১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
ভারতের দুই রাজ্যে নির্বাচনের ভোটগণনা শুরু

অরুনাচলে বিজেপি সিকিমে জয়ী এসকেএম

-


ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ভোটগণনা শুরু হয়েছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য অরুনাচল প্রদেশ ও সিকিমের বিধানসভা নির্বাচনের ভোটগণনা হয়েছে গতকাল রোববার। প্রথম ধাপে ভোট গ্রহণ হয়েছিল এই দুই রাজ্যে। অরুনাচলে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জিতেছে বিজেপি। আর সিকিমের স্থানীয় দল সিকিম ক্রান্তিকারী মোর্চা (এসকেএম) ৩২ আসনের বিধানসভায় জিতেছে ৩১টি আসন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবর থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

সিকিমে এর আগের সরকারও ছিল সিকিম ক্রান্তিকারী মোর্চার। দলটি এবার বরং আগের চেয়েও বেশি আসন নিয়ে বিধানসভার একমাত্র দলে পরিণত হয়েছে। বিপরীতে সিকিম ডেমোক্র্যাটিক ফোরাম (এসডিএফ) জিতেছে মাত্র একটি আসন। এই নির্বাচনে আর কোনো দল একটি আসনও জেতেনি। এসকেএমের নেতা ও বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং তামাং প্রতিদ্বন্দ্বী এসডিএফের সোমনাথ পদুয়ালকে সাত হাজার ৪৪ ভোটের ব্যবধানে হারিয়েছেন।
নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর সমর্থকদের সামনে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে প্রেম সিং তামাং রাজধানী গ্যাংটকে বলেন, ‘বিরোধীরা যেটা ২৫ বছরে করতে পারেনি, আমরা তা পাঁচ বছরে করে দেখিয়েছি। আর জনগণ তার ভিত্তিতেই ভোট দিয়েছে।’

কিম বিধানসভায় সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও এসডিএফের প্রধান পবন কুমার চামলিং পরাজিত হয়েছেন। দলটির একমাত্র বিজয়ী প্রার্থী ভোজ রাজ রায়।
এ দিকে অরুনাচল বিধানসভা নির্বাচনে ১০টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। একই সাথে ৬০ আসনের বিধানসভায় বিজেপি ৪৬ আসন নিয়ে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দলে পরিণত হয়েছে। এই নির্বাচনে জাতীয় পর্যায়ে বিজেপির মূল বিরোধী দল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস পেয়েছে মাত্র ১টি আসন। অরুণাচল বিধানসভায় বিজেপি ও কংগ্রেসের বাইরে ন্যাশনাল পিপলস পার্টি পেয়েছে পাঁচটি আসন,তিনটি আসন পেয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।

গত ১৯ এপ্রিল ভারতের লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোটের দিনই অরুনাচল প্রদেশের ৬০ আসনে এবং সিকিমের ৩২ আসনে বিধানসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। অরুনাচল প্রদেশে ভোট পড়ে ৮২.৯৫ শতাংশ, সিকিমে ভোট পড়ে ৭৯.৮৮ শতাংশ।
গতকাল রোববার ছিল তার ভোটগণনা। কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে সকাল ৬টা থেকে এই দুই রাজ্যে ভোটগণনা শুরু হয়। অরুনাচল প্রদেশে (৬০) সরকার গড়তে গেলে প্রয়োজন ৩১ আসন। সেখানে বিজেপি জয় পেয়েছে ৪৬ আসনে। এর মধ্যে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আগেই ১০ আসনে জয়ী হয়েছিল বিজেপি। প্রধান প্রতিপক্ষ ‘ন্যাশনাল পিপলস পার্টি’ (এনপিপি) পেয়েছে পাঁচটি আসন, একটি আসনে জয় পেয়েছে শতাব্দীর প্রাচীন দল কংগ্রেস এবং অন্যরা আটটি আসনে জয়ী হয়েছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রেমা খান্ডু এবং উপমুখ্যমন্ত্রী চাওনা মেইন- উভয়েই তাদের নিজ নিজ কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছেন।

অন্য দিকে সিকিমে (৩২) সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজন ১৭ আসন। সেখানে রাজ্যটির ক্ষমতাসীন দল ‘সিকিম ক্রান্তিকারী মোর্চা’ (এসকেএম) ৩১ আসনে জয়ী হয়েছে। প্রধান প্রতিপক্ষ ‘সিকিম ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট’ (এসডিএফ)-এর ঝুলিতে গেছে মাত্র একটি আসন।
জয়ী প্রার্থীদের মধ্যে অন্যতম এসকেএম প্রধান ও মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং তামাং। যদিও রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এবং এসডিএফ প্রধান পবন চামলিং পরাজিত হয়েছেন। এই নিয়ে অরুণাচল প্রদেশে পরপর তিনবার ক্ষমতায় এলো রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা প্রেমা খান্ডুর নেতৃত্বাধীন বিজেপি। অন্য দিকে সিকিমে দ্বিতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় এলো মুখ্যমন্ত্রী প্রেম সিং তামাং-এর নেতৃত্বাধীন এসকেএম। ভোট শেষ হওয়ার পর বিভিন্ন এক্সিট পোলেও বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে অরুনাচল প্রদেশে বিজেপি এবং সিকিমে এসকেএম দলের আসার ইঙ্গিত মিলেছিল। কার্যক্ষেত্রে হলোও তাই।
২০১৯ সালের বিধানসভা নির্বাচনে অরুনাচল প্রদেশে (মোট আসন ৬০) ৪১ আসন পেয়ে সরকার গঠন করে বিজেপি। বিরোধীদের মধ্যে জনতা দল ইউনাইটেড ৭ আসন, এনপিপি ৫ আসন, কংগ্রেস ৪ আসন, পিপলস পার্টি অব অরুনাচল (পিপিএ) ১ আসনে এবং স্বতন্ত্র দলের প্রার্থীরা দুই আসনে জয়ী হয়।

অন্য দিকে গত ২০১৯ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সিকিমে (মোট আসন ৩২) ১৭টি আসন পেয়ে সরকার গড়েছিল প্রেম সিং তামাংয়ের নেতৃত্বাধীন ‘সিকিম ক্রান্তিকারী মোর্চা’ (এসকেএম), রাজ্যটি সাবেক মুখ্যমন্ত্রী পবন কুমার চামলিংয়ের নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলের জোট ‘সিকিম ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট’ (এসডিএফ) পেয়েছিল ১৫টি আসন। আগামীকাল ৪ জুন ভারতের ৫৪৩ আসনে লোকসভা নির্বাচনের ভোটগণনার দিন দেশটির আরো দুই রাজ্য- অন্ধ্রপ্রদেশ (১৭৫) এবং উড়িষার (১৪৭) বিধানসভার আসনের ভোটগণনা হবে।

পশ্চিমবঙ্গের বুথফেরত সমীক্ষা প্রত্যাখ্যান মমতার
হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, শনিবার সপ্তম দফায় ভোটগ্রহণের মধ্য দিয়ে এ নির্বাচন শেষ হয়। নির্বাচনের পরপরই বুথফেরত ফলাফল প্রকাশ শুরু করে বিভিন্ন সংস্থা। এসব সমীক্ষায় বলেছে, পশ্চিমবঙ্গে এবার তৃণমূল নয়, বড় জয় পেতে চলেছে বিজেপি। তবে বুথফেরত এ সমীক্ষাকে একেবারেই গুরুত্ব দেননি পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ সমীক্ষাকে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) ভাঁওতা এবং বিরোধীদের মনোবল ভাঙতে বিজেপির চিত্রনাট্য বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
টিভি নাইন চ্যানেলে দেয়া সাক্ষাৎকারে তৃণমূল নেত্রী বলেছেন, আমাদের রাজ্য নিয়ে যেটা দেখাচ্ছে, তাকে আমি বিশ্বাস করি না, বিশ্বাস করি না, বিশ্বাস করি না। এটি একেবারে ভেগ, একেবারে ফেক। এ সময় তৃণমূল কর্মীদের শক্ত থাকার আহ্বান জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্য দিকে বিজেপির রাজ্য মুখপাত্র শমিক ভট্টাচার্য বলেছেন, বুথফেরত সমীক্ষার চেয়েও ৩০টির বেশি আসনে জয় পাবে তার দল।
লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে সবচেয়ে বড় দল হতে চলেছে বিজেপি : শনিবার সপ্তম দফার ভোট শেষে একাধিক বুথফেরত সমীক্ষায় এমনই তথ্য উঠে এসেছে। এবিপি আনন্দ ও সি-ভোটার তাদের সমীক্ষায় বলেছে, এবার বিজেপি ২৩ থেকে ২৭টি আসন পেতে পারে। তৃণমূল ১৩ থেকে ১৭টি এবং বাম কংগ্রেস জোট ১ থেকে ৩টি আসন পেতে পারে।

সাক্ষাৎকারে মমতা বলেন, ‘সংবাদমাধ্যম কী করে বলে দিচ্ছে, ওই আসনে ও জিতবে, অমুক আসনে কে জিতবে... কত টাকার বিনিময়ে? আমি এই সংবাদমাধ্যমের হিসাব মানি না। কর্মীদের বলব শক্ত থাকতে। গণনা ভালো করে করতে; যা দেখিয়েছে সংবাদমাধ্যম, তার দ্বিগুণ পাবো। প্রতিটি আসনে আমরা জিতব।
তবে রাজ্যে তৃণমূল ঠিক কতগুলো আসন পাবে, তা নিয়ে অবশ্য কোনো সংখ্যা জানাননি মমতা। সেই প্রশ্নে তৃণমূল নেত্রী বলেন, আমি কোনো নম্বরে যাব না। কিন্তু একটা কথা আপনাদের বলতে পারি, আমরা যেভাবে মাঠে-ময়দানে নেমে কাজ করেছি, লোকের চোখ দেখেছি, তাতে আমার কখনো মনে হয়নি, মানুষ আমাদের ভোট দেবেন না।
বিরোধী ইন্ডিয়া জোট ক্ষমতায় এলে মমতার দল কি বাইরে থেকে সমর্থন করবে নাকি সরকারে অংশ নেবে, এই প্রশ্নের জবাবে তৃণমূল নেত্রী বলেন, আমি আগে ফল দেখব। ফল দেখে হিসাব করব। আমাদেরও একটা অঙ্ক আছে। মমতা বলেন, আমরা চেষ্টা করব, আরো আঞ্চলিক দল যেন আমাদের সাথে আসে। আর এর মধ্যে মোদিজিকে যারা জিতিয়ে দিচ্ছেন, তাদেরও বলে দিই, এবার কিন্তু অত সহজ অঙ্কে, অত সহজে পার পাওয়া যাবে না। এই সরকার আদৌ কত দিন চলবে, সন্দেহ আছে। ইন্ডিয়ার শরিক ডিএমকে, আপ, এসপি লোকসভায় ভালো ফল করবে বলেও আশাবাদী মমতা।

 


আরো সংবাদ



premium cement
ইসরাইলের সাথে সঙ্ঘাতে আগ্রহী নন সিরিয়ার নতুন নেতা সাবেক ফুটবলার কাভেলাশভিলিই জর্জিয়ার প্রেসিডেন্ট ঘড়ির সময় বদলাতে চান না ট্রাম্প ভারতীয় মুসলিমদের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়াতে অস্ত্র বাংলাদেশ : ওয়েইসি সিরিয়ার বিদ্রোহীদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ রাখছে যুক্তরাষ্ট্র খেয়ালখুশিমতো খরচ হয়েছে জলবায়ু তহবিলের অর্থ গুমে শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততা পেয়েছে কমিশন : র‌্যাব বিলুপ্তির সুপারিশ আরাকানে সাড়ে ৪ শ’সেনা নিহত, জান্তার নিয়ন্ত্রণ শেষ বিপাকে রোহিঙ্গারা ভারতসহ সাত ‘অসহযোগী’ দেশের তালিকা ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের সিরীয়রা স্বাধীনতা উদযাপনের সময় দামেস্কে ইসরাইলের হামলা আগামীতে সবাইকে নিয়ে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ে তোলা হবে

সকল