সীমান্ত হত্যা দুঃখজনক ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সাথে আলাপ হবে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
- কূটনৈতিক প্রতিবেদক
- ০৯ মে ২০২৪, ০০:০০
সীমান্ত হত্যাকে ‘দুঃখজনক’ আখ্যায়িত করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আমরা সীমান্ত হত্যার বিরোধী। এ ধরনের হত্যা যাতে আর সংঘটিত না হয়, সে জন্য বাংলাদেশ ও ভারত কাজ করছে। আমাদের মধ্যে নিয়মিত আলোচনা চলছে। ঢাকা সফরকালে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিজয় কুমার কোয়েত্রার সাথেও বিষয়টি নিয়ে আলাপ হবে।
গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলা সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) ছোড়া গুলিতে দুই বাংলাদেশী যুবক নিহত হওয়ার বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয়েছিল। গতকাল সকালে তেঁতুলিয়া উপজেলার খয়খাটপাড়া এলাকার সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর ভারতীয় থানা পুলিশ লাশ দুটি নিয়ে গেছে।
ভারতের পররাষ্ট্রসচিব গতকাল সন্ধ্যায় দুই দিনের সফরে ঢাকা এসে পৌঁছান। আজ তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এ সময় দিল্লি সফরের আমন্ত্রণ জানিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির চিঠি তিনি শেখ হাসিনার হাতে তুলে দেবেন। ভারতের জাতীয় নির্বাচনের পর আগামী জুন অথবা জুলাইয়ে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের পরিকল্পনা রয়েছে।
একইদিন বিনয় কোয়াত্রা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন এবং পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সাথে বৈঠক শেষে মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেবেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিকল্পিত দিল্লি সফরের কর্মসূচিসহ দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট ইস্যুতে আলোচনা হতে পারে। সফরের ব্যাপারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভারত আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী। দুই দেশের মধ্যে অনেক ইস্যু রয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই আমরা বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা করব।
দক্ষিণ ও মধ্য-এশিয়াবিষয়ক মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুর আসন্ন ঢাকা সফর সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে হাছান মাহমদু বলেন, তিনি মূলত রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলোচনার জন্য আসছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আমাদের চমৎকার সম্পর্ক রয়েছে। দু’দেশের বন্ধন জোরদার করতে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে।
প্রসঙ্গত, ডোনাল্ড লু আগামী ১৪ মে দুই দিনের সফরে ঢাকা আসছেন। তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার আসার দিনক্ষণ সুনির্দিষ্টভাবে জানাননি।
ব্রিটিশ প্রতিমন্ত্রীর সাথে বৈঠক : এর আগে ইন্দো-প্যাসিফিক বিষয়ক ব্রিটিশ প্রতিমন্ত্রী অ্যান-মেরি ট্রেভেলিয়ান ড. হাছান মাহমুদের সাথে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে ট্রেভেলিয়ান বলেন, আমরা পরস্পরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিস্তৃত ইস্যুতে কথা বলেছি। এর মধ্যে ছিল জ্বালানি রূপান্তর, মানবাধিকার ও গণতন্ত্র, অভিবাসন, রোহিঙ্গাদের নিয়ে চ্যালেঞ্জ, ২০২৬ সালের পর স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) কাতার থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ এবং দুই দেশের ভবিষ্যৎ বাণিজ্যিক প্রবৃদ্ধি।
ব্রিটিশ প্রতিমন্ত্রী ট্রেভেলিয়ান রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ায় বাংলাদেশের উদারতাকে সাধুবাদ জানান। রোহিঙ্গা সঙ্কট মোকাবেলায় তিনি ব্রিটেনের অব্যাহত রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন।
ড. হাছান মাহমুদ এলডিসি থেকে টেকসই উত্তরণে সমর্থন দেয়ার জন্য ২০৩২ সাল পর্যন্ত তৈরী পোশাকসহ বাংলাদেশী রফতানি পণ্যের জন্য ব্রিটেনের বাজারে শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা চান। বলেন, বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে ব্যবহৃত জ্বালানির ৪০ শতাংশ পুনঃব্যবহার্য উৎস থেকে জোগান দেয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এ লক্ষ্য অর্জনের জন্য সৌর বিদ্যুৎ, বায়ুচালিত বিদ্যুৎ, বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন নিয়ে সরকার কাজ শুরু করেছে।
২০২৩ সালে বাংলাদেশে সর্বোচ্চ সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগ (এফডিআই) করার জন্য ব্রিটেনকে ধন্যবাদ জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশা করেন, জলবায়ুর পরিবর্তন মোকাবেলায় বাংলাদেশের পাশে থাকবে ব্রিটেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা