সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ সবসময় প্রস্তুত : প্রধানমন্ত্রী
- বাসস
- ২২ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০৫
যেকোনো বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশ প্রস্তুত আছে বলে উল্লেখ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আমাদের বৈদেশিক নীতির মূল চালিকাশক্তি হচ্ছে- সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরিতা নয়। প্রতিবেশী সব রাষ্ট্রের সাথে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নই আমাদের লক্ষ্য। কিন্তু যেকোনো আগ্রাসী বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য আমরা সদা প্রস্তুত ও দৃঢ় সঙ্কল্পবদ্ধ।
গতকাল রোববার সকালে চট্টগ্রামের হালিশহরে আর্টিলারি সেন্টার অ্যান্ড স্কুলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ব্যাটারি কমপ্লেক্সের উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন শেষে ভাষণে এ কথা বলেন তিনি।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ ও জনগণের কল্যাণে সেনাসদস্যরা দেশপ্রেম, পেশাদারিত্ব ও নিষ্ঠা নিয়ে কাজ করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আমরা সক্ষম হবো ইনশাআল্লাহ। আওয়ামী লীগ সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। এ জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতিটি সদস্যকে হতে হবে তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন স্মার্ট।
প্রধানমন্ত্রী সেনাবাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, নেতৃত্বের প্রতি অবিচল আস্থাশীল ও অনুগত থেকে কঠোর অনুশীলন, পেশাগত দক্ষতা, কর্তব্যনিষ্ঠা ও দেশপ্রেমের সমন্বয়ে তাদের গৌরব সমুন্নত রাখতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। তিনি সেনাবাহিনীর সার্বিক উন্নয়নে তার সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের কথা সংক্ষেপে বর্ণনা করে বলেন, আধুনিকায়নের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে সংযোজিত হয়েছে অত্যাধুনিক বিমান, হেলিকপ্টার, ইউএভি, চতুর্থ প্রজন্মের ট্যাংক, আধুনিক এপিসি, ট্যাংকবিধ্বংসী মিসাইল ও অন্যান্য যুদ্ধ সরঞ্জাম।
প্রধানমন্ত্রী দেশের কল্যাণে সেনাবাহিনীর সার্বিক কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, আজ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জাতির আস্থার প্রতীক হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত। কর্মনিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের কারণে জাতিসঙ্ঘ শান্তিরক্ষা মিশনেও আজ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রশংসিত। জাতিসঙ্ঘ মিশনে আমাদের সৈনিকদের সামর্থ্য এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে সম্প্রতি অত্যাধুনিক লাইট আর্মাড ভেহিক্যাল ও মাইন রেসিস্ট্যান্ট অ্যাম্বুস প্রটেক্টেড ভেহিক্যাল সংযোজন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ব্যাটারি কমপ্লেক্স উদ্বোধন শেষে কমপ্লেক্সে আর্টিলারি জাদুঘর পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি জাদুঘরে স্থাপিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি, মহান মুক্তিযুদ্ধে মুজিব ব্যাটারির প্রথম গোলাবর্ষণকারী ঐতিহাসিক ৩ দশমিক ৭ ইঞ্চি হাউইটজার, আর্টিলারি রেজিমেন্টে ব্যবহৃত গোলাবারুদ ও সব কামানের প্রতিরূপ এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে গোলন্দাজ বাহিনীর উল্লেখযোগ্য অপারেশনগুলোর গৌরবময় ইতিহাস দেখেন।
আজ ঢাকায় ন্যাপ এক্সপো শুরু : উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক জানায়, অভিযোজনে সফলতা বিশ্বকে জানাতে আজ সোমবার থেকে ঢাকায় শুরু হচ্ছে চার দিনের ন্যাপ এক্সপো ২০২৪। শেষ হবে আগামী বৃহস্পতিবার। রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) জাতিসঙ্ঘ জলবায়ু অভিযোজন সম্মেলন ন্যাশনাল অ্যাডাপটেশন প্ল্যান (ন্যাপ) এক্সপো ২০২৪ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন। ইউএনএফসিসিসির এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি সাইমন স্টিয়েল এই ন্যাপ এক্সপোতে উপস্থিত থাকবেন। গতকাল রোববার ন্যাপ এক্সপো ২০২৪ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী।
পরিবেশমন্ত্রী জানান, ন্যাপ এক্সপো ২০২৪ এ অংশগ্রহণের জন্য ১০৪টি দেশের ৩৮৩ জন ইউএনএফসিসিতে রেজিস্ট্রেশন করেছেন। এছাড়া, দেশের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ, জলবায়ু বিশেষজ্ঞবৃন্দ, এনজিওর প্রতিনিধিবৃন্দ, স্বেচ্ছাসেবক শিক্ষার্থীসহ ৫৫০ জন অংশগ্রহণ করবেন। এ সম্মেলনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলায় বিভিন্ন দেশের অভিযোজন কার্যক্রম সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় থেকে সবাই পারস্পরিকভাবে উপকৃত হতে পারবে। সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, ন্যাপ এক্সপো একটি আন্তর্জাতিক ফোরাম যেখানে বিভিন্ন দেশ, সংস্থা এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডাররা ন্যাপ প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে পারস্পরিক যোগাযোগ এবং অভিজ্ঞতা বিনিময় করে। এই এক্সপো উন্নয়নশীল দেশগুলোর ন্যাপ প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের প্রক্রিয়ার সাথে সম্পর্কিত গ্যাপ এবং চাহিদা চিহ্নিতকরণের জন্য প্রশিক্ষণেরও আয়োজন করবে। ন্যাপ এক্সপো ২০২৪ এ বাংলাদেশ বিভিন্ন সেশন আয়োজন করবে।
মন্ত্রী জানান, এ সম্মেলনে মোট ২৩টি স্টল থাকবে যেখানে বিভিন্ন দেশের অভিযোজনমূলক কর্মকাণ্ড প্রদর্শিত হবে। এছাড়াও, চার দিনে ৩৪টি সেশনে বিশেষজ্ঞরা ট্রান্সফরমেশনাল অ্যাডাপ্টেশন, ফিন্যান্সিয়াল মেকানিজম, অ্যাডাপ্টেশন অ্যাকটিভিটি মনিটরিং অ্যান্ড ইভালুয়েশন টুলস, জেন্ডার রেস্পন্সিভ অ্যাডাপ্টেশন প্রভৃতি বিষয়ে আলোচনা করবেন। বাংলাদেশের জন্য বরাদ্দকৃত ১৩টি স্টলে জলবায়ু অভিযোজনের বিষয়গুলো প্রদর্শন করা হবে। বিদেশী স্টলে প্রদর্শিত অভিযোজন কর্মকাণ্ড থেকেও আমরা অভিজ্ঞতা লাভ করতে পারব। এ এক্সপোতে দেশের জলবায়ু অভিযোজন প্রদর্শনের জন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দেশী-বিদেশী সংস্থা অংশগ্রহণ করবে। সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব মো: তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা