১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

সীমান্তে নেই গুলির শব্দ আছে আতঙ্ক

-

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে বিজিপির ঘাঁটিগুলো দখলে নিয়েছিল বিদ্রোহী আরাকান আর্মি। তবে মে মাস থেকে আবারো জান্তাবাহিনী প্রতিশোধ নিতে পারে এই শঙ্কায় বিদ্রোহীরা তাদের শক্তি বাড়িয়ে কৌশল অবলম্বন করছেন। সীমান্ত পরিস্থিতি এখন শান্ত। তবুও আতঙ্কপুরোপুরি কাটেনা সীমান্তবাসীর। উখিয়ার পার্শ্ববর্তী বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তের খুব কাছেই জান্তাবাহিনীর ঘাঁটি দখল করে সেখানে আরাকান আর্মি যোদ্ধারা অবস্থান করছেন।
সরেজমিন গিয়ে ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের সামনে দিয়ে স্পষ্টই দেখা আরাকান আর্মির যোদ্ধাদের। ঘুমধুম এলাকার স্থানীয় ফরিদ আলম বলেন, আমার বাড়ি থেকে দেখা যায় তাদের। তারা নিচে নেমে খাল-বিলে অনেক সময় মাছ ধরেন। পাহাড়ের উঁচুতে ঘাঁটিতে থাকা বিদ্রোহী আরাকান আর্মির সদস্যরা এ দিকে চেয়ে আছেন। তাদের চলাফেরা ও দৈনন্দিন কার্যক্রম সীমান্তে এপারে থাকা স্থানীয়রা অবলোকন করেন। মাঝে মধ্যে হেলিকপ্টার চক্কর দেয়া আর গুলি ছোড়ার ঘটনায় এবং বিদ্রোহীদের সাথে রাখাইন প্রদেশে আবারো ব্যাপক সংঘর্ষের আশঙ্কায় সীমান্তের স্থানীয়দের মধ্যে নতুন করে আতঙ্ক ভর করছে। রাখাইন মিয়ানমারের রাজ্যের সশস্ত্র বিদ্রোহীদের সাথে দেশটির সরকারি বাহিনীর লড়াই চলছেই। কখনো গোলাগুলির বিকট শব্দ, কখনো মর্টার শেল এসে পড়েÑ এর মধ্যেই উদ্বেগ উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের। এ আতঙ্ক কাটবে কবে জানেন না তারা।

সীমান্ত এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা নুরুল আবছার বলেন, গত রমজানেও আমরা শান্তিতে ঘুমাতে পারিনি। কিছু দিন পরপর হোয়াইক্যংয়ের লম্বাবিল ও উনচিপ্রাং সীমান্তের নাফ নদীর ওপারে থেমে থেমে এবং ঘুমধুম ইউনিয়নের বাইশফাঁড়ি সীমান্তে বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা যেত। সেই সাথে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা সরকারি বাহিনী কিংবা অস্ত্রধারী রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশও তাদের আতঙ্কের কারণ। তুমব্রু পশ্চিমকুলের বাসিন্দা নুরুল ইসলাম বলেন, মিয়ানমারের গোলাগুলি, মর্টার শেলের গোলা নিক্ষেপ ও হেলিকপ্টার থেকে হামলার জেরে প্রাণ বাঁচাতে ছেড়েছিলেন বসতবাড়ি। এখন বাড়ি ফিরেও উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন। এখন পরিস্থিতি অনেকটাই শান্ত। এরপরও কবে নাগাদ এই আতঙ্কের শেষ হবে সেই দিনের অপেক্ষায় রয়েছেন বলে জানান তিনি। ঘুমধুম এলাকার মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, উদ্বেগ বা ভয়ের কারণ হলোÑ না জানি কখন আবার এপারে গুলি বা মর্টার শেল এসে পড়ে। তিনি সীমান্ত এলাকার মানুষেরা সব সময় ভয় ও সতর্ক অবস্থায় থাকেন বলে জানান।

মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি) ও বিদ্রোহী আরাকান আর্মির মধ্যে তুমুল লড়াই চলছে। এই লড়াইয়ে অংশ নেন রোহিঙ্গারাও। আরাকান আর্মির সাথে পেরে না উঠে বিজিপি যেমন পালিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে, ঠিক তেমনি পালিয়ে এসেছে অস্ত্রধারী রোহিঙ্গারাও। যাদের মধ্যে অবৈধ অস্ত্রধারী ২৩ জনকে ধরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কাছে হস্তান্তর করেছেন স্থানীয়রা। তখনকার সময়ে আটক ২৩ জন অস্ত্রধারীর কাছ থেকে ১২টি অস্ত্র, ১৩টি ম্যাগাজিন এবং ৯০০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় তারা প্রত্যেকে কারাগারে রয়েছেন। এ বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, উখিয়ার রহমতের বিল সীমান্ত দিয়ে গত ৬ ফেব্রুয়ারি ওপারে তুমুল লড়াইয়ের মধ্যে পালিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে মিয়ানমার সীমান্তররক্ষী বাহিনী বিজিপির সদস্যরা। এরপর বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে আসা ৩৩০ জনকে প্রথম দফায় এবং দ্বিতীয় দফায় ২৮৮ জনকে বিজিবি মিয়ানমারে ফেরত পাঠায়। সীমান্ত এলাকা ঘুরে ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, হোয়াইক্যং, তুমব্রু ও ঘুমধুম সীমান্ত এলাকায় শান্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এতে সীমান্ত পরিস্থিতি শান্ত থাকায় নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম, তুমব্রু ও বাইশফাঁড়ি এলাকার জনজীবন স্বাভাবিক।


আরো সংবাদ



premium cement
সিরিয়ায় বাশার আল আসাদের বাবার কবরে অগ্নিসংযোগ মামলা শেষ হলে দেশে ফিরবেন তারেক রহমান : মির্জা ফখরুল কালিয়াকৈরে ছুরিকাঘাতে যুবককে হত্যা ৫ আগস্টের পর চাঁদাবাজি-ছিনতাইয়ে র‍্যাবের ১৬ সদস্য আটক : ডিজি মিয়ানমারে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী শহর থেকে শত শত সৈন্যসহ জেনারেল আটক শনিবার থেকে শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা হবে’ পাওনা টাকা চাওয়ায় চা দোকানির হাত ঝলসে দেয়ার অভিযোগ হাসিনার বিবৃতিকে ভারত সমর্থন করে না : বিক্রম মিশ্রি ডুয়েটে কৃষি যন্ত্রপাতি প্রতিভা অন্বেষণে সেমিনার ও প্রদর্শনী মেলা শুক্রবার গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায়

সকল