। তবে এক গ্রুপ বিদায় নিলে ওই স্থান দখল নেয় নতুন মুখ। যার কারণে অভিবাসন সেক্টরে বিদেশগামীদের ব্যয় লাগামহীনভাবে বাড়ছে।
চলতি বছরের প্রথম ৪ মাসে (জানুয়ারি-এপ্রিল) জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো থেকে বৈধ ছাড়পত্র নিয়ে সৌদি আরব, কাতার, কুয়েত, জর্ডান, ইতালী, ফ্রান্স, রোমানিয়া, হাঙ্গেরী, কিরগিস্তানসহ বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমিয়েছেন ৩ লাখ ২২ হাজার ২৩৭ জন শ্রমিক। এর মধ্যে সৌদি আরবেই গেছেন ১ লাখ ৬৯ হাজার ৮৬৭ জন। এরপরের অবস্থানে রয়েছে মালয়েশিয়া। ৪৪ হাজার ৭২৭ জন কর্মী দেশটিতে পাড়ি জমায়। তৃতীয় অবস্থানে আছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। এই পর্যন্ত দেশটিতে গেছে ২৬ হাজার ১৯২ জন শ্রমিক। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে সংগ্রহ করা একক ভিসায় এই চার মাসে কর্মী বিদেশে পাড়ি জমিয়েছেন ২০ হাজার ৭৩০ জন শ্রমিক।
অপরদিকে মাসিক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, জানুয়ারি মাসে শ্রমিক গিয়েছিল ৮৭ হাজার ৮৫২ জন। কিন্তু পরের দুই মাসে এই সংখ্যা কমে ৭৪ হাজারে দাঁড়ায়। মানে প্রায় ১২-১৩ হাজার শ্রমিক কম যায়। কিন্তু পরের মাসেই (এপ্রিল) সেটি আবার ৮৫ হাজারে উঠে আসে।
যদিও প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী চলতি বছর বিদেশে ১৫ লাখ শ্রমিক পাঠানোর টার্গেট নেয়ার কথা জানান। এখন এই টার্গেট পরিপূর্ণ করা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইতোমধ্যে বাংলাদেশের বড় সম্ভবনাময় শ্রমবাজার মালয়েশিয়া বন্ধ হয়ে গেছে। এখন এই বাজার বন্ধে কাদের ভূমিকা বেশি ছিল তাদের কর্মকাণ্ড খুঁজতে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করে অনুসন্ধান চলছে। আগামী সপ্তাহে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন তদন্ত কমিটি প্রতিমন্ত্রীর দফতরে জমা দেয়ার কথা রয়েছে।
গতকাল জনশক্তি কর্মসংস্থাণ ব্যুরোর কর্মকাণ্ডের সাথে সম্পৃক্ত রিক্র্যুটিং এজেন্সির মালিকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, বিএমইটির বহির্গমন শাখাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে দুষ্টচক্র। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে এই সেক্টর যতদিন সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ না হবে, ততদিন অভিবাসন সেক্টরে অনিয়ম দুর্নীতি কমবে না। কারণ এখানে ফাইল সই করার নামে লাখ লাখ টাকার ঘুষ লেনদেন হচ্ছে। আর এসবই হচ্ছে বিকাশসহ নানা ফর্মুলায়। ইতোমধ্যে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এসব মনিটরিং করে সংশ্লিষ্ট দফতরে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা