আ’লীগ নয়, অদৃশ্য শক্তি দেশ চালাচ্ছে
যুবদলের সমাবেশে মির্জা ফখরুল- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ১২ মে ২০২৪, ০০:০৫
আওয়ামী লীগ নয়, অদৃশ্য শক্তি দেশ পরিচালনা করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল শনিবার বিকেলে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী যুবদল আয়োজিত সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ দাবি করে তারা দেশ চালাচ্ছে। আসলে কি তারা দেশ চালাচ্ছে? তারা দেশ চালায় না, এক অদৃশ্য শক্তি দেশ চালাচ্ছে এবং যাদের নির্দেশে তারা আজকে বাংলাদেশে মানুষের অধিকারগুলো কেড়ে নিয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের রাষ্ট্রযন্ত্র, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসন, বিচারব্যবস্থা প্রত্যেকটা প্রতিষ্ঠানকে তারা আজকে কুক্ষিগত করেছে, দলীয়করণ করেছে। তাদের লোক ছাড়া কেউ কোথাও যেতে পারে না। চাকরিও পায় না। অনেকে বিসিএস পরীক্ষায় পাস করে কিন্তু তাদের সবাইকে চাকরি দেয়া হয় না, তাদের ডিএনএ টেস্ট করা হয়। তারা কোন দলের, তাদের বাবা-মামা-চাচা-ভাই কেউ বিএনপির সাথে জড়িত কিনা? আর টাকা ছাড়া কোনো চাকরি হয় না। একজন স্কুলের পিয়নের চাকরিও ১৫ লাখ টাকার নিচে হয় না। এমন অবস্থায় তারা দেশটাকে নিয়ে এসেছে।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুসহ রাজবন্দীদের মুক্তি, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে এই বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। ফকিরেরপুল থেকে কাকরাইল মোড় পর্যন্ত হাজার হাজার নেতাকর্মী মিছিল নিয়ে এই সমাবেশে অংশ নেয়।
খালেদা জিয়াকে প্রতিহিংসামূলক নিপীড়ন নির্যাতনে ক্ষোভ প্রকাশ করে অবিলম্বে তার মুক্তির দাবির কথাও উচ্চারণ করেন বিএনপি মহাসচিব। সৌদি আরব থেকে পবিত্র ওমরাহ পালনের পর এই প্রথম বিএনপি মহাসচিব কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিলেন।
সমাবেশে ফখরুল বলেন, ওরা সম্পূর্ণভাবে নির্বাচনী ব্যবস্থাকে গিলে খেয়ে ফেলেছে। প্রতিবার নির্বাচনে তারা একেকটা নতুন কৌশল গ্রহণ করে। এবার করেছে ডামি নির্বাচন। সেই সাথে গৃহপালিত দল তারা সিলেক্ট করে দেবে যে আপনার দল থেকে ১০ জনকে আমরা পার্লামেন্টে সিট দেবো। যদি না দেয়া হয় তখন তারা কান্নাকাটি জুড়ে দেয় তাহলে আমি নির্বাচনে যাবো না। তখন তারা (ক্ষমতাসীনরা) বলে ঠিক আছে ঠিক আছে তুমি ১০টাই পাবা। এই একটা অবস্থার মধ্যে নির্বাচনী ব্যবস্থাকে নিয়ে গেছে তারা। একটা তামাশা চলছে। অথচ আমরা দেশ স্বাধীন করেছিলাম এ দেশের মানুষের রক্ত দিয়ে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য। তিনি বলেন, তারা (আওয়ামী লীগ) বলে এখন নাকি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এটা যদি গণতন্ত্রের নমুনা হয় তাহলে এরশাদ সাহেবরা যাবেন কোথায়? তাহলে হিটলারথযাবে কোথায়, মুসলিনী যাবে কোথায়? নমরুদ-ফেরাউন যাবে কোথায়? হিটলার-নমরুদ-ফেরাউন কেউ টিকে থাকতে পারে নাই মানুষের ওপর নির্যাতন করে, টিকে থাকতে পারে নাই এরশাদ ও আইয়ুব খানও। এটা ভুলে যাবেন না।
আন্দোলন চলছে, চলবে : মির্জা ফখরুল বলেন, এ দেশের মানুষ লড়াকু মানুষ, বিদ্রোহী মানুষ। সব কিছু সব সময়ে মেনে নেয় না। সাময়িকভাবে হয়ত আন্দোলনে কিছুটা ভাটা পড়তে পারে। অনেকে বলেন যে, আবার আন্দোলন শুরু হবে। আন্দোলন তো চলছে। যখন আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারাগারের মধ্যে আটক, আমার নেতা তারেক রহমান, যাকে মিথ্যা মামলায় বিদেশে নির্বাসিত করে রাখা হয়েছে তিনি দেশে ফিরতে পারেন না, যখন হাজারো নেতাকর্মী আটক হয়ে আছে তখন আন্দোলন তো চলবেই।
মির্জা ফখরুল বলেন, ওদের লজ্জা-শরম বলতে কিছু নাই এখন। লজ্জা-শরমের মাথা খেয়ে ফেলেছে। এমনভাবে কথা বলে যে, তারা এখানে দণ্ডমূণ্ডের কর্তা। আসলেও এ দেশকে তারা পৈতৃক সম্পত্তি মনে করে। এটা মনে করে এই দেশ তাদের সম্পত্তি যেমন খুশি সেভাবে ব্যবহার করবেন। জনগণের যে চাহিদা সে দিকে তারা তাকান না। আমরা এখনো বলি, এখনো সময় আছে জনগণকে বাধ্য করবেন না।
স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ মাঝে-মধ্যে বলেন, বিএনপি এখন গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য একটা পায়তারা করতেছে। বিএনপির আন্দোলন করার ক্ষমতা নেই। আমরা বলতে চাই বিএনপি আন্দোলন করার ক্ষমতা আছে কি না আছে সেটা আপনারা ২৮ অক্টোবর দেখেছিলেন। সেই কারণেই জবরদস্তিমূলকভাবে সমাবেশকে বাধাগ্রস্ত করেছিলেন বোমা ফাটিয়ে, গুলি করে সন্ত্রাসী কায়দায় আমাদের আন্দোলনকে নস্যাৎ করার চেষ্টা করেছেন।
যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি মামুন হাসানের সভাপতিত্বে এবং শফিকুল ইসলাম মিল্টন, গোলাম মওলা শাহিন, ইছহাক সরকারের যৌথ সঞ্চালনায় সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, যুব দলের মোনায়েম মুন্না, নুরুল ইসলাম নয়ন, মাহবুবুল হাসান ভূঁইয়া পিঙ্কু, মহানগর দক্ষিণ বিএনপি রফিকুল আলম মজনু, স্বেচ্ছাসেবক দলের এস এম জিলানী, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, ছাত্রদলের আবু আফসান মোহাম্মদ ইয়াহিয়া প্রমুখ।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা