সৈয়দপুরে ভোট কিনতে বাধা দেয়ায় হামলা ভাঙচুর ও লুটপাট
- মো: জাকির হোসেন সৈয়দপুর (নীলফামারী)
- ২১ মে ২০২৪, ০১:০২
টাকা দিয়ে ভোট কেনার সময় বাধা দেয়ায় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে প্রতিপক্ষের সমর্থকদের বাড়িতে হামলা ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জুয়েল চৌধুরীকে অপদস্থ করার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ মিলেছে। সঙ্ঘবদ্ধ হামলায় চারটি বাড়ি তছনছ, ৫ লক্ষাধিক টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুট, ৭ জনকে আহত করাসহ কয়েক নারীর শ্লীলতাহানি ঘটানোর কথা বলা হয়েছে।
অন্যদিকে সাবেক চেয়ারম্যানকে অপদস্থ করার ঘটনা ধামাচাপা দিতে মিথ্যে অভিযোগ সাজানো হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। গত রোববার সন্ধ্যা ৭টায় উপজেলার খাতামধুপুর ইউনিয়নের খালিশা বেলপুকুর এলাকার হাজীপাড়া ও খালিশাপাড়ার এই ঘটনার প্রেক্ষিতে একটি পক্ষ ৩৩ জনের নামসহ অজ্ঞাত ৩ থেকে ৪ শ' জনের বিরুদ্ধে সৈয়দপুর থানায় লিখিত এজাহার দায়ের হয়েছে।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত রোববার বিকেল থেকে খালিশা হাজীপাড়া এলাকায় সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী রিয়াদ আরফান সরকার রানার দোয়াত-কলম মার্কার পক্ষে টাকার বিনিময়ে ভোট কিনছিলেন ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জুয়েল চৌধুরী। এ সময় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আজমল হোসেন সরকারের সমর্থক ও কর্মী খালিশাপাড়ার ফিজানুর রহমানের চৌধুরীর ছেলে সোহাগ চৌধুরী (৩০) ও আব্দুল মজিদ চৌধুরীর ছেলে শুভ চৌধুরী (২৮) বাধা দেন। এতে জুয়েল চৌধুরী ক্ষিপ্ত হয়ে ওই দুই যুবককে বেধড়ক মারধর করে। পরে এলাকায় উভয় পক্ষের ধাক্কাধাক্কি হয়। খবর পেয়ে আব্দুল মজিদ চৌধুরী এগিয়ে গিয়ে দুই পক্ষকে শান্ত করেন। এর কিছুক্ষণ পর জুয়েল চৌধুরী মোবাইল করে লোকজনকে সমবেত করেন।
পরে তার নির্দেশে ও অংশগ্রহণে একদল মানুষ অতর্কিত হামলা চালায় সোহাগ চৌধুরীর বাড়িতে। সেখানে ঘরে দরজা ভেঙে ভাঙচুর করে এবং আলমিরা খুলে নগদ দুই লাখ টাকা বের করে নেয়। এ সময় বাধা দেয়ায় ফিজানুর চৌধুরীর স্ত্রীকে আঘাত করে তার গলার চেইন ও কানের দুল ছিনিয়ে নিয়ে ঘরবাড়ি তছনছ করে।
একইভাবে শুভ চৌধুরীর বাড়ি এবং হাজীপাড়ার আব্দুল করিম চৌধুরীর বাড়িতেও হামলা, ভাঙচুর করা হয়। শুভ চৌধুরীর বাড়ি থেকে নগদ ২ লাখ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুট করে। আব্দুল করিমের বাড়িতে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। বাড়িতে পুরুষ মানুষ না থাকায় নারীরা বাধা দিলে তাদের উপর চড়াও হয়ে কাপড় ছিড়ে ফেলে ও শ্লীলতাহানি ঘটায়। এমনকি পাসের দরিদ্র দিনমজুর বাচ্চুর বাড়িতেও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।
ঘটনার খবর পেয়ে প্রথমে সৈয়দপুর থানার জরুরি সেবা টিম ও পরে এএসপি (সার্কেল) রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পরে রহমান চৌধুরী থানায় উপস্থিত হয়ে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জুয়েল চৌধুরী (৩৮) তার ভাই শাকিল চৌধুরী (২৪), রুবেল চৌধুরী (৩৫), জিয়াউর রহমান চৌধুরী (বাবুল)সহ মোট ৩৩ জনের নাম উল্লেখপূর্বক অজ্ঞাত নামা আরো ৩০০-৪০০ জনের বিরুদ্ধে লিখিত এজাহার দায়ের করেন। অভিযোগের বিষয়ে জানতে জুয়েল চৌধুরীর মোবাইলে কল দিলে তিনি বলেন, মূলত আমি দোয়াত-কলম মার্কার নির্বাচনী কাজ করছি। কিন্তু ঘটনার সময় আমি কোনো লিফলেট বা হ্যান্ডবিল নিয়ে ভোটের কাজে ছিলাম না। শুধু এলাকার লোকজনকে নিয়ে হোটেলে চা পান করছিলাম। অথচ সোহাগ চৌধুরী ও শুভ চৌধুরী টাকা দিয়ে ভোট কেনার অহেতুক মিথ্যে অভিযোগে আমাকে হেনস্থা করার চেষ্টা করে। এতে আমার সাথে থাকা লোকজন নিষেধ করলেও তারা উগ্র আচরণ করলে পাবলিক সেন্টিমেন্ট গ্রো হয়।
কারণ আমি দুইবারের নির্বাচিত সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান। ফলে তাৎক্ষণিক উত্তেজিত লোকজন সোহাগ চৌধুরী ও শুভ চৌধুরীর প্রতিবাদ করে। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে বাগি¦তণ্ডার একপর্যায়ে সোহাগ ও শুভ পালিয়ে যায়। লোকজনও তাদের পিছু নিয়ে বাড়িতে চড়াও হয়। পরে আমি তাদের নিয়ন্ত্রণ করি। ভাঙচুর লুটপাট বা মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু সোহাগ ও শুভ’র পরিবার নাটক সাজিয়ে মিথ্যে অভিযোগ করে আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এ ব্যাপারে সৈয়দপুর থানার ওসি শাহা আলম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা