সপ্তম শ্রেণীর পাঠ্যবইয়ে শরীফার গল্প থাকছে
বিতর্কিত কোনো বিষয় পায়নি বিশেষজ্ঞ কমিটি- শাহেদ মতিউর রহমান
- ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৩১, আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:০৬
দেশজুড়ে তুমুল বিতর্ক থাকলেও নতুন কারিকুলামে সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে শরীফার গল্পটি থাকছেই। গল্পটি নিয়ে শিক্ষাঙ্গন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু থেকে নানা সমালোচনা ও বিতর্ক থাকলেও গল্পটিতে বিতর্কের কিছুই পায়নি বিশেষজ্ঞ কমিটি। ফলে নামেমাত্র এবং ভাষাগত কিছু পরিবর্তন করে শরীফার গল্পটি পাঠ্যবইয়ে থাকছে।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সূত্র জানায়, নানা বিতর্ক থাকলেও অবেশেষ সপ্তম শ্রেণীর পাঠ্যবইয়ে শরীফার গল্পটি থাকছে। তবে এটিতে ভাষাগত ন্যূনতম পরিবর্তন আসতে পারে। বিশেষজ্ঞরা ওই গল্পে ‘বিতর্কের’ কিছু পাচ্ছেন না। সপ্তম শ্রেণীর ‘ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান’ বইয়ে পাঠের অংশ হিসেবে ‘শরীফার গল্প’ রাখা হয়েছে।
উল্লেখ্য, নতুন শিক্ষাক্রমের এবং নতুন কারিকুলামের আলোকে সপ্তম শ্রেণীর ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ের ‘মানুষে মানুষে সাদৃশ্য ও ভিন্নতা’ নামক একটি অধ্যায়ে ‘শরীফ থেকে শরীফা’ নামের একটা গল্প যুক্ত করা হয়েছে। যা নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছিল। শিক্ষাবর্ষের শুরু থেকেই বিতর্কিত এই গল্পটি নিয়ে দেশজুড়েই তুমুল বিতর্কের শুরু হয়। পরে বিষয়টি পর্যালোচনার পাশাপাশি এ বিষয়ে মতামত প্রদানের জন্য গত ২৪ জানুয়ারি পাঁচ সদস্যের কমিটি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রায় তিন মাসের মাথায় এ কমিটি তাদের প্রতিবেদন ‘চূড়ান্ত করে সুপারিশে গল্পটি পাঠ্যক্রমে রাখার বিষয়ে মতামত দিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
এই পাঁচ সদস্যের পর্যালোচনা কমিটির আহ্বায়ক ইসলামী আরবী বিশ^বিদ্যালয়ের (ইআরবি) আবদুর রশীদ বলেন, ‘আমরা খুব শিগগিরই প্রতিবেদন মন্ত্রণালয়ে জমা দেব। আমরা পাঁচজন সম্মিলিতভাবে মতামত দেব। এ নিয়ে কাজ চলছে।’
এ কমিটির সদস্যসচিবের দায়িত্বে রয়েছেন এনসিটিবির সদস্য (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক মো: মশিউজ্জামান। কমিটির তিন সদস্য হলেন- ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গভর্নর কফিল উদ্দীন সরকার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইইআরের পরিচালক অধ্যাপক আবদুল হালিম এবং ঢাকা সরকারি আলীয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ আবদুর রশিদ।
কমিটির সঙ্গে সম্পৃক্ত একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, কওমি মাদরাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের পক্ষ থেকে নতুন শিক্ষাক্রম সম্পর্কে কিছু ‘প্রশ্ন’ উত্থাপন করা হয়েছিল। অথচ কওমি মাদরাসার পাঠ্যক্রমের সাথে সরকার স্বীকৃত আলিয়া মাদরাসার পাঠ্যক্রমের কোনো মিল নেই।
এ বিষয়ে এক কর্মকর্তা জানান, কওমি মাদরাসায় যেসব বিষয় বা পাঠ্যক্রম রয়েছে সেগুলোর সাথে সরকারি প্রশাসনের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। সাধারণ শিক্ষায় যে পাঠ্যক্রম পড়ানো হচ্ছে সেগুলোও কওমি মাদরাসায় পড়ানো হয় না। এ কারণে সাধারণ শিক্ষাক্রম নিয়ে কওমি আলেম ও হেফাজতে ইসলামের আপত্তিকে খুব একটা গুরুত্ব দিতে নারাজ শিক্ষা প্রশাসন। ‘শরীফ থেকে শরীফার’ গল্প নিয়ে অহেতুক বিতর্ক করা হচ্ছে বলে শিক্ষা প্রশাসনের একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তার দাবি।
এ বিষয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম বলেছেন, সরকার ‘ট্রান্সজেন্ডারকে’ স্বীকৃতি (২০১৩ সালে) দিয়েছে, কারণ তারা সমাজেরই অংশ। বইটি তিনবার ‘রিভিউ’ হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে বই রিভিউয়ের সময় ‘ইনকুশন স্পেশালিস্ট, জেন্ডার স্পেশালিস্ট’ ছিলেন। তারা সবকিছু দেখে বিশ্লেষণ করে দিয়েছেন। বইতে যা দেয়া হয়েছে, তা ‘সময়ের প্রয়োজন’ বলে জানান এনসিটিবি চেয়ারম্যান।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা