ভারতীয় শাড়ি কাপড় থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে ক্রেতারা
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ৩১ মার্চ ২০২৪, ০২:২০
দেশের বেশির ভাগ মার্কেট ও বিপণিবিতান ভারতীয় কাপড়ে সয়লাব হয়ে গেছে। কিন্তু সেই হারে ক্রেতাদের তেমন আগ্রহ নেই। অনেকটা ভারতীয় শাড়ি কাপড় থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়ার মতো অবস্থা।
ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বাজারে প্রচুর পরিমাণ ভারতীয় শাড়ি রয়েছে। বিশেষ করে আগের বছরগুলোর মতো এবারো বিক্রেতাদের ধারণা ছিল এই শাড়ি কাপড়ের উপর মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়বে। কিন্তু এবারের বাস্তবতা ভিন্ন।
একাধিক বিক্রেতা জানান, বর্তমানে নগরীর ছোট-বড় শপিংমলগুলোতে ভারতের মুম্বাই ও কলকাতার থ্রিপিসসহ মেয়েদের পোশাকের অনেক মজুদ রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে আইস্তা, রাখী, বর্ষা, কাভি, কোরা, কিলল, জিবা, রিলেসা, সামার, মিলান, আনজারা ব্র্যান্ডের কটন ও জর্জেট কাপড়ের থ্রিপিস। আগে এগুলো অনেক চলতো। কিন্তু এবার যেনো ক্রেতারা এসব কিনতে চাইছে না।
অন্য দিকে পাকিস্তানি কাপড়ের মধ্যে মজুদ রয়েছে, গুলজি, মর্জা, আগানূর, তায়াক্কাল, রাঙরাসিয়া, রুহাই সাকুন, মাহাজাল, বিনসাইদ, বিনহামিদ, মার্শাল, আলিয়াসহ আরো বেশ কিছু ব্র্যান্ডের।
আর দেশীয় ব্রান্ডের মধ্যে যেগুলো ক্রেতা টানতে সক্ষম হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে, আড়ং, রঙ, অঞ্জনস, কে-ক্রাফট, টুয়েলভ, রিলিভ, সাদাকালো, ইনফিনিটি, সেইলর, আর্ট, ক্যাটসআই।
কয়েকজন ক্রেতার ভাষ্য, দেশীয় কাপড় সমৃদ্ধ হলেও ভারতীয় বা পাকিস্তানি কাপড়ের প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহ দেশের বুটিক শিল্পকে হুমকির মুখে ফেলছে। সেই অবস্থা থেকে কিছুটা হলেও এবার ক্রেতারা বেরিয়ে আসছে।
বাংলাদেশের ফ্যাশন হাউজগুলোর সংগঠন ফ্যাশন উদ্যোগের এক জরিপের তথ্য অনুসারে ঈদকে কেন্দ্র করে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা হয়। সেখানে দেশের বুটিক হাউজগুলোর ব্যবসা মাত্র চার হাজার কোটি টাকার মতো। আর বাকিটা বিদেশের কাপড় আর পোশাকের দখলে ছিল। এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারে। দেশী কাপড়ই মানুষের চাহিদার তালিকায় প্রথমে রয়েছে বলে এখন পর্যন্ত বিক্রেতাদের মত।
বিগত কয়েক বছর দেশীয় কাপড়ের মান বৃদ্ধিতে তাঁতের কাপড়ের প্রতি মানুষের আস্থা ফিরতে শুরু করেছে। ফলে সময়ের সাথে দেশীয় বাজারে বিদেশী কাপড়ের দাপট ও কদর কমছে।
রাজধানীর কর্ণফুলী গার্ডেন সিটির একজন ব্যবসায়ী জানান, তার প্রতিষ্ঠান ‘সুবর্ণ’ শুরুর পর এ পর্যন্ত তিনি অনেক কিছুই অভিজ্ঞতা নিয়েছেন। তাতে এটা পরিষ্কার যে, বিদেশী কাপড়ের সাথে পাল্লা দিতে দেশীয় তাঁতের কাপড় এখন বিশাল অবদান রাখছে। তিনি বলেন, কয়েক বছর আগেও কাস্টমার দোকানে এসেই ভারতীয় কিংবা পাকিস্তানি থ্রি-পিস চাইতেন। দেশীয় কাপড় নিয়ে তাদের কেনো আগ্রহই ছিল না। ফলে ব্যবসায়ীরাও দেশীয় কাপড়ের চেয়ে বিদেশী কাপড়ের প্রতি বেশি উৎসাহী ছিলেন; কিন্তু বিগত কয়েক বছরে পরিস্থিতি অনেকটা পাল্টে গেছে। আমাদের দেশীয় কাপড়ের মান বৃদ্ধিতে এখন ক্রেতারা এসেই আগে দেশী কাপড় দেখেন। কোনো কারণে পছন্দ না হলে বাইরের কাপড় দেখতে চান। এতে করে ব্যবসায়ীরাও তাঁতের কাপড়ের প্রতি আস্থা পাচ্ছেন।
একই মার্কেটের ‘অপসরী’ একজন বিক্রেতা জানান, একসময় কাস্টমার দোকানে এসেই ইন্ডিয়ান শাড়ি চাইতেন। আর এখন পরিস্থিতি পাল্টেছে। বিদেশী শাড়ির চাহিদা দিন দিন কমছে। এখন দেশীয় শাড়ির বিক্রি বেড়েছে। বলা যায় প্রায় অর্ধেকে নেমেছে বিদেশী শাড়ির বিক্রি। তিনি বলেন, আমাদের দেশে এখন বাহারি ডিজাইনের কাপড় তৈরি হচ্ছে। দেশের সীমানা পেরিয়ে জামদানির সুনাম বিশ্বব্যাপী। গুণগতমান ও নজরকাড়া সৌন্দর্যে দিন দিন সব বয়সী নারীর কাছে জামদানি শাড়ি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এসব কারণে অন্য দেশের কাপড়ের বাজার কমছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা