১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

নিমিষেই শেষ হয়ে গেল হাসানের সব ইচ্ছা

-

ঈদ সামনে রেখে পরিবার-পরিজন নিয়ে গ্রামের বাড়ি যাওয়াসহ অনেক পরিকল্পনা ছিল হাসানের। সন্তানদের জন্য ঈদের কেনাকাটাও বাকি ছিল। কিন্তু সব পরিকল্পনা এক নিমিষেই শেষ হয়ে যায়। যেসময়ে ঈদের কেনাকাটার জন্য মার্কেটে যাওয়ার কথা ছিল, ঠিক সেই সময়ে হাসানের লাশ পড়েছিল হাসপাতাল মর্গে। নির্মাণাধীন বাড়ির রড পড়ে নির্মমভাবে প্রাণ হারান হাসান (৪৬)।
মোহাম্মদ হাসান থাকতেন মোহাম্মদপুরের চাঁদ হাউজিংয়ে। গতকাল শনিবার রাত পৌনে ৮টার দিকে মসজিদে যাচ্ছিলেন শবেকদরের নামাজ পড়ার জন্য। সাত মসজিদ হাউজিং এলাকায় নির্মাণাধীন একটি বাড়ি থেকে রড পড়ে নিহত হন। ঠিকাদারের অবহেলা, বাড়ির মালিকের সচেতনার অভাবে ঘটা এই দুর্ঘটনার ফলে একটি পরিবার মুহূর্তেই অসহায় হয়ে পড়েছে। হাসান দুই ছেলে এবং এক মেয়ের জনক ছিলেন। বড় ছেলে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। দ্বিতীয় ছেলে ক্লাস টেনে পড়ে। মেয়েটি ক্লাস ফোরে পড়ে। ঈদকে সামনে রেখে পরিবার-পরিজন নিয়ে হাসানের সব পরিকল্পনা এক নিমিষেই শেষ হয়ে যায়।
নিহত হাসান ছিলেন বায়োফার্মা লিমিটেড করপোরেট হেড অফিসের সাপ্লাই চেইন বিভাগের এসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার। বায়োফার্মা লিমিটেডের হেড অব এইচআর ড. গোলাম মাওলা শিমুল জানান, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে হাসানের লাশের ময়না তদন্ত শেষে রাতে লাশ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে চট্টগ্রামের আনোয়ারায়। সেখানে পারিবারিক কবরস্থানে হাসানের লাশ দাফন করা হবে।
ড. শিমুল জানান, নিহত হাসানের মা, স্ত্রী, দুই ছেলে, এক মেয়ে রয়েছে। তিনি বলেন, নিহত হাসানের বাবা বা অন্য কোনো ভাই নেই। তার স্ত্রী গৃহিণী। ফলে পরিবারে তিনিই ছিলেন একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তাকে হারিয়ে পরিবারটি একেবারে অসহায় হয়ে পড়েছে।
এদিকে, ঘটনার ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে পরিবারটি। অপরদিকে, মামলা না করার প্রস্তাব দিয়েছে ওই ভবন নির্মাতা। পুলিশ বলেছে, ইতিমধ্যে তারা বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত হয়েছেন। মামলা দায়েরের পর তারা ব্যবস্থা নিবেন।
জামায়াতের শোক : জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের মোহাম্মদপুর পশ্চিম থানার রুকন ও সাত মসজিদ ওয়ার্ডের সভাপতি এস এম হাসান এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। গত ৬ এপ্রিল রাত ৮টায় রাজধানীর মোহাম্মদপুরে তারাবীহর নামাজে যাওয়ার পথে নির্মাণাধীন ইমারতের পাইলিংয়ের কাজে ব্যবহৃত রডের খাঁচা ছিঁড়ে পথচারী এসএম হাসানের মাথায় পড়ে। গুরুতর জখম অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৪৫ বছর। মৃত্যুকালে তিনি মা, স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। মরহুমের গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারায়।
মরহুমের নামাজে জানাজা গতকাল বাদ আসর চাঁদ উদ্যান বায়তুর রহমান জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় ইমামতি করেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও মোহাম্মদপুর অঞ্চল পরিচালক জিয়াউল হাসান। উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি নাজিমুদ্দিন মোল্লা, ঢাকা মহানগরী উত্তরের মজলিসে শূরা সদস্য শফিউর রহমান, সৈয়দ মনজুর, আব্দুল আওয়াল আজম, মশিউর রহমান, মনিরুজ্জামান শামিম, সিরাজুল ইসলাম, থানা নায়েবে আমির মাহাদী হাসান, থানা সেক্রেটারি মাসুদুজ্জামান প্রমুখ।
শোকবাণী : এস এম হাসানের মর্মান্তিক মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম।


আরো সংবাদ



premium cement