বালিয়াডাঙ্গীতে ৬০ হেক্টর জমিতে রসুন চাষ
- এ কে আজাদ বালিয়াডাঙ্গী (ঠাকুরগাঁও)
- ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গীতে এ বছর ৬০ হেক্টর জমিতে রসুন চাষ করা হয়েছে। চাষিরা আশা করছেন, রসুন চাষে তারা লাভবান হবেন। উপজেলার নাস্বড়বাড়ী গ্রামের রসুন চাষি তরুণী শীল বলেন, গত জানুয়ারি মাসে একমাত্র মেয়ের বিয়ে দিয়েছি। জামাতাকে মোটরসাইকলে দেয়ার ইচ্ছায় এ বছর দুই বিঘা জমিতে রসুন চাষ করেছি। আগামী চলতি মাসে রসুন তুলে লাভের টাকায় জামাতাকে লাখ দেড়েক টাকায় একটি মোটরসাইকলে কিনে দেবো। বাকি টাকা দিয়ে দুই কুঠরির ঘরের টিনের চালা দেবো।
তিনি জানান, দুই বিঘা রসুন চাষে খরচ হয়েছে তার প্রায় ৫৫ হাজার টাকা। তিনি আশা করছেন, চার লাখ টাকার মতো রসুন উৎপন্ন হবে এবার। চাষি তরুণী শীলের মতো উপজেলার রসুনচাষিরা কেউ স্বপ্ন বুনছেন রসুন বিক্রি করে ঘর মেরামত করবেন। কেউ ধার-দেনা পরিশোধ করবেন, কেউ বা বাড়ির আসবাবপত্র কিনবেন অথবা টেলিভিশন বা কলেজ পড়–য়া ছেলের জন্য ল্যাপটপ কিনে দেবেন কেউ বা। ভেষজগুণে গুণান্বিত, মসলা জাতীয় অর্থকরী ফসল হিসেবে গত বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় রসুনের আবাদ বেড়েছে। বিগত কয়েক বছর রসুনের দাম কম থাকায় উপজেলায় রসুনের চাষ কিছুটা কমে গিয়েছিল। গত বছর থেকে রসুনের দাম বেড়ে যাওয়ায় চাষিরা আবারো রসুুন চাষে ঝুঁকছেন। এ বছর এ অঞ্চলের কৃষকেরা রসুন চাষ করে ভাগ্যবদলের স্বপ্ন দেখছেন। উপজেলা কৃষি বিভাগের হিসাব মতে, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ৬০ হেক্টর জমিতে রসুন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হলেও সেই অনুযায়ী আশাঅনুরূপ জমিতে রসুনের চাষাবাদ হয়েছে। গত বছর প্রায় ১০০ হেক্টর জমিতে রসুন চাষ হয়। প্রকৃতি অনুকূলে থাকা, সেচ ও সারের পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় এবার ভালো ফলনের মাধ্যমে কৃষকরা লাভবান হবেন বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ।
সরেজমিন উপজেলার ধনতোলা, নাগেস্বড়বাড়ী, খোঁচাবাড়ী, দোলুয়া, চাড়োল, চাড়োল পতিলাভাষা, পাড়িয়া, তিলকড়া, নিটলডোবা, বঙ্গোভিটা, কান্তিভিটা, ভান্ডারদহ, মরিচপাড়া, সুভানপাড়া, আমজানখোর, চড়ুইগত, মেরদাবস্তী, উদয়পুর, বেউরঝাড়ী, বড়পলাশবাড়ী, সরকারবস্তী, বাদামবাড়ী, বালিয়া, বেলসাড়া, বোবড়া, পারুয়া, কিশমতপলাশবাড়ী, গড়িয়ালী, দুওসুও, মহিষমারী, গান্ধীকারী, লালাপুর জঙ্গলবাড়ী গ্রামের মাঠ ঘুরে দেখা যায় রসুন চাষিরা রসুন ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তারা জানান, সাধারণত বিঘাপ্রতি ৭০ থেকে ৭৫ মণ রসুনের ফলন হয়। এবারো তদরূপ ফলন হবে বলে আশা করছেন তারা। গড়ে প্রতি মণ রসুন আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা করে হলেও বিঘায় দুই লাখ টাকার মতো আয় করা যায়।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা কৃষি অফিসার সাজ্জাদ হোসেন সোহেল বলেন চাহিদা এবং ভালো দাম থাকায় এবার রসুন চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ছাড়াও রসুন চাষিদের উৎসাহিত করতে উন্নত জাতের বারি রসুন-১ ও বারি রসুন-৩ চাষে তাদেরকে সহযোগিতা করতে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা। তাই এবার রসুনের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, অর্থকরী ফসল হিসেবে রসুন চাষের জন্য কৃষি বিভাগ থেকে চাষিদের নিয়মিত পরামর্শ দেয়া হয়। রাষ্ট্রীয় খরচে প্রদর্শনী প্লট করে চাষিদের রসুনচাষে উদ্বুদ্ধ করা হয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা