ট্রাম্পের উপস্থিতিতে আদালতকে ঘটনার বর্ণনা স্টর্মির
- নয়া দিগন্ত ডেস্ক
- ০৯ মে ২০২৪, ০০:০০
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলীয় প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে যৌন অভিজ্ঞতার বিশদ বিবরণ আদালতে তুলে ধরেছেন সাবেক পর্ণ তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলস। যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনা ধামাচাপা দিতে ঘুষ দেয়ার অভিযোগে ৭৭ বছর বয়সী ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যে ফৌজদারি মামলা চলছে, গত মঙ্গলবার তার শুনানিতে সাক্ষ্য দেন ৪৫ বছর বয়সী ড্যানিয়েলস। সিএনএন ও রয়টার্স।
২০০৬ সালে হোটেল কক্ষে ট্রাম্পের সাথে কিভাবে তার যৌন মিলন হয়েছিল, তার খুঁটিনাটি তিনি তুলে ধরেন জবানবন্দিতে। সেই বিবরণ এতটাই বিশদ ছিল যে তাকে থামিয়ে দিয়ে বিচারককে বলতে হয়েছে, এতটা না বললেও পারতেন স্টর্মি ড্যানিয়েলস। সাবেক এই পর্ন তারকা আদালতকে বলেন, ঘটনাটি ঘটে যাওয়ার পর এ নিয়ে আর না ভাবার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। বিষয়টা জানাজানি হওয়ার আশঙ্কা করছিলেন।
সাক্ষীর কাঠগড়ায় বসে কয়েক ঘণ্টা ধরে নিজের বক্তব্য বলে যান স্টর্মি ড্যানিয়েলস। ট্রাম্পের সাথে সাক্ষাৎ এবং ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে মুখ বন্ধ রাখার জন্য ঘুষ দেয়ার ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দেন তিনি। ওই বছর নির্বাচনে জিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হন ট্রাম্প। ড্যানিয়েলস জুরিদের বলেন, ২০১৮ সালে মুখ বন্ধ রাখার বন্দোবস্তটি প্রকাশ্যে আসার পর তার জীবন এলোমেলো হয়ে যায়; তিনি একঘরে হয়ে পড়েন আর নিজের বাড়িতেও নিগ্রহের শিকার হন।
তিনি বিস্তারিত বর্ণনা করতে থাকলে টাম্পের আইনজীবীরা আপত্তি তোলেন। ড্যানিয়েলসের সাক্ষ্যে এত বাড়তি কথা ছিল যে ট্রাম্পের আইনজীবীরা ‘মিসট্রায়ালের’ আবেদন তোলেন। শুধু ‘জুরিদের জ্বালাতন করার জন্যই’ তিনি এত কিছু বলছেন- এমন যুক্তি দেখান আইনজীবীরা। বিচারক হুয়ান মার্চেন তাদের অনুরোধ খারিজ করে দেন কিন্তু একমত হন যে ড্যানিয়েলস কিছু ক্ষেত্রে বেশি কথা বলে ফেলেছেন।
ট্রাম্পের আইনজীবীরা সাক্ষীর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং ট্রাম্পের সাথে কাটানো সময় নিয়ে বছরের পর বছর ধরে তিনি যেসব বক্তব্য দিয়েছেন, সেগুলোর অসঙ্গতি নিয়ে ড্যানিয়েলসকে প্রশ্নবাণে জর্জরিত করেন। ড্যানিয়েলস স্বীকার করেন, তিনি ট্রাম্পকে ‘ঘৃণা’ করেন এবং তিনি নিজের গল্প থেকে টাকা বানাতে চেয়েছিলেন। তবে কেন তিনি ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর সাত বছর চুপ ছিলেন আর যেসব বিষয় অস্বীকার করেছিলেন, তা স্পষ্ট হয়নি।
ড্যানিয়েলস তার সাক্ষ্যে বলেন, ২০১৬ সালের নির্বাচনের আগেই ট্রাম্পের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করতে চেয়েছিলেন তিনি, কারণ নির্বাচনের জিতলে ট্রাম্প আর কিছু দেবেন না বলে তিনি উদ্বিগ্ন ছিলেন। আদালতে উপস্থিত ট্রাম্প সব দেখতে থাকলেও তার মধ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। তিনি ড্যানিয়েলসের সাথে যৌনমিলনের কথা এবং মুখ বন্ধ রাখার জন্য তাকে এক লাখ ৩০ হাজার ডলার দেয়ার কথা অস্বীকার করে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আরো তিনটি ফৌজদারি মামলা আছে। সেগুলোর তুলনায় এটিকে কম গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হলেও ৫ নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে কেবল এ মামলারই রায় আসতে পারে। অন্য যে মামলাগুলোতে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, সেগুলো হলো- ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পরাজয়ের পর ফলাফল উল্টে দেয়ার চেষ্টা এবং প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব থেকে সরার পর রাষ্ট্রীয় গোপনীয় নথি অসাবধানে সংরক্ষণ করা সংক্রান্ত। এই তিনটি মামলায়ই ট্রাম্প নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা