অতিরিক্ত তাপ অর্থনীতিকেও ক্ষতিগ্রস্ত করবে
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০৫ এপ্রিল ২০২৪, ০১:১৪
অতিরিক্ত তাপমাত্রা বা তাপ প্রবাহ শুধু জীবনকে অস্বস্তিতে ফেলবে না, অর্থনীতিকেও ক্ষতিগ্রস্ত করছে। সামনে দিনগুলোতে শুধু বাংলাদেশে পুরো উপমহাদেশে কয়েক দিন অস্বাভাবিক গরম পড়তে পারে। জুন পর্যন্ত আগামী তিন মাসে ১০ থেকে ২০ দিন দেশের বিভিন্ন স্থানে তাপ প্রবাহ বিরাজ করতে পারে। কোনো কোনো সময় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করে যেতে পারে। জুনের ৩০ তারিখ পর্যন্ত ভারতীয় উপমহাদেশে স্বাভাবিক তাপ প্রবাহ থাকে ৮ দিনের কাছাকাছি। কিন্তু চলতি বছর স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে বেশি তাপমাত্রা থাকতে পারে বলে পাশ্ববর্তী দেশের আবহাওয়া দফতরও পূর্বাভাস দিয়েছে।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, দীর্ঘ তাপপ্রবাহ শুধু যে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে অস্বস্তিতে ফেলছে তা নয় তা ফসল উৎপাদনকেও ব্যাহত করবে। ধান উৎপাদনে এর প্রভাব পড়তে পারে। অপরদিকে ঘাটতি পড়তে পারে সরবরাহে এবং বিদ্যুৎ ব্যবহার বেশি হওয়ার কারণে মানুষকে তীব্র লোডশেডিংয়ের সম্মুখীন হতে পারে মানুষ।
বৈশাখ মানুষ আসতে না আসতেই বাংলাদেশে শুরু হয়ে গেছে তাপপ্রবাহ। কয়েক দিন যাবত দেশে হাল থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। কখনো দেশের অধিকাংশ এলাকায় আবার কখনো নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় দেখা দিচ্ছে অস্বস্তিকর তাপ প্রবাহের।
হঠাৎ তাপপ্রবাহে এমনিতেই সারা দেশের মানুষের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে চরম অস্বস্তি, একই সাথে বাতাসে বিরাজ করছে বেশি পরিমাণে জলীয় বাষ্প। জলীয় বাষ্পের কারণে মানুষের মধ্যে বেশি পরিমাণে ঘাম দেখা দিচ্ছে। যারা বাইরে খোলা আকাশে উত্তপ্ত তাপে কাজ করেন তাদের মধ্যে অস্বস্তিটা বেশি। বিশেষ করে রিকশাওয়ালা, ইটভাঙ্গার শ্রমিক, ক্ষেত-খামারে কর্মরত কৃষক ও শহরাঞ্চলের পথচারী এই অস্বাভাবিক তাপমাত্রার ক্ষতিকর প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। হিটওয়েভে বয়স্ক মানুষ মাথা ঘুরিয়ে রাজপথে পড়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। সামনের দিনগুলোতে এ অবস্থা আরো বাড়বে বলে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা: শহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন। তিনি জানান, বছরের এই সময়টাতে সবসময় তাপমাত্রা বেশি থাকে নিয়মিত বৃষ্টি হয় না বলে। সূর্য অনেকটা ঠিক মাথার উপর থেকে কিরণ দেয় বলে কড়া তাপ পেয়ে থাকে ভূপৃষ্ঠ। আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল বলেন, এ সময়ে অনিয়মিত বৃষ্টি হওয়ায় মাটি যে পানি ধরে রাখে তা অতিরিক্ত তাপমাত্রা শুষে নেয় এবং বাতাস অতিরিক্ত জলীয় বাষ্প করে। এই জলীয় বাষ্পও সূর্যের তাপ ধরে রেখে পরিবেশকে গরম করে দেয়। তিনি বলেন, বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকলে মানুষের শরীর থেকে যে ঘাম বের হয় তা শুকাতে পারে না, শরীরে অনেক থেকে যায়। এ কারণে এ সময়ে বেশি ঘাম চরম অস্বস্তির সৃষ্টি করে।
গতকাল দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উত্তপ্ত ছিল রাজশাহী বিভাগ এবং রাজশাহী শহরেই গতকাল বৃহস্পতিবার রেকর্ড করা হয় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত রাজশাহী বিভাগের সবগুলো জেলাসহ টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, রাঙ্গামাটি জেলাসমুহে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপ প্রবাহ বয়ে যেতে পারে অর্থাৎ উল্লেখিত অঞ্চলগুলো ৩৬ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা উঠে যেতে পারে।
আজ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, খুলনা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্র বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টি পড়তে পারে। গতকাল ঢাকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল দিনাজপুরে ১৮.৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা