প্রকট বৈরিতা রাখলে দলগুলোর জন্য সামনে এগিয়ে যাওয়া কঠিন
- বিশেষ সংবাদদাতা
- ০৩ জুন ২০২৪, ০০:০০
বিরাজমান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে বৈরিতা, যেটা অত্যন্ত প্রকট। এ বৈরিতা ধরে রাখলে সামনে এগোনো কঠিন হবে। বৈরিতা পরিহার করে দলগুলোকে আলোচনার টেবিলে বসতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচন যদি ধাপে ধাপে আয়োজন করা যায় তাহলে নির্বাচন আরো গ্রহণযোগ্য হবে। এতে নির্বাচনের আয়োজন করতেও সহজ হবে।
আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের সভা কক্ষে গতকাল ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান ও তার কয়েকজন সহকর্মীর সাথে বৈঠকের পর গণমাধ্যমকে এ কথা বলেন সিইসি। বৈঠকে সংসদ নির্বাচন পাঁচ দফায় করার পরামর্শ দেয় টিআইবি। তাদের এই পরামর্শের সাথে ইসি একমত জানিয়ে সিইসি বলেন, আমাদের আইনে সীমাবদ্ধতা আছে। আমরা সেটিও স্বীকার করেছি।
সিইসি বলেন, আমরা টিআইবিকে বলেছি- জাতীয় নির্বাচন ধাপে ধাপে করা যায় কি না, সে ব্যাপারে জনমত গড়ে তুলতে। কারণ ধাপে ধাপে নির্বাচন আয়োজন করতে পারলে নির্বাচনকে আরো বেশি সুষ্ঠু করা যাবে। কারণ তখন আরো বেশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করা যাবে। আরো বেশি পোলিং এজেন্ট মোতায়েন করা সম্ভব হবে।
সিইসি বলেন, সংস্কারের মাধ্যমে যদি পদ্ধতিগত উন্নয়ন করা যায় তাহলে ভোটে জনগণের অংশগ্রহণ বাড়বে। রাজনৈতিক সমঝোতা না হলে নির্বাচন স্ট্যাবলও হবে না। সিইসি জানান, ভবিষ্যতে নির্বাচনী আইনের সংস্কার করতে পরামর্শ দেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচন কমিশনের একার পক্ষে কখনো নির্বাচনকে সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ করা সম্ভব নয় জানিয়ে সিইসি বলেন, এটি করতে হলে সব রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা প্রয়োজন।
নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতার সীমাবদ্ধতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের সামর্থ্য সীমিত। যতটুকু করা সম্ভব আমরা চেষ্টা করি। আমাদের অনন্ত সক্ষমতা আছে, তা মোটেই না। নির্বাচন কমিশন একা কখনোই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পারবে না। যদি না রাষ্ট্র ও সরকারের পলিটিক্যাল উইলের সপক্ষে থাকে। রাষ্ট্র ও সরকারের পলিটিক্যাল উইল সপক্ষে থাকলে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সঠিক দায়িত্ব পালন করতে বাধ্য হবে।
টিআইবিকে কমিশন থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল জানিয়ে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আমরাই তাদের আমন্ত্রণ করেছিলাম। তারা বলেছে, আমরা তথ্যটা যেন দ্রুত তুলি। কিছু ক্ষেত্রে তারা বলেছে, আমরা দ্রুত তথ্য দিই না। আবার কিছু ক্ষেত্রে বলেছে আমরা ত্বরিতগতিতে তথ্য দিয়েছি, তারা এর প্রশংসা করেছে। তারা বলেছে, আমরা কিছু ক্ষেত্রে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করছি না। আমাদের কমিশনার আলমগীর সাহেব বলেছেন, আমাদের আইনের সীমাবদ্ধতা রয়েছে, যে কতটুকু করতে পারব বা পারব না। আমাদের হলফনামা দেয়ার কথা বলা হয়েছে, হলফনামা ওয়েবসাইটে তুলে দিয়েছি। কিন্তু প্রার্থীর সম্পত্তি বিশ্লেষণ করে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য কোনো দায়িত্ব আমাদের দেয়া হয়নি।
নির্বাচন প্রসঙ্গে হাবিবুল আউয়াল বলেন, টিআইবি মনে করে নির্বাচন সুন্দর ও ফেয়ার হয়েছে কিন্তু একটা ঘাটতি রয়ে গেছে। গণতান্ত্রিক চেতনা থেকে যে ইনক্লুসিভ নির্বাচন, সেটা হয়নি। আমরা বলেছি, দেশের যে সমস্যা, তা অনেকটা রাজনৈতিক। এসব সমস্যা নিরসন না হলে নির্বাচনব্যবস্থা আরো স্টেবল হবে না। রাজনৈতিক বোঝাপড়াটা হয়ে গেলে নির্বাচন আরো সুন্দর ও সুষ্ঠু হতে পারে। সিইসি বলেন, তারা (টিআইবি) বলেছে, আমরাও বলেছি সিস্টেম পরিবর্তনের কথা। আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের কথা বলা হয়েছে। একাধিক দিনে ভোটের কথা বলা হয়েছে। আমরাও বলেছি এটা সম্ভব হলে নির্বাচনে অধিক সংখ্যক ফোর্স নিয়োগ করা সম্ভব হবে। মনিটরিং সহজ হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা