১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

নড়াইলে আ’লীগ নেতাকে গুলি করে হত্যা : গুলিবিদ্ধ ২

বালিয়াকান্দিতে চেয়ারম্যান প্রার্থীর বাড়িতে প্রতিপক্ষের হামলা
-

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার মল্লিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তফা কামালকে (৪৮) গুলি করে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষরা। শুক্রবার (১০ মে) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে লোহাগড়ার মঙ্গলহাটা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঢাকায় নেয়ার পথে ওই দিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে মারা যান তিনি। গতকাল শনিবার বিকেলে মোস্তফা কামালের জানাজা শেষে মঙ্গলহাটা গ্রামের বাড়িতে তাকে দাফন করা হয়েছে। তিনি লোহাগড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক এবং মল্লিকপুর ইউপির দুইবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন।
এদিকে মোস্তফা কামালকে গুলির প্রায় ২ ঘণ্টা পর তাদের সমর্থকরা অপরপক্ষের ফয়সাল শেখ (২৪) এবং পলাশ মোল্যাকে (৪০) গুলি করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। চিকিৎসার জন্য তাদের খুলনায় পাঠানো হয়েছে। তারা আশঙ্কামুক্ত আছেন।
পুলিশ ও নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানান, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় মোটরসাইকেলে লোহাগড়ার মঙ্গলহাটা এলাকায় সমির সিকদারের বাড়ি কাছে পৌঁছালে প্রতিপক্ষরা আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তফা কামালকে গুলি করে। এতে তিনি গুলিবিদ্ধ হলে প্রথমে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়ার পথে তিনি মারা যান। তার বুক ও পিঠে গুলি লেগেছিল।
এলাকাবাসী জানান, উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তফা কামালের সমর্থকদের সাথে প্রতিপক্ষ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা আকরাম হোসেন লিপনের সমর্থকদের দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এর জের ধরে লিপন সমর্থকরা মোস্তফা কামালকে গুলি করেছে। দুইজনের বাড়িই লোহাগড়ার মঙ্গলহাটা গ্রামে। ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত মল্লিকপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে একই গ্রাম (মঙ্গলহাটা) থেকে মোস্তফা কামাল এবং আকরাম হোসেন লিপন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে যান। এ নিয়ে নির্বাচনের সময় থেকে দুইপক্ষের মধ্যে বিরোধ তুঙ্গে উঠে। ২০২২ সালে আকরাম হোসেন লিপনের একটি হাত কেটে বিচ্ছিন্ন করে প্রতিপক্ষরা। এর জেরে মোস্তফা কামালকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন নিহতের পরিবারের সদস্যরা।
এ ব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপার মেহেদী হাসান বলেন, এলাকায় সামাজিক আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ রয়েছে। জড়িতদের আটকের চেষ্টা চলছে।
বালিয়াকান্দিতে চেয়ারম্যান প্রার্থীর বাড়িতে প্রতিপক্ষের হামলা
রাজবাড়ী প্রতিনিধি জানান, ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজবাড়ীর রাজনীতি। গতকাল জেলার বালিয়াকান্দিতে চেয়ারম্যান প্রার্থী আনারস প্রতীকের প্রার্থী মো: আবুল কালাম আজাদের বাড়িতে প্রতিপক্ষের হামলার মধ্য দিয়ে সরকার দলীয় বিরোধ আরো প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছে। এ উপজেলায় রেলমন্ত্রীর চাচাতো ভাইসহ দুইজন হেভিওয়েট প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আগামী ২১ মে এই উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
নির্বাচনে আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদের নিজ বাসভবনে প্রতিপক্ষ মোটরসাইকেল প্রতীকের সমর্থকেরা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার রাত ৯টার দিকে এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
এ ঘটনায় আবুল কালাম আজাদের এক কর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন। আহত কর্মীর নাম আব্দুল্লাহ (৩৫)। তিনি নবাবপুর ইউনিয়নের চর-দক্ষিণবাড়ী গ্রামের তোফাজ্জেল হোসেনের ছেলে। আহত আব্দুল্লাহকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে বালিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। এ বিষয়ে বালিয়াকান্দি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
হামলার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে সহকারী কমিশনার (ভূমি) হাসিবুল হাসান ও বালিয়াকান্দি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন ঘটনাস্থলে যান।
হাসিবুল হাসান বলেন, খবর পেয়ে আমরা চেয়ারম্যানের বাসভবনে চলে আসি। এখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন হয়েছে, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক।
তিনি বলেন, বাড়িতে হামলার কিছু নমুনা আমরা পেয়েছি। ভাঙা জানালা দেখতে পেয়েছি। আহত ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে থানা প্রয়োাজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
বালিয়াকান্দি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement