বাতাসে আগুনের হলকা
তাপমাত্রা ছাড়িয়েছে সাড়ে ৪২, ঢাকায় ৪০ ডিগ্রি অতিক্রম : মৃত্যু ৪- হামিম উল কবির
- ২১ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০৫
বাতাসে যেন আগুনের হলকা, অসহনীয় তাপদাহে বিপর্যস্ত জনজীবন। সর্বত্র খাঁখাঁ রোদ্দুর, আকাশে সামান্য মেঘ থাকলেও তা থেকে বৃষ্টি হচ্ছে না। দেশের কোনো কোনো অঞ্চলে বর্তমানে চলছে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ। খাবারের চেয়ে পানির চাহিদা বাড়ছে মানুষের মধ্যে। গরমে গায়ের চামড়ায় ফোস্কা পড়ার অবস্থা। মুখে বাতাসের ঝাপটা লাগলেই মনে হয় কেউ যেন আগুন ঢেলে দিয়েছে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে। চলতি বছরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা গতকাল রেকর্ড করা হয়েছে যশোরে ৪২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পেট ভরে পানি পান করেও তৃষ্ণা মেটানো যাচ্ছে না। গরম এত বেশি যে খাবারের চেয়ে পানি পান করতেই বেশি ভালো লাগছে।
প্রচণ্ড গরমে বৃষ্টি না হওয়ায় নদী-নালাসহ প্রাকৃতিক জলাধারগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে। ক্ষেতের ফসল পুড়ে যাচ্ছে। আমের মুকুল ঝরে যাচ্ছে। শিগগিরই বৃষ্টি না হলে এ মৌসুমে কমে যেতে পারে আমের ফলন। মাটির নিচে পানির স্তর শুকিয়ে যাওয়ায় এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে পরিমাণ কমে যাওয়ায় পানিতে জীবাণুর ঘনত্ব বেড়ে যাচ্ছে, ফলে অল্প দূষিত পানি পান করলেই অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছে। হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে ডায়রিয়ার রোগী। হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে বয়স্করাও আসছেন হাসপাতালে। এই তাপপ্রবাহে সুস্থ থাকার জন্য চিকিৎসকরা যথেষ্ট পানি পান করতে পরামর্শ দিয়েছেন। ঘরের বাইরে বের হলেই অবশ্যই পর্যাপ্ত পানি নিয়ে বের হতে বলছেন তারা। পেটে যথেষ্ট পানি থাকলে গরমের আধিক্য থাকলেও হিটস্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা কম। বাইরে বেরোলে সম্ভব হলে মুখে ঠাণ্ডা পানি ছিটাতে হবে, তা হলে মুখে ফোস্কা পড়ার সম্ভাবনা থাকবে না।
মানুষ তো বটেই অন্য প্রাণীরাও পিপাসায় কাতরাচ্ছে। চিড়িয়াখানার প্রাণীগুলো দিনের বেশির ভাগ সময় পানিতে কাটিয়ে দিচ্ছে, পানি থেকে উঠতেই চাইছে না। গবাদিপশুগুলো সারাক্ষণই হাঁপাচ্ছে পানির জন্য, এমনকি গাছে গাছে উড়ে বেড়ানো পাখিগুলো ঠোঁট বড় বড় করে পানির সন্ধান করছে।
খুলনা, ঢাকা, রাজশাহী বিভাগে সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা। অপেক্ষাকৃত ঠাণ্ডা আবহাওয়া বিরাজ করছে সিলেট, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও রংপুর বিভাগে। সিলেট বিভাগ ছাড়া উল্লিখিত চার বিভাগে কোনো বৃষ্টি না হলেও তাপমাত্রা মোটামুটি সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। অন্য দিকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ (৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি) বিরাজ করছে খুলনা বিভাগের কিছু অংশে বিশেষ করে যশোর ও চুয়াডাঙ্গায়। যশোর ও চুয়াডাঙ্গায় দীর্ঘ দিন থেকেই দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা বিরাজ করছে। ঢাকা বিভাগের অর্ধেকেরও বেশি অংশে অর্থাৎ ঢাকা, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জে বিরাজ করছে তীব্র তাপ (৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি) প্রবাহ। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র চলছে মৃদু থেকে মাঝারি (৩৬ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে) ধরনের তাপপ্রবাহ। দীর্ঘ দিন পর ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করেছে।
ঢাকা আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেসা জানিয়েছেন, আগামী ২৫ এপ্রিলের আগে দেশে বিরাজমান চলতি তাপদাহ কমে যাওয়ার সম্ভাবনা কম। ২৫ এপ্রিল থেকে তাপদাহ কিছুটা কমে আসতে পারে তবে কিন্তু সার্বিক পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা কম। দেশব্যাপী ভারী বর্ষণ না হলে চলতি গরম কমবে না।
চুয়াডাঙ্গায় এ মাসের শুরু থেকেই বেশি তাপমাত্রা বিরাজ করছিল। ১৬ এপ্রিল তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০.৬ ডিগ্রি সেলিসয়াস, ১৭ এপ্রিল ৪০.৮ ডিগ্রি সেলিসয়াস, ১৮ এপ্রিল ৪০.৪ ডিগ্রি সেলিসয়াস, ১৯ এপ্রিল ৪১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বেকর্ড করা হয়। সর্বশেষ গতকাল শনিবার চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ ৪২.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়।
তাপমাত্রার রেকর্ডের ব্যাপারে সহকারী আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেসা জানিয়েছেন, শনিবার যশোরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এই তাপমাত্রা চলতি গরম মৌসুমে সর্বোচ্চ কিন্তু অতীতে এর চেয়ে তাপমাত্রার রেকর্ড রয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে এ যাবৎকালের মধ্যে সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৯৭২ সালের ১৮ এপ্রিল রাজশাহী এবং সেটি ছিল ৪৫.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজশাহীর এ রেকর্ড এখনো অতিক্রম করতে পারেনি কোনো সময়। তবে যশোর জেলাতেই এক সময় ৪৪.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় এবং এটি ছিল ১৯৬৪ সালে।
গাজীপুরে হিটস্ট্রোকে একজনের মৃত্যু
গাজীপুর প্রতিনিধি জানান, গাজীপুরে হিটস্ট্রোকে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। শনিবার মহানগরীর কোনাবাড়ি থানাধীন জেলখানা রোডের জমিদার মাঠ থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তার নাম সোহেল রানা (৪২)। সে স্থানীয় কাশিমপুর থানাধীন এনায়েতপুর এলাকার মৃত আবদুর রাজ্জাকের ছেলে।
জিএমপির কোনাবাড়ি থানার ওসি কে এম আশরাফ উদ্দিন স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানান, কয়েক দিন ধরে ভারসাম্যহীন অবস্থায় এলাকায় ঘোরাফেরা করছিল সোহেল রানা। শনিবার স্থানীয়রা ওই মাঠে তার লাশ দেখতে পায়। খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে। তীব্র তাপদাহের কারণে হিটস্ট্রোকে তার মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গায় ২ জনের মৃত্যু
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি জানান, চলতি মৌসুমের সকল রেকর্ড ভেঙ্গে গতকাল শনিবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৮ শতাংশ। জেলার হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে দিন দিন বাড়ছে গরমজনিত রোগীর সংখ্যা। তাপদাহের কারণে জেলা প্রশাসন থেকে জেলায় হিট এলার্ট জারি করা হয়েছে। জনসাধারণকে সতর্ক করতে জেলার চার উপজেলায় হিট এলার্ট জারির মাইকিং করা হচ্ছে। গরমে স্বাস্থ্য সতর্কতার বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সচেতন করতে এমন পদক্ষেপ বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা।
এ দিকে গতকাল চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার সীমান্ত সংলগ্ন ঠাকুরপুর গ্রামের মাঠে কৃষিকাজ করতে গিয়ে জাকির হোসেন নামে এক যুবক হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এ ছাড়া দামুড়হুদা উপজেলায় এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।
চকরিয়া (কক্সবাজার) সংবাদদাতা জানান, চকরিয়ায় প্রচণ্ড তাপদাহে জনজীবনে দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। স্বল্প আয়ের মানুষের মাঝে চরম হতাশা বিরাজ করছে। ঘরে ঘরে ছড়িয়ে পড়েছে নিউমোনিয়া, জ্বর, ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগ। গ্রীষ্মের প্রচণ্ড রোদে ঘরের বাইরে কাজ করতে গিয়ে অনেকে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
গত এক সপ্তাহে তাপমাত্রা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় এলাকার হাসপাতালগুলোতে ডায়রিয়া, কাশি, জ্বর ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও প:প: কর্মকতা ডাক্তার শোভন দত্ত জানান, তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে জ্বর, কাশি, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে রোগীদের ভিড় বেড়েছে। তাদের চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে।
এ দিকে প্রচণ্ড গরমে যোগ হয়েছে বিদ্যুতের লোডশেডিং। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ না থাকায় চিকিৎসকরা রোগীদের চিকিৎসা প্রদানে ভীষণ চাপের মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
ঈশ্বরদী সংবাদদাতা জানান, ঈশ্বরদীতে গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া প্রায় প্রতিদিনই ৩৯-৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ওঠানামা করছে। সপ্তাহজুড়ে ঈশ্বরদীর ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মাঝারি থেকে তীব্র তাপদাহ। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষকরা। ঝরে যাচ্ছে মৌসুমি ফল বিশেষ করে আম, লিচু ও বাদাম।
তীব্র তাপদাহের প্রভাব পড়ছে জনস্বাস্থ্যে। বিশেষ করে জ্বর, সর্দি, কাশি, ডায়রিয়াসহ নানা রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঘুরে দেখা গেছে, হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে শিশু রোগীর সংখ্যা বেশি। তীব্র রোদ ও গুমোট আবহাওয়ায় মানুষের পাশাপাশি পশু-পাখিরাও হাঁসফাঁস করছে। অনেকে সামান্য স্বস্তির জন্য ছুটে চলছেন গাছের ছায়া তলে।
ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ হেলাল উদ্দিন জানান, আজ (শনিবার) বেলা ৩টায় এ মৌসুমে ঈশ্বরদীতে সর্বোচ্চ ৪১.৬ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, তাপপ্রবাহের তীব্রতা আরো বাড়ার আশঙ্কায় সারা দেশে জারি করা হয়েছে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট।
পাবনায় হিটস্ট্রোকে একজনের মৃত্যু
পাবনা প্রতিনিধি জানান, অসহনীয় গরমে অতিষ্ঠ জেলার জনজীবন। তীব্র তাবদাহে পাবনা শহরে হিটস্ট্রোকে একজন মারা গেছেন। গতকাল শনিবার ঈশ্বরদীতে ৪১.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, যা পাবনা জেলায় চলতি মৌসুমের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
হিটস্ট্রোক করে গতকাল দুপুরে পাবনা শহরের রূপকথা রোডে একটি চায়ের দোকানে চা খাওয়ার সময় সুকুমার দাস হিটস্ট্রোক করেন। এ সময় আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
চৌগাছায় পানির স্তর নিচে নেমে গেছে
চৌগাছা (যশোর) সংবাদদাতা জানান, আজ শনিবার যশোরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। বেলা ৩টার দিকে যশোর বীরশ্রেুষ্ঠ মতিউর রহমান বিমানঘাঁটির আবহাওয়া দফতরে এ তাপমাত্রা রেকর্ড কর হয়। এক দিকে প্রচণ্ড রোদের তাপে ভাপসা গরম অন্য দিকে চৌগাছায় ২৫ থেকে ৩০ ফুট নিচে নেমে গেছে পানির স্তর। প্রাণিকুলের মাঝে দেখা দিয়েছে হাঁসফাঁস। এ দিকে প্রচণ্ড গরমে নাকাল হয়ে পড়েছে যশোরের চৌগাছা উপজেলার সাধারণ মানুষের জীবন। শ্রমজীবী মানুষ পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে। গরমে গলে গেছে কয়েকটি পিচঢালা সড়ক। প্রখর রোদ ও ভাপসা গরম উপেক্ষা করেই শ্রমজীবীরা তাদের কাজ করছেন।
চৌগাছায় পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় স্বস্তিতে নেই শ্রমজীবী মানুষ। কেউ কেউ রাস্তার পাশে থাকা বিভিন্ন পানির কল থেকে হাতে, মুখে ও মাথায় পানি দিয়ে ঠাণ্ডা হওয়ার চেষ্টা করছেন। আর শিশু-কিশোররা গরম থেকে রেহাই পেতে নলকূপের হাউজের মধ্যে ঠাণ্ডা পানিতে গোসলে নামছে।
উপজেলার বেলেমাঠ গ্রামের ভ্যান করে সবজি বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করেন সাইদুর রহমান। তিনি বলেন, তীব্র গরমের কারণে ভ্যানে সবজি নিয়ে যেতে ব্যাপক কষ্ট হচ্ছে। এত গরম যে তাজা সবজি ভ্যানে তুলতেই শুকিয়ে যাচ্ছে।
যশোর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, এ তাপদাহ আরো কিছুদিন বিরাজ করবে। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি হওয়ায় অস্বস্তি বাড়বে।
গ্রিন ওয়ার্ল্ড এনভায়রনমেন্ট ফাউন্ডেশন যশোরের নির্বাহী পরিচালক আশিক মাহমুদ সবুজ বলেন, জেলায় ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার ব্যাপকহারে বেড়েছে। পুকুর-জলাশয় ভরাট করা হচ্ছে। ফলে দ্রুত জলাধার সংরক্ষণ আইন পাস না করলে ভবিষ্যতে এ অঞ্চলে তীব্র পানিসঙ্কট দেখা দেবে।
যশোর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশল জাহিদ পারভেজ বলেন, ওয়াটার লেভেল নেমে যাওয়ার কারণে সুপেয় পানির যাতে সঙ্কট না হয় সে জন্য উপজেলাপর্যায়ে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর সাবমারসিবলের পানি সরবরাহ নিশ্চিত রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১.৫ ডিগ্রি : রাজশাহী ব্যুরো জানায়, টানা তাপপ্রবাহে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন রাজশাহী অঞ্চলের মানুষ। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা প্রায় প্রতিদিনই বাড়ছে। গতকাল বিকেল ৩টায় রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চলতি মৌসুমের এটিই রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গত কদিন রাজশাহীজুড়ে হিট অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। প্রখর রোদ-গরমে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হতে মাইকিং করে সতর্কও করা হচ্ছে।
আবহাওয়া অফিসের তথ্যানুযায়ী, দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা সাধারণত ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ বলা হয়। তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বলা হয়। এছাড়া ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রাকে তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে ধরা হয়। আর তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর উঠলেই তা অতি তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
এদিকে তীব্র খরার কবলে পড়ে দ্রুতই নেমে যাচ্ছে রাজশাহীর বরেন্দ্র অঞ্চলের ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর। প্রায় অসহনীয় কষ্টে প্রতিটি দিন-রাত পার করছেন এ অঞ্চলের খেটেখাওয়া দিনমজুররা। মানুষের পাশাপাশি পশু-পাখিও গরমে হাঁসফাঁস করছে। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা।
এদিকে টানা তাপপ্রবাহে রাজশাহীতে বাড়ছে হিট স্ট্রোক ও ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত বিভিন্ন রোগবালাই।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা